পুরনো আমিটাই ভাল ছিলাম... তোমাদের রাজপথে-
রক্তের চাষ করেছ হাসিমুখে;
আমি শুঁকে দেখেছি
সেখানে শুধু মানুষেরই রক্ত।
তোমাদের হলিখেলার সময়ে,
ডাস্টবিনের পাশে বেওয়ারিশ কুকুরের চোখে
আমি দেখেছি করুণাভ ঘৃণা।
তোমাদের শহুরে কোলাহলে-
ভুল করে ঢুকে পড়া
আমি অবাঞ্চিত, বড্ড বেমানান।
স্টিচ লাগানো বৃদ্ধ লোকাল বাসের
টেনে নিয়ে চলা হাঁপানি জীবন
আর আমার গেঁয়ো অপ্রস্তুত পদক্ষেপ
এখন মিলনার্থক।
ধাতব কয়েন তোলার ফাঁকে
পকেটে যখন ফোরসেপ আঙ্গুল নড়ে ওঠে,
ললিপপ শিশুটাও
আমার সারল্যকে ভেংচি কাটে।
তোমাদের ফুটপাতে-
হকার, বাইকওয়ালা, বারবণিতাদের দৃষ্টি
আমার চোখ যখন ছিদ্র করে,
আমি আকাশ খুঁজি, নিজেকে দেখি
প্রাগৈতিহাসিক কুয়োর তলায়, সেখানে
ইস্পাত, কংক্রিটের দেয়ালগুলো
ধূসর আকাশের কানে ফিসফিস করে;
যেটুকু আলো তলা ছুঁয়েছে,
তারও অনেকখানি কেটে নিয়েছে
অন্ধ, বধির প্রহরখেকো ইঁদুর।
ল্যাম্পোস্টের জন্ডিস আলোয়,
সড়কদ্বীপে ধোঁয়াটে ঘাসফুল
ইচ্ছেপুরের ঘুড়ি হতে চায়।
ফিঙ্গেরা ওভার টাইম খাটে,
জমানো স্বপ্নে কিনবে সোনালী সুদিন।
আমার সবুজখেকো দৃষ্টিতে
শহুরে জড়াগ্রস্ত প্রতিফলন;
সেখানে এখন দৃষ্টিখেকো নৈরাজ্যের আস্ফালন
টলটলে ভেজা চোখে সুতীব্র রসায়ন,
আগুনমুখো তীরের মতো বিঁধে চলে প্রতিদিন।
তোমাদের পার্কগুলোতে-
আবছায়া আঁধারি আড়ালে,
আমি শুনেছি অসতর্ক শিৎকার;
আমি নিক্তিতে পবিত্রতা মাপতে শিখি নি,
আমি বুঝি নি বেনামী নবজাতকের কান্না।
অনিশ্চয়তা আর হতাশার বলিরেখা
জ্যামিতিক অবয়ব আঁকে প্রতিদিন।
এ শহরের প্রতিদিনকার পরিবর্তনের ইতিহাস খুঁটে খুঁটে
আমার আঙ্গুলের নখে ভাঙ্গনের সমারোহ।
উঁচু ছাদের আকাশমুখী খুঁটিতে
ছেঁড়া ঘুড়ি স্বাধীনতার কঙ্কাল হয়ে ঝুলে থাকে।
পাখিহৃদয়ে একটু একটু করে বুনে চলেছি
নির্লিপ্ততার বাবুই নীড়।
পোড়া মাটি আর ইস্পাত শহরের প্রান্তে
চেনা শৈশবের আলো এসে ফিরে যায় প্রতিদিন;
দরজায় কড়া নেড়ে সাড়া পায় না, ধূসর অতীতের গল্প।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।