অন্তহীন আমাদের পথচলা,জীবনের বাঁকে-বাঁকে গতির পরিবর্তন। আর চাওয়া - পাওয়ার অসম সমীকরণ। এই নিয়েই আমাদের জীবন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিতে উচ্চ মাধ্যমিকে যাদের ইসলামী অর্থনীতি রয়েছে তারা সামাজিক অনুষদের বিভিন্ন বিষয়ে ভর্তি হতে পারবে কি না এ নিয়ে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় আওয়ামী-বাম ও ডানপন্থী শিক্ষকদের মাঝে তুমুল হট্টগোল হয়েছে। আওয়ামী-বামপন্থী শিক্ষকরা ইসলামী অর্থনীতি নিয়ে উপহাস করে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় নতুন শিক্ষা বর্ষের ভর্তিতে ইসলামী অর্থনীতি বাদ দেওয়ার দাবী জানিয়েছেন।
‘ইসলামী অর্থনীতি- অর্থনীতি নয়’- এ দাবী করে আওয়ামী-বাম শিক্ষকরা আগামী শিক্ষাবর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়ায় নতুন শর্ত আরোপের দাবী জানান।
বামপন্থী শিক্ষকদের এ দাবীর প্রতিবাদ জানিয়ে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে শিক্ষকরা শাবি ভিসি অধ্যাপক ড. সালেহ উদ্দিনকে নোট অব ডিসেন্ট প্রদান করেছেন। বিষয়টি নিয়ে কয়েক ঘন্টা ব্যাপী তুমুল বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন সিনিয়র শিক্ষকরা।
গতকাল বুধবার একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরী সভায় এ ঘটনাটি ঘটে। বৃহত্তর সিলেটের শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও এবার এই অঞ্চলের মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারবে না বলে আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ডানপন্থী শিক্ষকদের অভিযোগ, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিতে কতিপয় শিক্ষক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বন্ধ করার ষড়যন্ত্র করছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় এবারের ভর্তিতে বিভিন্ন বিষয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে সাবজেক্টের যে শর্ত রয়েছে তাতে ইসলামী অর্থনীতি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। ইসলামী অর্থনীতি বাদ দিলে যারা মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে ইসলামী অর্থনীতি রয়েছে তারা অন্তত ১০টি বিষয়ে ভর্তি হতে পারবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শুধুমাত্র বাংলা ও ইংরেজী ছাড়া সকল বিষয়ে ভর্তির যোগ্যতা হারাবে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা। ফলে শাবির ভর্তিতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা চরম বৈষম্যের শিকার হবে।
গতকাল একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় আওয়ামী-বাম শিক্ষকরা ইসলামী অর্থনীতি একেবারে বাদ দেওয়ার দাবী জানালে ভিসি সালেহ উদ্দিন উচ্চ মাধ্যমিকে যাদের ইসলামী অর্থনীতি রয়েছে তারা শুধুমাত্র অর্থনীতিতে ভর্তি হতে পারবেনা এমন প্রস্তাব করলে আওয়ামী-বামপন্তী শিক্ষকরা সভা থেকে ওয়াক আউট করে।
পরে ভিসিকে সুশান্ত কুমার দাস ও ইয়াসমিন হকসহ প্রশাসনের প্রভাবশালী শিক্ষকরা চাপ প্রয়োগ করলে তিনি তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেন। ভিসি তাদের দাবী পুরণের আশ্বাস দিলে তারা আবার সভায় যোগ দেন।
বাম ধারার শিক্ষকদের এ দাবীর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে শিক্ষকরা ‘নোট অব ডিসেন্ট’ প্রদান করেছেন।
ডানপন্থী সিনিয়র শিক্ষকরা বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদ্রাসা ও কলেজসহ সকল শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষায় নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করে ভর্তি হয়। কারো দয়ায় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় না।
উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে একাডেমিক কাউন্সিলে আইন করে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বন্ধ করার পায়ঁতারা চলছে। আমরা এই অযৈক্তিক সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য গত বছর ভর্তি পরীক্ষায় কোন রকম পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ভর্তির দিন উপরোল্লিখিত নিয়ম প্রবর্তিত হয়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।