আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফেসবুক স্ট্যাটাস সংগ্রহ: ২৬

১০ মার্চ, ২০১৩: # প্রিয়, @[638240201: Utpal Shuvro], আজ আপনি প্রথম-আলোর কলামে লিখেছেন, 'এই টেস্টে শ্রীলংকার দ্বিতীয় ইনিংস দেখার সম্ভাবনা আর বাংলাদেশে হরতাল উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় সমান'। আপনার প্রতিটা লেখা, প্রতিটা শব্দ আমি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ি। একবার আপনাকে ট্যাগ দিয়ে লিখেছিলামও ছোটকাল থেকে আপনাকে অনুসরণ করি। এবং সুযোগ পেলে ডাক্তারি ছেড়ে ক্রীড়া সাংবাদিকতায় যোগ দেওয়ার যে স্বপ্নটা দেখি, সেটা আপনারই বোঁনা। আপনাকে প্রশ্ন করবো, এ ধৃষ্টতা আমি দেখাতে চাইনি।

কিন্তু আজকে আপনার কলাম পড়ে আমি যার পর নাই হতাশ। আমার মত যারা আপনাকে অনুসরণ করে, আমার ধারণা তাদেরও একই অবস্থা। ক্ষুদ্র ক্রিকেট জ্ঞান থেকে এটুকু বুঝতে পারছি আবহাওয়া উটকো ঝামেলা না করলে এই টেস্ট যে শ্রীলংকাকে দ্বিতীয়বার ব্যাট করতে হচ্ছে এটা নিশ্চিতই। সেটা হলে আপনার লেখাটা হয়তো আপনাকেই ফেরত নিতে হবে। আগামীকাল খেলার পাতার ওই ডান পাশের কলামেই এর ব্যাখ্যা দিবেন আশা করছি।

নতুবা আপনার আর বীরেন্দ্র শেবাগের মাঝে পার্থক্য থাকলো কী? # ১। এত বছরেও বাংলাদেশের কেউ ডাবল সেঞ্চুরী করেনি টেস্টে। সব ঠিক থাকলে আগামীকাল একাধিক ডাবল সেঞ্চুরী দেখা যাওয়াটাই স্বাভাবিক। '১১ মার্চ, ২০১৩' তারিখটা আলাদা করে লেখা হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে। ২।

শ্রীলংকার বিপক্ষে রেকর্ড পঞ্চম উইকেট জুটি ছিলো শচীন-রায়নার। ২৫৬ রানের। সেটা ভেঙে ২৫৮ রানে অপরাজিত অ্যাশ-মুশি। এর আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পঞ্চম উইকেট জুটির রেকর্ডটাও ভেঙেছে অ্যাশ-মুশি। আগেরটাতেও আশরাফুল ছিলো।

সাথে ছিলো আমিনুল ইসলাম বুলবুল। ভেঙেছে নিজেদের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডও। এখন অ্যাশ-মুশির ব্যক্তিগত সর্বোচ্চও যথাক্রমে ১৮৯ এবং ১৫১। ৩। আশরাফুল অ্যান্ড শ্রীলংকা; স্টিল অ্যা বেটার লাভ স্টোরি দ্যান মাহফুজুর-ইভা রহমান! ৬টা শতকের ৫ টাই শ্রীলংকার বিপক্ষে।

শ্রীলংকার বিপক্ষে ১০০০ বা তদ্ধুর্ধ রান করাদের সেরা দশে ঢুকে গেছে ও। আশরাফুল থেকে কম ইনিংসে শ্রীলংকার বিপক্ষে ১০০০ প্লাস রান করতে পেরেছে শুধু ব্রায়ান লারা এবং বীরেন্দ্র শেবাগ। ৪। ২০০৮ এ ছিলো আশরাফুলের সর্বশেষ সেঞ্চুরী। ৫ বছর পর নতুন আশরাফুল ফিরেছেন।

আমি নিশ্চিত, এই আশরাফুলের গায়ে আর 'ইনকনসিস্টেন্ট' ট্যাগ থাকবে না। এক ইনিংসে আবেগতাড়িত হয়ে বলছি না। এ আসলেই অন্য এক আশরাফুল। দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ১৫২ রানের ইনিংসটায় প্রচুর স্ট্রোক ছিলো।

এটা তা না। দেড় দিন উইকেটে থাকা, ৩৯৮ বল খেলা যা তা না! নিশ্চিত, এটা আগের আশরাফুল না। ৫। মুশফিকও অসাধারণ একটা সেঞ্চুরী করেছে কিন্তু সব লেখা হয়ে যাচ্ছে আশরাফুল কেন্দ্রিক। দেখে নিয়েন, আগামীকাল সংবাদপত্রের ফোকাসটাও পাবে আশরাফুল।

বাংলাদেশীদের জন্য আশরাফুল এমনই একটা আবেগের নাম। এই আবেগ হুদাই সৃষ্টি হয়নি। যখন দলে সাকিব-তামিম-মুশফিকের মত তারকারা ছিলো না, তখন অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ও একাই হারিয়ে দিয়েছিলো। আমরা তখন হঠাৎ যে আনন্দের উপলক্ষ্য পেয়ে রাস্তায় বের হতাম তার কারণ সৃষ্টি করতো আশরাফুল। আমি নিশ্চিত, পৃথিবীতে আর কোনো প্লেয়ার দিনের পর দিন রান না পেয়েও, একটার পর একটা দৃষ্টিকটূ আউট হয়েও মানুষের এতটা ভালোবাসা পায়নি যেটা আশরাফুল পেয়েছে।

৬। আউট হওয়ার ধরণ বলে দিলো মাহমুদউল্লাহর বিপিএল মেজাজটা এখনও যায়নি। একটা দিন ছিলো যখন অভিষেকে কেউ ৩০/৪০ করলেই বলতাম, 'পাইছে রে, বাংলাদেশ একটা প্লেয়ার পাইছে এবার'। জানি, মমিনুলের ক্ষেত্রে এটা হবে না। এটাকেই দিন বদল বলে! ৭।

এখনও দু'টো ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছি শ্রীলংকা থেকে। এক, ১৩২ রানে। দুই, ওদের তিনটা সেঞ্চুরীয়ান ছিলো। এখন পর্যন্ত আমাদের দুই জন। এখানেও একটা পিছিয়ে।

কাল প্রথম দুই সেশন ব্যাট করতে পারলে ড্র নিশ্চিত। আর আগামীকাল পুরো ব্যাটিং করতে পারলে শেষদিনের ফাঁটল ধরা পিচে জয়ের চেষ্টাও করা যেতে পারে বৈকি! ৮। সুসংবাদ জানাই। একটা না, দু'টো। এক, রাজ্জাককে পরের টেস্টের জন্য শ্রীলংকাগামী বিমান ধরতে বলা হয়েছে।

দুই, তামিম ইকবালকে পরের টেস্টের জন্য ফিট ঘোষণা করেছে ফিজিও। ৯। আশরাফুল এবং মুশফিকের দু'টো দেড় শতকই স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। হুম! ১১ মার্চ, ২০১৩: # ১। টেস্ট ক্রিকেটে মুশফিকের আগে ৩২৫ জন ডাবল সেঞ্চুরী করেছে।

উইকেট কিপার-ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মুশফিকের আগে ডাবল সেঞ্চুরীতে পৌছেছে মাত্র ৭ জন। আর উইকেট কিপার-ক্যাপ্টেন হিসেবে মুশফিকের আগে ডাবল সেঞ্চুরী করতে পেরেছে মাত্র একজন! যেকোনো বাংলাদেশীর পক্ষে প্রথম! দ্যা 'ক্যাপ্টেন কুল', দ্যা 'ক্যাপ্টেন ফ্যানটাস্টিক'! ২। উৎপল শুভ্র আশরাফুল আউট হওয়ার পর ফেসবুকে লিখেছেন, 'আশরাফুল- কট ম্যাথিউস বল নার্ভ'। এটুকু সব বলে দেয়। দেবব্রত মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, 'প্রোটোকল ভেঙে কাল আশরাফুলকে সংবাদ সম্মেলনে নেওয়ার সিদ্ধান্তটা কার? এই ১০ রান এখন তিনি কি করে দেবেন?' ৩।

চিন্তা করে দেখেন তো, এই দলটাতে যখন সাকিব-তামিম-নাফিস-নাঈম ফিরবে তখন দলে জায়গা পাওয়ার কম্পিটিশনটা কোন লেভেলে যাবে! পাইপলাইনে এখন অনেক ব্যাটসম্যান। পেস বোলিং ডিপার্টমেন্টেও এই ধরণের পজিটিভ প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা খুব জরুরী এখন। ৪। ভাইলোগ, গলে টেস্টে রান বাংলালিংক দলে পাওয়া গেলেও ডাবল সেঞ্চুরী কিন্তু গ্রামীনের দামেই কেনা লাগছে। খু উব খেয়াল কৈরা! ৫।

আগেও লিখেছি, এখনও লিখছি। অত্যুক্তি শোনালেও লিখছি। তুলনা দিয়ে হলেও লিখছি, নাসিরকে দেখে আমার ডানহাতি মাইক হাসির মত মনে হয়। চেহারায় এক বিন্দু টেনশন কাজ করতে দেখিনা ওর। প্রতিপক্ষে কখনোই ডোমিনেট করতে দেয় না।

৬। লিখে রাখলাম, ডাবল সেঞ্চুরী না করতে পারলেও আশরাফুলের উপরই ফোকাসটা আবার পড়তে যাচ্ছে। ইহাকে 'আশরাফুলানুভূতি' বা 'আশরাফুলাবেগ' বলে। এই শব্দ দু'টো সৃষ্টি করতে বাধ্য হলাম! ৭। বাংলাদেশ গতবছর মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করা নিজেদের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ৫৫৬ ও ভেঙে ফেলেছে।

সিক্স হান্ড্রেড অ্যান্ড স্টিল গোয়িং রাইট নাও। আশরাফুলের খেলা ৪১৭ বল যেকোনো বাংলাদেশীর খেলা সর্বোচ্চ বল সংখ্যা। অ্যাশ-মুশির ২৬৭ রানের জুটিও বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ। টানা দুই সেশনে উইকেট না হারানোর ঘটনাও এই প্রথম। এখন পর্যন্ত ১৮৩ ওভার ব্যাটিং করেছে, এটাও সর্বোচ্চ ওভার খেলার রেকর্ড।

ম্যাচটা রেকর্ড বইয়ে অনেক কাটাছেঁড়া করালো। ৮। ডাবল সেঞ্চুরী করার পর মুশফিক যে হাসিটা দিছে ওটার মূল্য কত? হ্যালির ধূমকেতু দেখতে ৭৫ বছর অপেক্ষা করা লাগে। এই হাসিটা দেখতে অপেক্ষা করতে হয়েছে পাক্কা ১৩ বছর। ১৩ বছরে ৪৭৪৮ টা দিন, ১১৩৯৫২ ঘন্টা, ৬৮৩৭১২০ মিনিট, ৪১০২২৭২০০ সেকেন্ড।

সময়ের সংখ্যাটা ক্যালকুলেটরে আঁটানো গেলেও মূল্যটা ক্যালকুলেটরের ডিসপ্লেতে আঁটার কথা না! ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.