আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তিস্তা চুক্তি না হলে ট্রানজিট সম্মতি চুক্তি এখনই হতে হবে কেন?

মিলে মিশে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ! ভারতের পশ্চিমবংগের মূখ্যমন্ত্রীর অভিমান থেকে আমাদের সরকারস্থানীয়রা কি কিছু শিখবেন না? বাংলাদেশকে মমতা কেবল ২৫ ভাগ পানি দিতে রাজি, যদিও শেখ হাসিনা উনার বান্ধবী। তবুও উনি বন্ধুত্বের চেয়ে নিজের দেশ তথা রাজ্যের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহনকে আমি শ্রদ্ধা করি। উনার ব্যক্তিগত অনাড়ম্বর জীবনযাপন আমার ভাল লাগে। উনার আচরণ, কথাবার্তা যতদূর টিভি-পত্রিকা মারফত দেখেছি, এক ধরণের শ্রদ্ধা তৈরী হয় উনার প্রতি।

তবুও আমি আমাদের সরকারের কাছে দাবী করবো, যে ট্রানজিট মূলত ভারতের জন্য দরকার, তাও সেটা তাদের এক অন্চল থেকে আরেক অন্চলের জন্য, যেটাকে অনেকে ট্রানশিপমেন্টও বলছেন, তার জন্য কেন আমাদের এখনই চুক্তি করা লাগবে? আর কতটা আয় আমরা এই ট্রানজিট/ট্রান্সশিপমেন্ট থেকে পাবো, তা কেন এখনো স্পষ্টভাবে ঠিক করা হচ্ছে না? অথচ তিস্তা চুক্তিতে পানি ভাগাভাগির হিসাবে ভারতের কি টনটনে হিসাব! কত অভিমান, রাজ্য সরকারের সাথে কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে দর কষাকষি! এছাড়া নেপাল ও ভুটানের সাথে আমাদের ভারতের ভিতর দিয়ে যে ট্রানজিট পাবার কথা তার কতদূর কি হলো? টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে কি কোন আলোচনা হবে এখন? ভারতের সাথে বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে কেবল কি ঐ ৬১ পণ্য রপ্তানীর ব্যবস্থা করলেই হবে? তাও হবে কিনা কে জানে! আমরা ভারত থেকে কি কি আমদানী করা বাদ দিব? আচ্ছা, ভারতের কি কি পণ্য আমাদের স্পর্শকাতর তালিকায় আছে? ভারত আমাদের টিভি চ্যানেলগুলো কবে থেকে তাদের দেশে দেখানো শুরু করবে? শাহরুখ খান, সালমান খান -- এরা তো এলো। আমাদের শিল্পীরা কয়জন গেল? খবরের কাগজে দেখছি ভারত নতুন করে আরো অর্থ সাহায্যের ঘোষণা দিবে। নগদ অর্থ দেয়ার চেয়ে মাননীয় মনমোহন আপনার কাছে বিশেষ অনুরোধ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় বাংলাদেশী ছাত্রদের জন্য আরো আরো স্কলারশীপের ব্যবস্থা করে দিন। আপনাদের আইআইটিগুলোতে যেন বাংলাদেশী ছাত্ররা স্কলারশীপ নিয়ে পড়ার সুযোগ পায় সে ব্যবস্থা করে দিন। আপনারা নগদ টাকা না দিয়ে আমাদের দেশে একটি ভাল মানের (আপনাদের আইআইটির মতো) প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে দিন।

আর সীমান্ত হত্যা বন্ধ করুন। হঠাৎ সীমান্তের ভিতরে ঢুকে আপনার বিএসএফ বাহিনীর সহায়তায় লোকেরা মাছ ধরে নিয়ে যায়, কি আজব! এসব বন্ধ করুন প্লীজ। সীমান্তের তীর ঘেঁষে আপনাদের মাদক কারখানাগুলো বন্ধ করুন। কি বলবো, এসব মাদক পাচার, চোরাচালানগুলোতে আমাদের দেশের মানুষগুলোই জড়িত, তারাও দায়ী। আমাদের সরকারেরও উচিত এগুলো বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া।

কিন্তু.... আর ছিটমহলের বাসিন্দাদের দুর্ভোগের কথা কি বলবো? তারা কি পারে ২৪ ঘন্টাই বাংলাদেশের মূল ভূখন্ডে আসা-যাওয়া করতে? সে ব্যাপারে আমাদের সরকার কি ভাবছেন? ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেয়ার আগে অবশ্যই এসব ছিটমহলের বাসিন্দাদের অবাধে দেশের মূল ভূ-খন্ডে আসা-যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা উচিত। আর সবশেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন আপনি আমাদের সরকারস্থানীয়দের দেশপ্রেম শিখিয়ে দিয়ে যান। কিভাবে সরকারী কাজে দেশের সম্পদ কাজে লাগাতে হয়, দেশীয় পরিবহন, আসবাবপত্র ব্যবহার করতে হয়, কিভাবে বন্ধুত্বের চেয়ে নিজ দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হয় এসব তাদের শিখিয়ে দিয়ে যান। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।