© এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের। তাই লেখকের অনুমতি ব্যতীত অন্য কোন প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে ব্যবহার না করার অনুরোধ রইল...
নাম: উইকিলিকস, যা আন্তর্জাতিক অলাভজনক গণমাধ্যম সংস্থা
ওয়েবসাইট: http://www.wikileaks.ch
পুরাতন ওয়েবসাইট: http://www.wikileaks.org (বর্তমানে বন্ধ)
উইকিলিকস্ কে সাহায্য করতে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন: View this link
তারপর ২য় স্টেপে নীল বোতামে ক্লিক করে আরাম করে অপেক্ষা করেন। যতক্ষণ অপেক্ষা করবেন ততক্ষণ ই উইকিলিকস কে সাহায্য করা হবে। ভয় নেই এতে আপনার কম্পিউটারের কোন ক্ষতি হবে না। (ব্লগার ও.জামান এর সৌজন্যে)
স্লোগান: উই ওপেন গভর্নমেন্টস
যাত্রা শুরু: ডিসেম্বর ২০০৬
প্রকাশিত নথিপত্র: কয়েক বছরের মধ্যেই ওয়েবসাইটটি নিজেদের ডেটাবেস থেকে প্রায় ১২ লাখ নথিপত্র প্রকাশ করেছে।
প্রতিষ্ঠাতা: জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ।
মূল মালিক: দ্য সুনসাইন প্রেস।
পুরস্কার: ইকোনমিস্ট ম্যাগাজিনের মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ইত্যাদি।
প্রথম আলা
ছবি: উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ
উইকিলিকস নামের একটি ওয়েবসাইট সম্প্রতি মার্কিন সামরিক বাহিনীর ৯০ হাজার গোপন নথি প্রকাশ করে দিয়েছে। আফগান নাগরিক হত্যার বিস্তারিত বিবরণসহ অনেক অপ্রকাশিত তথ্য রয়েছে এই নথিপত্রে।
‘আফগান ওয়ার ডায়েরি’ নামে প্রকাশিত এসব নথি নিউইয়র্ক টাইমস, গার্ডিয়ান ও জার্মান সংবাদপত্র ডার স্পিগেলের কাছে হস্তান্তর করেছে উইকিলিকস। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে গোপন সামরিক তথ্য ফাঁসের এটাই সবচেয়ে বড় ঘটনা।
ইরাক যুদ্ধ-সংক্রান্ত গোপন নথি প্রকাশের জন্য উইকিলিকস যে সময় বেছে নিয়েছে, তার কড়া সমালোচনা করেছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নূরি আল মালিকি। ইরাকের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানান হয়েছে, ইরাকে নির্বাচনোত্তর সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যেই উইকিলিকস এ কাজ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে আরও জানানো হয়, এটা ইরাক ন্যাশনাল পার্টি ও দলের নেতা বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী মালিকির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উসকে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে উইকিলিকস জানিয়েছে, ইরাক যুদ্ধ নিয়ে সত্য প্রকাশের উদ্দেশ্যেই এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
গোপন দলিল প্রকাশের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট গেটস বলেন, ‘আমি আফগান যুদ্ধ নিয়ে উইকিলিকসের ওয়েবসাইটে মার্কিন সামরিক বাহিনীর ‘গোপন তথ্য’ ফাঁস করাকে অনৈতিক বলে অভিহিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট গেটস। উইকিলিকস এ বিষয়ে আরও তথ্য ফাঁস করতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। তথ্য ফাঁসের বিষয়ে এবিসি টেলিভিশনের নিউজ শোতে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন গেটস। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী গেটস বলেন, এভাবে তথ্য প্রকাশের ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের মধ্যে পারস্পারিক বিশ্বাস কমে যেতে পারে।
এ ছাড়া এসব নথিতে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা আফগান নাগরিকদের জীবন হুমকির সম্মুখীন হতে পারে।
এনবিসি টেলিভিশনে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ারম্যান অব দ্য জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ অ্যাডমিরাল মাইক মুলেন তথ্য ফাঁসের ঘটনাকে ‘নজিরবিহীন’ ঘটনা বলে অভিহিত করেন।
ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো শাভেজ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন। কূটনীতিকদের জন্য বিব্রতকর তথ্য উইকিলিকস ফাঁস করে দেওয়ার পর তিনি এ আহ্বান জানান।
অপরদিকে সাতে-পাঁচে না থেকেও উইকিলিকস কেলেঙ্কারিতে উঠে এসেছে পপতারকা লেডি গাগার নাম।
ধারণা করা হচ্ছে, গোপন এসব নথি ফাঁসের নাটের গুরু হচ্ছে ব্র্যাডলি মানিং নামের মার্কিন এক সেনাসদস্য। ওই সেনাসদস্য স্বীকার করেছেন, পপতারকা লেডি গাগার একটি সিডির মাধ্যমে তথ্যগুলো উইকিলিকসের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। ব্র্যাডলি মানিংয়ের ভাষ্যমতে, ‘গানগুলো মুছে সেখানে গোপন বার্তাগুলো তুলে নিই। এ সময় লেডি গাগার একটি গানের কলি আওড়াচ্ছিলাম। কারও সন্দেহের প্রশ্নই ওঠে না।
’
এসব তথ্যাদি প্রকাশের পর সারা বিশ্বে তুমুর আলোড়ন সৃষ্টি হয়। মার্কিন সেনাবাহিনীর গোপন দলিল প্রকাশ করে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী ওয়েবসাইট উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ার অ্যাসেঞ্জের বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিশ’ জারি করে ইন্টারপোল। সুইডেনে যৌন অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে এই অস্ট্রেলিয়ানকে গ্রেপ্তারের জন্য রেড এ্যালার্ট জারি করায় হয়। সুইডেন সরকারের যৌন অপরাধের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পরবর্তীতে ০৭-১২-২০১০ তারিখে বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে তিনটায় আলোচিত ওয়েবসাইট উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে লন্ডন পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারের পর ব্রিটেনের পুলিশ সংস্থা স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড তাঁকে লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার ম্যাজিস্ট্রেটস আদালতে হাজির করে।
ভূগর্ভস্থ এই সংরক্ষণাগারে উইকিলিকসসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নথি সংরক্ষণ করা হয়
উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ এ মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তিদের একজন। রহস্যের আবহে ঢাকা তাঁর ব্যক্তিজীবন ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে সাধারণ মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। তিনি তাঁর ওয়েবসাইটে যেসব তথ্য ফাঁস করে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেন, এসব তথ্যের নথি সংরক্ষণ করেন ভূগর্ভস্থ এক সংরক্ষণাগারে, যা পাইয়োনেন হাইসিকিউরিটি কম্পিউটার স্টোরেজ নামে পরিচিত। তাঁর এই আয়োজন গোয়েন্দা ছবি ‘জেমস বন্ড’ সিরিজের কোনো টুকরো ঘটনার কথাই যেন মনে করিয়ে দেয়।
উইকিলিকসের যাবতীয় নথি সংরক্ষিত হয়ে আসছিল সুইডেনের স্টকহোমে স্নায়ুযুদ্ধকালের একটি নিউক্লিয়ার বাংকারে। এখানে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তথ্যও সংরক্ষণ করা হয়। ভূপৃষ্ঠের ১০০ ফুট গভীরে পাইয়োনেন ডেটা সেন্টারে রয়েছে এই সংরক্ষণাগার। আসলে সেটি এক বিশাল গুহা। ভিটা বার্গ পার্কের নিচে গ্রানাইট পাথর খুঁড়ে তৈরি করা হয়েছে গুহাটি।
সেখানে তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য রয়েছে একগাদা কম্পিউটার। সেদিক থেকে অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সেখানকার পরিবেশের মিল রয়েছে। তবে ব্যতিক্রম রয়েছে সাজসজ্জায়। ওই ভূগর্ভস্থ কার্যালয়ে রয়েছে একটি ভাসমান সম্মেলনকক্ষ, রয়েছে ঝুলন্ত কাচের করিডর। ব্যাক-আপ জেনারেটর হিসেবে রয়েছে একটি জার্মান ইউ-বোট (ডুবোজাহাজবিশেষ) ইঞ্জিন।
অব্যবহূত ভূগর্ভস্থ ওই পুরোনো গুহাটি ২০০৮ সালে খোলা হয়। এতে নতুন করে নকশার কাজ করে সুইডিশ স্থপতি প্রতিষ্ঠান আলবার্ট ফ্রান্স-ল্যানর্ড। জেমস বন্ডের ছবির শুটিংয়ের জন্য সেট নির্মাণ করে সুনাম অর্জন করেন স্যার কেনেথ অ্যাডামস। তাঁর কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে ভূগর্ভস্থ গুহাটির অভ্যন্তরভাগ সাজানোর কাজ সেভাবেই করেন তাঁরা। পরে দেখা যায়, পরিবেশটাতে কেমন জড় ভাব চলে এসেছে।
গাছপালার সমাবেশ ঘটিয়ে এতে প্রাণ সঞ্চার করা হয়। উজ্জ্বল সৌরালোক ও কৃত্রিম জলপ্রপাতের মাধ্যমে সজীব রাখা হয়েছে এসব গাছ। সুইডেন ও যুক্তরাষ্ট্রের তীক্ষ নজর এড়াতে একটি মোক্ষম গোপন জায়গা খুঁজছিলেন অ্যাসাঞ্জ। শুরুতে উইকিলিকসের ওয়েবসাইট পরিচালিত হচ্ছিল আমাজন ডটকম ওয়েবসাইট থেকে। মার্কিন রাজনীতিকদের চাপে একপর্যায়ে তারা উইকিলিকসের তথ্য প্রচার বন্ধ করে দেয়।
এরপর অ্যাসাঞ্জ একটি ফরাসি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁর কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে থাকেন। একপর্যায়ে তারাও মুখ ফিরিয়ে নেয়। শেষে অ্যাসাঞ্জ সুইডেনে শেকড় গাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। মত ও তথ্য প্রকাশের স্বাধীনতার দিক দিয়ে সুইডেন শীর্ষ সারির দেশ। সুইডিশ আইন অনুযায়ী তথ্য ফাঁস করার জন্য অ্যাসাঞ্জকে কখনো বিচারের মুখোমুখি হতে হবে না।
উইকিলিকসের কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকজন ধনাঢ্য ব্যক্তি অনুদান দিয়ে আসছেন।
বিস্তারিত
স্পর্শকাতর এইসব গোপন দলিল প্রকাশের মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃত নগ্ন সাম্প্রদায়িক রূপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। অনেক কূটনৈতিকের মতে এই ঘটনার মাধ্যেমে স্নাযুযুদ্ধ তথা তথ্য যুদ্ধের সূচনা হযে গেছে। যদিও অনেকে মনে করে ৯/১১ এর মত এটাও যুক্তরাষ্ট্রের একটি সাজানো নাটক, তবু আমরা অপেক্ষায় আছি কি হয় দেখার জন্য....
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।