রাশেদ মেহেদী
এ মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিস্ময় উইকিলিকস। মহাক্ষমতাধর যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন থেকে শুরু করে বিশ্বের ছোট-বড় সব রাষ্ট্রের 'ব্ল্যাকবক্স' ভেঙে তছনছ করে দিচ্ছে উইকিলিকসের ক্ষিপ্রতা। যে অন্ধকারে আগে কখনও কেউ চোখ রাখতে পারেনি, সেখানে চোখ রাখছে উইকিলিকস। অবস্থা এমন যে, সকালে ঘুম থেকে উঠে রাষ্ট্রযন্ত্রের মহানায়করা তটস্থ মনে চোখ রাখেন উইকিলিকসের পাতায়, সাধারণ মানুষ গভীর আগ্রহে জেনে নেন অজানাকে। উইকিলিকসের এ ঝড় বয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের ওপর দিয়েও।
বাংলাদেশের রাজনীতি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও আলোচিত ওয়ান-ইলেভেনের খুঁটিনাটি অনেক বিষয় বেরিয়ে আসছে প্রতিদিন। দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী বিএনপি, উভয়ের নেতারাই মনে করেন, এটি দেশ, রাজনীতি ও রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে নতুন ষড়যন্ত্র। উদ্দেশ্যমূলক কোনো কারণে একটি বিশেষ মহল এসব করছে বলে তারা বিশ্বাস করেন। দেশের সুশীল সমাজ অবশ্য মনে করেন, উইকিলিকসে ফাঁস হওয়া মার্কিন গোপন তারবার্তার মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতিকদের দৈন্য প্রকাশ পেয়েছে।
তারা বলেন, রাজনীতিবিদরা দেশের মানুষের কাছে না গিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে ধরনা দেন।
তাদের কাছে তদবিরে ব্যস্ত থাকেন ছোট-বড় সব দলের নেতারা। কেউ কেউ অবশ্য বলছেন, এভাবে গোপন দলিল প্রকাশ অনৈতিক ও অপরাধ। এদিকে উইকিলিকসের দাবি অনুযায়ী তাদের হাতে আছে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রায় ৩০ লাখ গোপন নথি। যার মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ লাখ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। এর মধ্যে ইরাক যুদ্ধের গোপন নথিই রয়েছে প্রায় সাড়ে চার লাখ।
বাংলাদেশ সম্পর্কে ২ হাজার ১৮২টি গোপন নথি আছে উইকিলিকসের হাতে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০০টি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হওয়া এসব প্রতিবেদন এখন সংবাদপত্রে পাঠকদের মূল খোরাক। সবকিছু ছাপিয়ে এখন উইকিলিকসের ফাঁস করা প্রতিবেদনের ওপরই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন পাঠক।
২০১০ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে উইকিলিকস ঝড়ের সূচনা হয়েছিল ইরাক আর আফগান যুদ্ধ নিয়ে মার্কিন গোপন নথি প্রকাশের মধ্য দিয়ে।
ইরাক যুদ্ধ নিয়ে সাড়ে ৪ লাখ গোপন নথি আর আফগান যুদ্ধ নিয়ে ৯২ হাজার নথির সঙ্গে দুর্লভ ভিডিওচিত্র। গোটা দুনিয়া অবাক বিস্ময়ে দেখল জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের উইকিলিকস যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের গোপন নথির গোপনীয়তার গর্ব ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। মার্কিন প্রশাসন এ ধাক্কা সামলাতে যখন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে কাবু করার উপায় খুঁজছিল ঠিক তখন চীন, রাশিয়াসহ একাধিক ক্ষমতাধর দেশের গোপন নথি ফাঁস করে নতুন আলোচনার ঝড় তুলল উইকিলিকস। এরপর একের পর এক নতুন চমক, নতুন আঘাত। উইকিলিকসের দুনিয়া কাঁপানো সেই ঝড় আফ্রিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, ভারত ঘুরে এখন জোর দাপটে বাংলাদেশের সীমানাতেও বয়ে যাচ্ছে।
বিশিষ্টজনদের মুখে এমনও শোনা যাচ্ছে, সিডর কিংবা আইলার মতো শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ে; কিন্তু রাষ্ট্রযন্ত্রের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির তালিকায় থাকা কিছু ভাগ্যবান, সিডর কিংবা আইলা যাদের নিরাপদ সুরম্য প্রাসাদ কখনোই স্পর্শ করতে পারেনি, তারা এখন বিধ্বস্ত উইকিলিকস ঝড়ে। এ ঝড় সাধারণ মানুষের জন্য কোনো বিড়ম্বনা বয়ে আনেনি, বরং চোখ খুলে দিচ্ছে প্রতিদিন। ওয়ান-ইলেভেনের সময় কোন নেত্রীর মনে কী ছিল, যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন কোন চোখে কাকে দেখেছে, তারেক রহমানকে নিয়ে বিএনপির পরিকল্পনা কী ছিল, বর্তমান সরকারের কোন মন্ত্রী পর্দার আড়ালে অদক্ষতা এবং সততার অভাবের সার্টিফিকেট পাচ্ছেন, জামায়াতের গোপন মিশনের লক্ষ্য কী_ কোনো কিছুই এখন আর অজানা নয় দেশের সাধারণ মানুষের। অনেকে বলছেন, আর কিছু না হোক দেশের রাজনীতিকদের বিষয়ে উইকিলিকস অন্তত বিচার-বিশ্লেষণের সুযোগ করে দিয়েছে।
অনেকে মন্তব্য করেছেন, উইকিলিকসে প্রকাশিত নথির তীর যখন সরকারি দলের দিকে থাকে তখন বিরোধী দল উইকিলিকসের ভক্ত হয়ে যায়, আর তীর যখন বিরোধী দলের দিকে তখন সরকারি দল মুচকি হাসে।
এক কথায় তারা বলছেন, ক্ষমতার ছায়ায় থাকা এসব ব্যক্তির সবাই উইকিলিকসের ভক্ত, আবার বিরোধী_ দুটিই।
যুক্তরাষ্ট্রের নথি প্রকাশ করার মুহূর্ত থেকেই বৈরী পরিবেশের মুখে পড়ে উইকিলিকস। যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ, এমনকি আন্তর্জাতিক মাস্টার কার্ড ব্যবহারে বিনা নোটিশে নিষেধাজ্ঞা, প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা, উইকিলিকসের ডোমেইনে এক ডজন হ্যাকারের ধারাবাহিক হামলা। অবশ্য কোনোকিছুই দমিয়ে রাখতে পারেনি উইকিলিকসকে। বরং আরও বেশি উদ্যম, আরও বেশি বেপরোয়া উইকিলিকস।
জামিনে বের হয়ে যুক্তরাজ্যে গোয়েন্দাদের ২৪ ঘণ্টা নজরদারির মধ্যে কাটাচ্ছেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ, আর উইকিলিকসের পাতায় সেই গোয়েন্দাদের পাঠানো গোপন তারবার্তা দিব্যি ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। ব্রিটিশ-মার্কিন সম্মিলিত গোয়েন্দা শক্তি যেন হার মেনেছে উইকিলিকসের সাইবার বোমার কাছে। সবার মাঝে এখন একটিই প্রশ্ন, উইকিলিকসের এই যাত্রার শেষ কোথায়? আরও কী চমক দেখাবে উইকিলিকস?
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম উইকিলিকসের দখলে
উইকিলিকসের পাতায় বাংলাদেশের স্থান হয়েছিল ২০১০ সালের ডিসেম্বরে। ২২ ডিসেম্বর প্রকাশিত গোপন নথির বিষয়বস্তু ছিল বাংলাদেশের মাদ্রাসা শিক্ষায় পরিবর্তন আনতে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনার কথা। এর কিছুদিন পরই হরকাতুল জিহাদ বা হুজিকে একটি গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশের রাজনীতিতে আনতে চেয়েছিল বলে তথ্য প্রকাশ করে হৈচৈ ফেলে দেয় উইকিলিকস।
ওয়ান-ইলেভেনের সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টির পাঠানো তারবার্তা নিয়ে প্রথমদিকে উইকিলিকসের পাঠানো তথ্যগুলো ছিল ইসলামী দল এবং তাদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা ঘিরেই। ক্ষমতার বৃত্তের কাছাকাছি থাকা দলগুলোর মধ্যে বিএনপির চারদলীয় জোটের প্রধান মিত্র জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্র বানাতে চায় এবং এ উদ্দেশ্যে নেওয়া তাদের গোপন মিশন নিয়ে তথ্য প্রকাশ করে উইকিলিকস। তখনও ক্ষমতার পালাবদলের প্রধান দুই রাজনৈতিক শক্তির গায়ে উইকিলিকসের আঁচড় লাগেনি।
গত আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সারাদেশে বেহাল সড়ক ব্যবস্থা নিয়ে দলের ভেতরে-বাইরে কঠোর সমালোচনার মুখোমুখি হন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। ঠিক সে মুহূর্তে উইকিলিকসের তীরও বিদ্ধ করল তাকে।
উইকিলিকসের প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেল, ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস আরও কয়েক মাস আগেই যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তার সততা বিশ্বাসযোগ্য নয়_ এমন মত দিয়ে তারবার্তা পাঠিয়েছে ওয়াশিংটনে। পরদিনই সাংবাদিকদের যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, তিনি প্রমাণিত সৎ ব্যক্তি, উইকিলিকসের তথ্য গ্রহণযোগ্য নয়। উইকিলিকস নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনিও বললেন, এসব তথ্যের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তখন থেকেই বাংলাদেশের সব সংবাদপত্রের প্রথম পাতার গুরুত্বপূর্ণ শিরোনামে চলে এলো উইকিলিকস।
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল, সংবাদ সংস্থায় বিশেষ জায়গা করে নিল উইকিলিকসের ফাঁস করা প্রতিবেদন।
এরপর একের পর এক বাংলাদেশ বিষয়ক তথ্য ফাঁস হতে থাকলে সংবাদপত্রের প্রথম ও শেষ পাতায় উইকিলিকস কর্নার চালু হলো। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো পৃথক শিরোনাম দিয়ে উইকিলিকসের খবর প্রচার শুরু করল। এখানেও শেষ হলো না। এখন কোনো কোনো সংবাদপত্রে উইকিলিকস নিয়ে পৃথক পাতা আর টেলিভিশনে চার-পাঁচটি প্যাকেজ নিয়ে 'উইকিলিকস বিশেষ' প্রচারিত হচ্ছে।
এর কারণ হিসেবে সংবাদমাধ্যমগুলোর দায়িত্বশীলদের বক্তব্য হচ্ছে, পাঠক কিংবা দর্শক চায় বলেই এত গুরুত্ব দিয়ে উইকিলিকসে বাংলাদেশ বিষয়ে প্রকাশিত তথ্যকে এত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সংবাদপত্রগুলোর অনলাইন সংখ্যায় উইকিলিকসের তথ্য নিয়ে তৈরি করা প্রতিবেদনে সবচেয়ে বেশি মতামত আসছে, রেটিং আসছে। সবকিছু মিলিয়ে এ মুহূর্তে বাংলাদেশের পাঠকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে উইকিলিকস।
উইকিলিকসের পাতায় ওয়ান-ইলেভেনের অজানা অধ্যায়
ওয়ান-ইলেভেনের আগে-পরে রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক দলের ভূমিকা নিয়ে অনেক অজানা তথ্য প্রতিদিন প্রকাশ করছে উইকিলিকস। প্রতিটি তথ্যের উৎস যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের গোপন তারবার্তা।
এ তথ্যগুলোই বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের প্রধান আকর্ষণ। মাঠের ভাষণে রাজনীতিবিদরা কী বলেন আর পর্দার আড়ালে কী করেন, উইকিলিকসের তথ্য থেকে সে সম্পর্কে আলোচনার সুযোগ হয়েছে। 'ওয়ান-ইলেভেনের পর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বিগ্ন, বিএনপি চেয়ারপারসন বর্তমান বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া শান্ত ছিলেন', 'তৎকালীন সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদকে রাজনীতিতে চায়নি যুক্তরাষ্ট্র', 'খালেদা জিয়া নিজে রাষ্ট্রপতি আর তার ছেলে বিএনপির বর্তমান সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করতে চেয়েছিলেন', 'খালেদা জিয়ার বড় ব্যর্থতা তারেকের দুর্নীতি প্রশ্রয় দেওয়া', 'যেভাবে ভেস্তে গেল মাইনাস টু ফর্মুলা', 'গ্রামীণ ব্যাংকের তৎকালীন এমডি ড. মুহাম্মদ ইউনূস চেয়েছিলেন দুই নেত্রী সরে যান', 'জাতীয় সরকার গঠনের চেষ্টা করেছিল ফখরুদ্দীন সরকার', 'বিডিআর বিদ্রোহের সময় পরিস্থিতি সামলাতে ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী (বর্তমানে অর্থমন্ত্রী) প্রণব মুখার্জির পরামর্শ চেয়েছিল বাংলাদেশ সরকার' প্রভৃতি সংবাদ শিরোনাম বাংলাদেশে এখন তুমুল আলোচিত। যোগাযোগমন্ত্রীর সততা এবং দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার ব্যাপারে উইকিলিকসে তথ্য প্রকাশের পর বিএনপি নেতারা বেশ খুশি হয়েছিলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, দেশের মন্ত্রীদের সততা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠলে তা খুবই দুঃখজনক।
তারেক রহমান আর খালেদা জিয়াকে ঘিরে একের পর এক তথ্য ফাঁস হলে সেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরই বললেন, উইকিলিকসের তথ্যের বাস্তব ভিত্তি নেই। রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং বিশিষ্টজনরা মনে করছেন, রাজনৈতিক দলগুলো যার যার স্বার্থে উইকিলিকসের তথ্য ব্যবহার করতে চেয়েছে। এখন উইকিলিকসের আঘাত বড় দু'দলের জন্যই বিব্রতকর হয়ে উঠছে। তাদের মতে, উইকিলিকস চোখ খুলে দিচ্ছে।
ক্ষমতাধর দেশের নতুন মাথাব্যথা উইকিলিকস
যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়ার মতো ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোর মহাক্ষমতাধর ব্যক্তিদের নতুন মাথাব্যথা এখন উইকিলিকস।
যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে এভাবে গোপন দলিল প্রকাশকে অনৈতিক ও অপরাধ বলে মন্তব্য করেছে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব রবার্ট গিবস তার এক বিবৃতিতে বলেন, এভাবে গোপন নথি প্রকাশ বড় অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্র সেভাবেই বিষয়টিকে দেখছে। আইনগত ব্যবস্থা কী নেওয়া যায় তাও ভাবা হচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, উইকিলিকসের এসব তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না, কোনো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অবশ্য প্রভাব পড়বে বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্রকাশিত গোপন নথির সত্যতা সম্পর্কে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
এদিকে সুইডেনের এক নারীকে ধর্ষণের দায়ে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর অনেকের মত ছিল, এটি যুক্তরাষ্ট্রের পাতানো মামলা। পরে সে মামলায় অ্যাসাঞ্জ গ্রেফতারও হলেন। শেষ পর্যন্ত জামিনও পেলেন।
এরপর যুক্তরাষ্ট্রে জব্দ হলো উইকিলিকসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। আন্তর্জাতিক মাস্টার কার্ড পরিচালনায় যুক্ত সংস্থাগুলোও উইকিলিকসকে দেওয়া কার্ড ফেরত চাইল। এর বিরুদ্ধে মামলাও ঠুকে দিল উইকিলিকস। এর পরের অধ্যায়ে হ্যাকারদের হামলা শুরু হলো উইকিলিকসের প্রতি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এক ডজন হামলা হলো।
হ্যাকারদের তীব্র উৎপাতের পর উইকিলিকস কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত বিকল্প ডোমেইনের মাধ্যমে নতুন করে তাদের ওয়েবসাইট চালু করল গত ফেব্রুয়ারিতে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।