আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হিমুর এই ভুজুং ভাজুঙ্গের আবার শিরোনামও চায় !! হুহ !!

-কাকে চাই? আমি হাসি মুখে বললাম -রফিক ভাই কেমন আছেন ? (অপরিচিত কারো মুখে নিজের নাম শুনে যে কারো অবাক হবার কথা । কিন্তু মনে হচ্ছে ভদ্রলোক ওই পর্যায়ের কেউ না । তিনি এখনো ঝিম মেরে দরজা ধরে দাঁড়িয়ে আছেন । বোঝার চেষ্টা করছেন আমি তার নাম কেমনে জানলাম !) -কাকে চাই ? (আবারও একি কথা !) -বদনাবাবা কি আছেন ? -বদনাবাবা ! আমি মুখে আমার সেই বিখ্যাত হাসি ফুটিয়ে বললাম -জি বদনা বাবা । -কোন বদনা বাবা ? আমি মুখে গাম্ভীর্যের ভাব ফুটিয়ে বললাম -ওই যে যিনি হারানো ব্যাক্তির ব্যাবহার্য বদনা ধরে তার খোঁজ বলে দিতে পারেন ।

লোকটির চোখে মুখে স্পষ্ট বিরক্তির ছাপ -না এখানে বদনা বাবা নামে কেউ থাকেনা । -আমাকে কি তাহলে ভুল ঠিকানা দেয়া হয়েছে নাকি আপনি মিথ্যা বলছেন ? -আজব তো ! আমি কেন মিথ্যা বলব ? -বলা যায়না বলতেও পারেন । আপনি যথেষ্ট বিরক্ত করছেন । নাউ যান তো -বদনা বাবার ঠিকানা দিন চলে যাই -বললাম তো বদনা বাবা নামে এখানে কেউ থাকেনা । কেন খামোখা বিরক্ত করছেন ? -তাহলে আমাকে ৫০ টাকা দিন ।

বদনা বাবার খোজে এইখানে আসতে আমার ৫০ টাকা রিক্সা ভাড়া লেগেছে । ভাড়া দিন চলে যাই । -আমি কেন আপনার ভাড়া দেব ? আমি কি এখানে আপনাকে আসতে বলেছি ? -ভাই ভাড়াটা দিন চলে যাই । আমি চাইলে আরোও বেশিও চাইতে পারতাম (আমি এবার লোকটির চোখে স্পষ্ট ভয় দেখতে পেলাম ! আমরা যে জিনিসটা বুঝিনা সেটাকেই ভয় পাই । লোকটি আমাকে বুঝতে পারছেনা তাই ভয় পেয়েছে ।

খুব ক্ষুদ্র সময়ের মাঝে মানুষকে ভয় দেখাতে পরার মতো আনন্দ পৃথিবীর আর কোন কিছুতে নেই) -দাড়ান টাকা নিয়ে আসছি । এই বলে লোকটা দরজা বন্ধ করে দিল । আমার কেন জানি মনে হচ্ছে লোকটি আর দরজা খুলবেনা । তার পরেও আমি অপেক্ষা করতে থাকি । বেশ কিছুক্ষন অপেক্ষা করলাম! লোকটি বোধহয় আর দরজা খুলবে না!এমনিতেই অনেক ভয় পাইছে হজম করতে সারারাত লাগবে ।

আগামীকাল সকালে হয়তোবা পড়শীদেরকে বলবে -বুঝলেন আলীফ ভাই ! কালকে রাত ১২.০০ কি ১.০০ টার দিকে হলুদ পান্জ্ঞাবী পরা এক লোক এসে বলে ৫০ টাকা দ্যান পুরিয়া খাব । আমি কিছু না বলে কানের মধ্যে কষে একটা চড় মেড়ে বিদায় দিছি । শালার শখ কত ! রাত দুপুরে পুরিয়া ! পুরিয়া তোর ইয়ে দিয়ে বের করব তখন আলীফ ভাইয়ের বউ ন্যাকা গলায় বলবে -রফিক ভাই ! আপনার তো অনেক সাহস । যদি কিছু করে ফেলতো !. . . . . . . . . . . . . . . . ♠ এইবার অন্য কোথাও যাওয়া যাক! রাত কতো হয়েছে কে জানে ! একটা ঘড়ি থাকলে বেশ সুবিধা হতো ! আমি হাটতে শুরু করলাম. কুমিল্লা শহরটা খারাপ না ! ভালোই । আমি পকেটে হাত দিলাম ! মনে পড়ে গেলো যে আমার পান্জাবির পকেট নাই . রিকসাওয়ালার টাকা দিয়েছিলাম নিজের টাকা দিয়ে ! ১০০ টাকা ছিল. এখন আছে ৫০ টাকা ! একটা চায়ের দোকানে বসলাম. দোকানদারকে বললাম -চাচা দুধ চিনি বাড়িয়ে একটা চা দিন ।

-'ভাইজান কি এখানে নতুন?' -আরে হ মিয়া ! বুঝলেন ক্যামনে ? -'অনেক দিন ধরে দোকান চালাই । জীবনে তো কম মানুষ দেখি নাই , কে এইহানে নতুন কে পুরান ঠিক এ বুঝতারি -'বদনা বাবার নাম শুনছেন? ' -হুনছি তো ! -তাকে কোথায় পাওয়া যাবে ? -ময়নামতি পাহাড়ে । -ও আচ্ছা বদনা বাবার প্রতি আমার আকর্ষণ কমে গেছে । তাই আর কিছু বললাম না । 'চা টা খেতে অসাধারণ হয়েছে ! একেবারে মজিদ ভাইয়ের চায়ের মতো ।

আমি বললাম । -ভাই আমার যদি পয়সা থাকতো , তাইলে আপনার হাত সোনা দিয়া বাধায়ে দিতাম । আমার টাকা পয়সা নাই তাই এই ৫০ টা টাকাই দিলাম । - না ভাইজান আমি আপনার থেইকা ট্যাকা লমুনা । আপনার পা ধরে একটা সালাম করুম ।

-কেন সালাম কেন ? -আপনার মত এত সুন্দর কইরা আমারে এর আগে কেউ বলে নাই আমি দেখলাম চাচার চোখের কোণে চিকচিক করছে পানি । আমার এই সামান্য একটা কথাই তার কাছে আমাকে আর সবার চেয়ে আলাদা করে দিয়েছে । আমি বেশি কিছু বললাম না । শুধু বললাম -তাড়াতাড়ি সালাম করেন । আমার যেতে হবে ।

চাচা মুখে হাসি চোখে জল নিয়ে আমাকে সালাম করতে আসছেন । আমি চোখ অন্য দিকে সরিয়ে রাখলাম । মানুষের আনন্দ অশ্রু দেখা আমার জন্য নিষেধ । আনন্দ অশ্রু মায়া বাড়ায় । আমি কারো মায়া জালে আবদ্ধ হতে চাইনা ।

আমি আর দাঁড়ালাম না । হাঁটতে শুরু করলাম । গন্তব্যহীন হাঁটা . . . . . আমি শুধু হেঁটেই যাই . . . . হেঁটেই যাই . . ___________________________________ Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।