আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভয়ংকর সত্যের মুখোমুখি ।

প্রদীপ হালদার,জাতিস্মর। ভয়ংকর সত্যের মুখোমুখি । (১ম খণ্ড) মুখে আমরা যতই বলি না কেন , আমাদের সাহস আছে , কিছু কিছু এমন সব ঘটনার সামনে আমরা যখন পড়ে যাই , সাহস তখন ভয়ে মুখ লুকায় । আমারও সাহস ছিল , ভূত বলে কিছু নেই । সেইভাবে মনকে শক্ত করে , ঘরের বাইরে বারান্দায় খাটের ওপর একাকী ঘুমাতাম ।

আমাদের বাড়িটা চারদিক পাকা পাঁচিল দিয়ে ঘেরা । সেদিন বাড়িতে রাত দশটা নাগাদ ফিরেছি । খাওয়া -দাওয়া সেরে নিজের বিছানায় গিয়েছি রাত এগারোটায় । মা ঘরের দরজা বন্ধ করে দিল । ঘরের একটি জানালা খোলা ।

ঘরের মধ্যে আলো জ্বলছিল । আমার ছোট ছোট ভাই-বোনেরা ঘরের মধ্যে সবেমাত্র বিছানায় শুয়ে পড়েছে । চোখে কারোর ঘুম আসে নি । আমি বিছানায় মাথা রেখে মশারির ভেতর থেকে এদিক ওদিক তাকাচ্ছি । চারদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার ।

আমি খাটের ওপর থেকে শুয়ে শুয়ে বারান্দার চারদিক তাকিয়ে দেখছি , কেবল অন্ধকার , কিছু পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে না । হঠাৎ আমার মনে হল - আমি কেমন যেন ভয় পাচ্ছি , হাতের দিকে তাকাতে বুঝলাম , লোম খাড়া হয়ে যাচ্ছে । ভাবতে না ভাবতেই আমার থেকে কুড়ি হাত দূরে আচমকা একটা সাদা মূর্তি এসে হাজির । মূর্তি দেখেই ভেবে নিলাম - কোন মানুষ সাদা চাদর মুড়ি দিয়ে আমাকে ভূতের ভয় দেখাতে আসছে , যাতে আমরা বাড়িটা বিক্রি করে দিই । ভাবতে না ভাবতেই সাদা মূর্তিটা আমার পায়ের কাছে এসে গেল ।

চোখ নেই, কান নেই, মুখ নেই,হাত নেই,পা নেই। পুরো একটা সাদা মূর্তি । আমার পায়ের কাছে আসা মাত্রই , তার দিকে তাকিয়ে জোরে চীৎকার করে উঠলাম- "বাঁচাও " । সঙ্গে সঙ্গে মূর্তিটা উধাও । আমি সঙ্গে সঙ্গেই খাট থেকে নামলাম এবং মূর্তিটা প্রথমে যেখানে এসে দাঁড়িয়েছিল , সেখানে গেলাম ।

কিছু নেই । আমার চীৎকারে ঘরের মধ্যে ভাই-বোনেরা চেঁচামেচি শুরু করে দিল । মাকে দরজা খুলতে দিচ্ছিল না । সবাই ভয় পেয়ে গেল । আমি ভাবলাম- মানুষ হলে পায়ের শব্দ শুনতে পেতাম, কিন্তু শুনতে পাই নি।

কেউ বলবে সাদা চাদর উড়ছিল, কিন্তু না । মা দরজা খুলল । আমি ঘরে গেলাম । ভাইকে আমার পাশে ঘুমাতে দিল । আমি একটা "দা" নিয়ে শুয়ে পড়লাম ।

মায়ের ভয় ছিল - আমি 'দা' নিয়ে কিছু করে ফেলি । ভয়ংকর সত্যের মুখোমুখি । (২য় খণ্ড) গরম কাল। প্রচণ্ড গরম। ঘরের বাইরে কাঠফাটা রোদ।

ঘরের জিনিষপত্রে, এমন কি বিছানায় হাত দিলে , হাতে যেন আগুনের ছ্যাঁকা দিচ্ছে । ঘরে ইলেকট্রিক পাখা ঘুরলে গায়ে ঠাণ্ডা বাতাসের পরিবর্তে গরম বাতাস গায়ে লাগছে । ফলে পাখা বন্ধ রাখা আছে । বেশী কষ্ট পাচ্ছে আমার পাঁচ বছরের ছেলেটি। ঘামাচিতে আমরা এমনিতেই কষ্ট পাচ্ছি।

সবেমাত্র সন্ধ্যা নেমেছে। আশেপাশের বাড়ি থেকে শঙ্খ ধ্বনি কানে ভেসে এল। সারাদিনটা গরমে হাস ফাস করার পর ছেলেকে বই পড়াতে আর ভাল লাগছিল না । রাত দশটা অবধি টিভির বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখলাম । তারপর রাতের খাওয়া সেরে নিলাম ।

আমার স্ত্রীকে বললাম , চল আজ ঘরের বাইরে গিয়ে ঘুমাই । আমার ফোল্ডিং ক্যান খাটটা ঘরের বাইরে নিয়ে এলাম । রাত তখন এগারোটা । ঘরের সব দরজা বন্ধ করে , বাইরে স্ত্রী এবং ছেলেকে নিয়ে এলাম । ঘরে ঢোকার দরজায় আমার স্ত্রী তালা লাগিয়ে দিল ।

চাবি আমার কাছে রাখলাম । বাইরে চারদিক অন্ধকার । আমার আশেপাশের ঘরগুলোর দরজা বন্ধ আছে দেখলাম। চারদিকে বড় বড় ইউক্যালিপটাস গাছ । আমরা তিনজন ক্যানখাটের ওপর শুয়ে পড়লাম ।

আমার এক হাতে একটি টর্চ লাইট ধরা ছিল । আমার মাথার কাছে একটা বড় ইউক্যালিপ্টাস গাছ ছিল । বাইরে শোওয়ার সময় একবার ভাবলাম , এইভাবে বাইরে শুতে এসেছি , ঘুমানোর পর যদি কোন মাতাল চলে আসে , তাহলে কি করবো । ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি , আমার আর সেটা মনে নেই । আচমকা ঘুম ভেঙে গেল মাথার কাছে কয়েকজন পুরুষ লোকের গলায় ফিস ফিস আওয়া্জ শুনে ।

চোখ সামান্য খুলতে পেরেছি । স্ত্রীকে দেখতে পারছি । কিন্তু তাকে ডাকতে পারছি না । শরীরটাকে কিছুতেই নাড়াতে পারছি না । আমার মাথার কাছে কিছু মহিলা নিজেদের মধ্যে কথা বলাবলি করছে , আর ঝাঁট দিয়ে পাতা ঝাঁট দেওয়ার আওয়াজ কানে আসছে ।

আমি ভাবলাম এত রাতে মহিলারা পাতা কুড়াতে এসেছে । শোওয়ার সময় ভাবলাম , অথচ লোকগুলো আসা সত্ত্বেও আমি কিছু করতে পারছি না । লোকগুলোর কথা কানে এল বটে , কিন্তু পরিষ্কারভাবে কিছুই বুঝলাম না । হঠাৎ আমার বাম দিকে একটা কালো মূর্তি এসে হাজির হলো , পরণে সাদা শাড়ি , লাল পাড় , হাতে ত্রিশূল । আমি বললাম - 'মাগো আমায় বাঁচাও ।

' আমি আমার চোখ বন্ধ করে দিলাম । তারপর আচমকাই আমার ঘুম ভেঙে গেল । হাত পা শরীর নাড়াতে পারছি । হাত ঘড়িতে রাত বারোটা বাজে । উঠে পড়লাম ।

কোথাও কিছু নেই । সবাইকে নিয়ে ঘরে ঢুকলাম । পরের দিন রাতে আবার বাইরে থাকলাম । কিন্তু আর কিছু ঘটে নি । এটা স্বপ্ন নয় ।

সত্য ঘটনা । স্বপ্নে বাস্তবতার মিল থাকে না । এখানে মাথার পেছনে ইউক্যালিপটাস গাছ ছিল । ভয়ংকর সত্যের মুখোমুখি । (৩য় খণ্ড) আমি যেখানে থাকতাম , সেখানে দূরে একটা বড় পাহাড় দেখা যেতো ।

আমার ঘর থেকে সাইকেলে পাহাড়ের কাছে যেতে মোটামুটি কুড়ি মিনিট লাগতো । পাহাড়টা প্রায় পাঁচশো মিটারের মতো উঁচু । পাহাড়ের কোল বেয়ে এঁকেবেঁকে রাস্তা চলে গেছে । আমি যখনই সময় পেতাম , সাইকেল নিয়ে একাকী পাহাড়ের পথে চলে যেতাম । চারদিকে ছোট ছোট পাহাড় ।

মাঝখান দিয়ে আমি একাকী সাইকেলে চেপে চারদিকের সবুজ বনানীর দৃশ্য দেখতে দেখতে কখন যে স্বপ্নালোকে হারিয়ে যেতাম , নিজেই জানতাম না । একবার ভাবলাম পাহাড়ের মাথায় উঠবো । পাহাড়ে ওঠার নেশা আমার মাথায় চেপে বসলো। পাহাড়ে কোথায় কি আছে , আমার জানা ছিল না । কোথায় কি ধরণের সাপ আছে , তাও আমার জানা ছিল না ।

ভয়ের কি আছে ? পাহাড়ে উঠবোই এবং একাই । পরে বুঝেছি পাহাড়ে ওঠা একটা বোকামি । সেদিনটা আমার খুব মনে পড়ে । গরমকাল । জ্যৈষ্ঠ মাস ।

শনিবার । বেলা বারটা নাগাদ সাইকেল নিয়ে পাহাড়ের পথে পা বাড়ালাম । সেখানে আদিবাসীদের বসবাস । তাদের একজনের বাড়িতে আমার সাইকেলটি রেখে দিলাম । পাহাড়ে ওঠার একটা সরু পথ খুঁজে পেলাম ।

সঙ্গে নিলাম একটা ছোট্ট জালের ব্যাগে একটা জলের বোতল। আমি ধীরে ধীরে পাহাড়ে উঠতে লাগলাম। চারদিকে বড় বড় শাল গাছ। কিছুদূর হাঁটার পর পথ হারিয়ে ফেললাম। চারদিকে শালপাতা ছড়িয়ে রয়েছে।

ওপরের দিকে হেঁটে উঠতে কষ্ট হচ্ছিল । পথ হারিয়ে আমি এলোপাথাড়িভাবে হাঁটতে লাগলাম । গাছের ছায়ার ভেতর দিয়ে হাঁটছিলাম । দূরের ঘর বাড়ি দেখতে পেলাম । চারদিক তাকাতে লাগলাম ।

পা একটু ব্যথা হয়েছে । তবু ওপরে ওঠার ইচ্ছা রয়েছে । আবার হাঁটতে লাগলাম । প্রায় দুঘণ্টা হেঁটেছি । চারদিকে শুধু গাছপালা ।

আমার খুব জল পিপাসা পেল । কাছে রাখা বোতল থেকে জল খেলাম । কিন্তু জল পিপাসা মিটলো না । জল প্রচণ্ড গরম হয়ে গেছে । হঠাৎ আমার খুব ক্ষিধে পেল।

কিন্তু কাছে সামান্য জল ছাড়া আর কিছু নেই। ক্ষিধে যেন আরও বেড়ে চলেছে । তখন মনে হচ্ছে , হাতের কাছে যা পাই , তাই খাই । মনকে শক্ত করলাম । হাতের কাছের এসব ফল খাওয়া ঠিক হবে না ।

কি বিষাক্ত ফল হতে পারে , নতুবা ঐ সব ফল খেয়ে পাগল হয়ে যেতে পারি । এবার আমি চীৎকার করে ঈশ্বরকে ডাকতে লাগলাম - ' হে ভগবান , আমাকে একটা ফল দাও । আমি খুব ক্ষুধার্ত । তোমার নাম দিকে দিকে প্রচার করবো । ' বার বার এই কথা বললাম ।

এবার ঠিক করলাম - ওপরে যাব না , নীচে নেমে যাব । আমি নীচে নামতে লাগলাম । হঠাৎ আমার পায়ের কাছে দেখি একটি পাকা বেল। আমি বেলটি তুলে নিলাম। সেটাকে ফাটালাম।

তৃপ্তি সহকারে খেলাম । জল খেলাম । মনটা ভরে গেল । তবু ক্ষুধা যেন মেটে না । আর একটা বেল পেলে যেন ভাল হতো ।

আমি আবার ঈশ্বরকে ডাকতে লাগলাম - হে ঈশ্বর , আমাকে আর একটি ফল দাও । তোমার নাম দিকে দিকে প্রচার করবো । লোভ ভাল নয় । তবু আর একটি ফল চাইলাম । নীচে নামতে লাগলাম ।

হঠাৎ দেখি পায়ের কাছে একটি পাকা বেল । আমি কুড়িয়ে নিলাম । ফাটালাম । তৃপ্তিভরে খেলাম । জল খেলাম ।

তবু মানুষের লোভ বাড়ে । আমি আবার ঈশ্বরকে ডাকতে লাগলাম - বললাম , আমি খুশী , তোমার নাম দিকে দিকে প্রচার করবো , তুমি আমাকে আর একটি ফল দাও । আমি নীচে নামতে লাগলাম । হঠাৎ পায়ের কাছে একটি পাকা বেল । সেটাকে কুড়িয়ে নিলাম ।

এবার দেখি চারদিকে বেল গাছ । গাছগুলো বেলে ভর্তি । মানুষের লোভ তবু বাড়ে। আমি আবার বেল পাড়তে লেগে গেলাম। ছয় -সাতটা বেল নিলাম।

জালের ব্যাগটাতে রাখলাম। দেখি জলের বোতল নেই। ঘাবড়ে গেলাম। সেদিন তখনই ওপরে ওঠার বাসনা ছেড়ে দিলাম । আমি পাহাড় ছেড়ে নীচে চলে এলাম ।

ঘড়িতে তিনটে বাজে । তারপর সাইকেল চেপে আমি বাড়ি ফিরে এলাম। ঘটনা সত্য । পরবর্তীকালে আমি একজনকে নিয়ে পাহাড়ের মাথায় উঠেছিলাম । কিন্তু বেল গাছ পাহাড়ের মাথায় নেই ।

বেল গাছগুলো পাহাড়ের নীচে ছিল । নীচ থেকে বেল ওপরে উঠবে না । পরে আমি বুঝেছিলাম , ইশ্বর নয় , আমি ভূতের পাল্লায় পড়েছিলাম । ভয়ংকর সত্যের মুখোমুখি । (৪র্থ খণ্ড) আমার বয়স তখন মোটামুটি পাঁচ বছর ।

আর এই বয়সে আমার ছিল বাঁধন ছাড়া আনন্দ । বাড়িতে কাউকে বলতে হতো না আমি কোথায় যাচ্ছি । এ পাড়া কিংবা অন্য পাড়ায় গিয়ে সারাদিন খেলাধূলা । সেদিন সকালবেলায় ঘুরতে ঘুরতে একটা বড় পুকুরের পাড়ে এলাম । দেখি আমার বয়সী ছেলে-মেয়েরা জলে সাঁতার কাটছে ।

কেউ আবার কলার ভেলা নিয়ে সাঁতার কাটছে । সময়টা মোটামুটি সকাল দশটা হবে । পরণে আমার হাফ প্যাণ্ট । খালি গা , খালি পা । সবার দেখাদেখি আমি পুকুরে নামলাম ।

আমি জলে সরাসরি সাঁতার কাটতে পারি না । আমি একটা কলার ভেলা পেলাম । সেটাকে ধরে জলে সাঁতার কাটতে লাগলাম । আমি পুকুরের পাড় থেকে প্রায় কুড়ি হাত দূরে কলার একটা ভেলা নিয়ে সাঁতার কাটতে ব্যস্ত আছি । পুকুরের দুই দিকে শান বাঁধানো ঘাট আছে ।

আমি আপন মনে পা দুটি জলের ওপর নাড়াচ্ছি , আর দু হাত দিয়ে কলার ভেলাটি ধরে রেখেছি । আমার আশেপাশে অন্য সব ছেলে-মেয়েরা জলে সরাসরি সাঁতার কাটছিল । আমি তখন পাড় থেকে প্রায় কুড়ি হাত দূরে আছি । পুকুরের মাঝখানে যাব ভাবছি । আর তখনই আমার বয়সী একটি মেয়ে , পাড় থেকে জলে নেমে , সাঁতার কেটে এসে , আমার ভেলাটি ধ'রে জোরে সাঁতার কেটে পুকুরের মাঝখানে যাবার চেষ্টা করতে লাগলো ।

আমার মাথা কয়েক সেকেণ্ডের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিল - ভেলাটি ধরে থাকলে , মেয়েটি ভেলা নিয়ে মাঝ পুকুরে যাবে ,আর আমাকে ভেলা থেকে ঠেলে দিলে আমি জলে ডুবে মারা যাবো । তাহলে বাঁচতে হলে , ডাঙার দিকে মুখ করে জলের তলায় নেমে যেতে হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে হেঁটে ডাঙায় উঠতে হবে । যেই ভাবা , সেই কাজ । আমি কলার ভেলাটি ছেড়ে দিলাম । শ্বাস নিয়ে জলের তলায় নেমে গেলাম ।

মাটি স্পর্শ করলাম । ডাঙার দিকে মুখ করে জলে ডুব দিয়েছিলাম । তাড়াতাড়ি হেঁটে ডাঙায় উঠলাম । তারপর পাড়ে উঠলাম । দেখি মেয়েটি ভেলাটা নিয়ে পুকুরের মাঝখানে চলে গেছে ।

আমি আর পুকুর পাড়ে দাঁড়ালাম না । সোজা বাড়িতে চলে এলাম । এ ঘটনা আমার স্মৃতিতে আজও রয়ে গেছে । আজও ভাবি সেদিনকার ঘটনার কথা । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।