বিবিসির বাংলাদেশ প্রতিনিধি মিঃ আরশাদ সেলিম অনেক কষ্টে ফাঁসির রায় প্রাপ্ত জামায়াতে ইসালামি বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদের সঙ্গে একটা সাক্ষাতের সুযোগ পেয়েছেন। তবে তাকে সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে মাত্র ১০ মিনিট। জেলার সাহেব কে অনেক রিকোয়েস্ট করার পরেও জেলার বলেছেন, নো হাঙ্কি পাংকি! অনলি ১০ মিনিটস। হেয়ার ইউর টাইম ইজ স্টারটিং.........
কয়েদী পোশাকে বিমর্ষ মুজাহিদ মাথা নিচু করে বসে আছেন। তার কাঁচা পাকা চুলে আজ চিরুনি না চালানোর ছাপ স্পষ্ট।
সোনালি কালারের চশমার ফ্রেমটিও এই এক দিনে যেন ধূসর বর্ণ ধারণ করেছে।
সাংবাদিক আরশাদ সেলিম মুজাহিদের সামনে বসে নিজের পরিচয় দিয়ে বল্লেনঃ আপনাকে বেশী বিরক্ত করবো না, স্যার! শুধু কয়েকটা প্রশ্ন করবো। উত্তর পেলেই চলে যাব।
মুজাহিদ আস্তে আস্তে মাথা উঁচু করে বল্লেনঃ ধ্যাৎ! আর স্যার! নাম ধরে ডাকেন, মুজাহিদ!
--স্যার, নামের কথায় যদি আসেন তাহলে বলি, মুজাহিদ শব্দের অর্থ তো “যোদ্ধা” তাই না?
--কেন? কোন সন্দেহ?
--না না! কখনোই না! আপনার বাবা মা সম্ভবত আপনার জন্মের পরেই আপনার ভবিষ্যৎ দেখতে পেরেছিলেন, সেই জন্য হয়তো আপনার নাম মুজাহিদ রেখেছিলেন।
--অবজেকশান! আমার নাম করনের সার্থকতার কথা মাথায় রেখেই আমি যুদ্ধে নামি, বজ্জাদ হত্যার যুদ্ধে!
--মিঃ মুজাহিদ, আপনার কি ২০০৭ সালের ২৫ অক্টোবর তারিখটার কথা মনে পড়ে?
--কেন থাকবে না? ঐদিন ইন্দোনেশিয়ার সামারতায় ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল।
--ঐদিনের অন্য কোন ঘটনা?
--দাঁড়ান! আর একটু মনে করে নি। হুম! মনে পড়েছে! পাকিস্থানের মিঙ্গড়ার পুলিশ লাইনে এক শক্তিশালী বোমা হামলায় ৩০জন মারা গিয়েছিল।
--পাকিস্থানের খবর দেখি ভালোয় রাখেন!
--রাখবো না! পাকিস্থান আমার পিয়ারা পাকিস্থান! গু .আজমের রায়ের বিপক্ষে একমাত্র পাকিস্থানেই বিক্ষব মিছিল হয়েছে, খেয়াল করেছেন?
--তা অবশ্যই ঠিক। আচ্ছা, যেইটা বলছিলাম! ২০০৭ সালের ২৫ অক্টোবরের অন্য কোন ঘটনা কি মনে পড়ে?
--না! মনে করতে পারছি না!
--ঐদিন আপনি নির্বাচন কমিশনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো যুদ্ধাপরাধী নেই। অতীতেও কোনো যুদ্ধাপরাধী ছিল না।
’
--সব মিথ্যে! প্রমাণ দেখাতে পারবেন?
--আপনার ঐদিনের বক্তব্য বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় আসছে। আমাদের কাছে পেপার কাটিং আছে।
--এখন কয়টা বাজে? আমার ঘড়িটা নষ্ট!
--মিঃ মজাহিদ, আপনার জীবনের সব চেয়ে স্মরণীয় ঘটনা কোনটি?
--এই দেশের বিরোধিতা করে হাজার খানেক বুদ্ধিজীবী হত্যা করেও বিগত সরকারের আমলে এই দেশের পতাকা আমার গাড়িতে প্রথম যেদিন শোভা পেয়েছিল। আমি যেদিন প্রথম সমাজকল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করি, সেদিনটি ছিল আমার জীবনের সব চেয়ে আনন্দের দিন।
--মিঃ মুজাহিদ, আপনাকে আর একটা প্রশ্ন করার ছিল।
--আর কোন প্রশ্নের উত্তর আমি দিব না, আমি পুরাই হতাশ!
--এতো হতাশা কেন?
--আমার যদি ফাঁসি হয় তাহলে গু. আজমের ডাবল ফাঁসি হওয়া উচিৎ ছিল! ইহা ইনজাস্টিস! মহা ইনজাস্টিস!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।