বহুল আলোচিত তিস্তা চুক্তি না হলে ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার চুক্তিও হচ্ছে না। গুরুত্বপূর্ণ ওই নদীর পানি বণ্টন চুক্তির বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে 'না' এর জবাবে বাংলাদেশ এই কঠোর অবস্থান নিল। ভারতকে গতকালই সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়_ তিস্তা চুক্তি সই বাতিল হওয়ায় ট্রানজিটের সম্মতিপত্রে সই করছে না বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্রটি জানায়, তিস্তা চুক্তি না হলে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে ট্রানজিট চুক্তি।
বিষয়টি অবহিত করতে গতকাল দুপুরে ভারতীয় হাইকমিশনার রাজিত মিত্তারকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানে রাজিত জানান, এ দফায় তিস্তা চুক্তি হচ্ছে না। জবাবে কোনো রাখঢাক না রেখেই সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়_ তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি না হলে ভারতকেও ট্রানজিট দেওয়া সম্ভব নয়। অন্যদিকে গতকাল হাসিনা-মনমোহন বৈঠকে ইতিবাচক 'নাটকীয়' কোনো সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে মনে করেছিলেন অনেকে। কিন্তু সেখানেও তিস্তা বিষয়ে আশাব্যঞ্জক কিছু ঘটেনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সচিবের কক্ষে গতকাল দুুপুরে ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন ও ভারতকে ট্রানজিট চুক্তির বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। পরে পররাষ্ট্রসচিব মোহাম্মদ মিজারুল কায়েস বলেন, 'ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন থেকে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছিল। তাতে আমরা সন্তুষ্ট না হয়েই সামনাসামনি কথা বলার প্রয়োজন মনে করেছি। ' সূত্রমতে, তিস্তা চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলবের জরুরি নির্দেশ দেওয়া হয়। সরকারের শীর্ষ পর্যায়েও দফায় দফায় বৈঠক হয়।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে গতকাল কথা বলেন তার দুই উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী ও ড. মসিউর রহমান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি হতাশ না হয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির বিষয়ে আশাবাদী ছিলেন। সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে যোগাযোগও অব্যাহত রাখেন তিনি। কিন্তু গতকাল বিকালে সোনারগাঁও হোটেলে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিস্তা প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান তিনি। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি সরাসরি কোনো জবাব না দিয়ে বলেন, 'আমরা পুরো অঞ্চলের জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণে যৌথভাবে কাজ করছি।
' এ সময় পররাষ্ট্রসচিব মিজারুল কায়েস অবশ্য বলেছেন, 'এ দফায় তিস্তা চুক্তি হচ্ছে না, তবে লেগে থাকলে ভবিষ্যতে হতে পারে। ' এর আগে পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেনও তিস্তা চুক্তি অনিশ্চিত বলে জানান। তবে সকালে যখন দেখা গেল মনমোহনের বহরে ভারতের পানিসম্পদমন্ত্রী পবনকুমার বানসাল নেই, তখনই পরিষ্কার হয়ে যায় তিস্তা চুক্তি হচ্ছে না। এর আগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উষ্ণ সুসম্পর্ক রয়েছে, তিনি তিস্তার পানি চুক্তির বিরোধিতা করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।