আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুক্তগল্প: রোদকামিজে ব্যাকুলতা ও সিনেমা উৎসবের পর

প্রকৃতিকে করো তব দাস-চে দ্য আইডল (ব্লগার নং - ৩১৩৩৯) # আমাদের ওখানে রোজ যেসব গল্প রচিত হত আর আমরা কবিতার মত টেনে টেনে পুরোনো দিনের বাংলাছবির গানের সুরে আবৃত্তি করতাম পাশের বাড়ির ফারজিনার গোসলকাব্য; ফারজিনা কে আমরা আপন ভেবেই আমাদের গল্পের নায়িকা বানাতাম। ফারজিনা রোজ দুপুরবেলা স্নানে আসতো বলে এই কদমবৃক্ষঘাটে, আমরা কখনো রাইসরিষার খেতে অথবা বুনোকুলের ঝাড়ে অথবা কদমের পাতাঘর অথবা ইত্যাদি ইত্যাদি। দৃশ্যের সাথে মাছরাঙার মিল ছিলো। আমাদের রেটিনায় তখন ক্রমাগত সিনেমা। সেখানে ফারজিনা কিশোরী হয়ে আসতো, নারী হয়ে জলে টুপডুব আর জল ঝরিয়ে সে উঠে যেত কবিতা।

একদিন দেখলাম ফারজিনার বদলে ওর ছোটবোন। নীলের গভীরে কোথায় হারালো শেষশারদীয় কাব্য? আমরা শুধালাম। উত্তরের বদলে আমরা আরেকটা নায়িকা পেলাম। # আমাদের কেউ কেউ প্রস্তাব দিলো সিনেমা বানানোর। আমরা কেউ গল্প থেকে বানালাম চিত্রনাট্য।

কেউ সংলাপ। কেউ সূর্যকে বাঁকিয়ে ধরে করলো আলোর প্রক্ষেপণ। আমাদের মাঝে পরিচালক ছিলো না। আমরা শেষে চোখকে করলাম হ্যান্ডিক্যাম। পঁয়ত্রিশ মিমি উৎসবের পর ঘরে ফেরার পথে আমরা দেখলাম, ঝোপের উপর রোদ পোহায় ফারজিনার কামিজ।

# কামিজ কীভাবে শিহরণ জাগায়! ফারজিনা, আমরা আসলে তোমার অস্তিত্ব আবিষ্কার করার চেষ্টা করছিলাম। স্পর্শের কবিতা থেকে ধার করে আনি সাড়ে তিন মাইল। # ফারজিনার সাথে আমাদের অনেকদিন দেখা হয় না। এই সময়ে আমরা কবিতাপরিষদ গড়ে তুলি, আরো আরো সিনেমা বানাই। ফারজিনার বোন এখানে কবিতা আবৃত্তি করে, আমরা কবিতা শুনি।

সিনেমায় অভিনয় করে, আমরা মুগ্ধ হই। সবশেষে সে আমাদের কাছে টানে। আমরা কাছে যাই। আমাদের চু্ম্বন করে। আমরা শিহরিত হই।

ফারজিনার বোন চলে গেলে আমরা ফিরে যাই কদমবৃক্ষঘাটে। এখানে এখনো ফারজিনা আসবে বলে আমাদের অপেক্ষা করতে হয়। # অবশেষে ফারজিনা আসে। আমরা ওর মুখে তাকাই। ফারজিনা হাসে।

আমরা মুগ্ধ হই। মুগ্ধতা কেটে গেলে দেখি, ওর কোল জুড়ে পূর্ণচাঁদ। আমাদের নিয়মিত উৎসবে আমন্ত্রণ জানালে সে মলিন হয়। আমরা হঠাৎ আবিষ্কার করি, ফারজিনা এখন কেবল নারী; কিশোরী কিংবা কবিতা নয়। # ঝোপের গায়ে আবার রোদ পোহায় তার কামিজ।

গোপনে আর কেউ নেড়েচেড়ে দেখে না। ফারজিনা একসময় নদী হয়ে যায়। আমাদের নদীউৎসবে আগ্রহ কমে আসে বলে ক্লান্ত পড়ে থাকে কবিতা রা, সিনেমা রা। আমরা এখন মাঝরাতে বালুচরে ঘোলাচোখে দেখি চাঁদ। # ফারজিনার বোন ফিরে যায়।

আমরা তার আদ্রঠোঁটে চুম্বনলিপি আঁকি না। ক্যামেরাগুলো অলস পড়ে থাকে ডাহুকের মায়াময় চোখের আটচালায়। # একরাতে চুপিচুপি ফারজিনা আমাদের গলা জড়িয়ে ধরে। আমরা ছাড়িয়ে নিই। আমাদের গেলাসগুলো ক্রমাগত খালি হয়ে আসে আর আমরা কাতর হয়ে পড়ি কাতর হয়ে পড়ি সেই কোন দূর কৈশোরে সব চোখ ফাঁকি দিয়ে ফারজিনার কামিজে ফারজিনা কে স্পর্শ করার তীব্র ব্যাকুল বুনো চেষ্টায় অথচ আমাদের হাতের নাগালে ঝুলে থাকে স্বয়ং ফারজিনা ও তার বোন! ================================================================ (পরমাণুগল্প এখনো আঁতুড়ঘর পর্যায়ে।

এমতাবস্থায় এর নাম পাল্টে 'মুক্তগল্প' করা বিলাসিতার পর্যায়ে হয়তো পড়ে। তবুও বিলাসিতাকেই নিলাম। নতুন নামকরণের জন্য কৃতজ্ঞতা কবি অমিত চক্রবর্তী কে। তার মন্তব্যই অন্যতম নিয়ামক। ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।