আমি আমার দেখা সবচেয়ে অলস মানুষ! সময়ঃ খৃীষ্টপূর্ব ০০০০ সাল
সে অনেক অনেক দিন আগের কথা। তখন তো আর এত শহর ছিলো না কিংবা থাকলেও এত আলো ছিলো না অথবা আলো থাকলেও তা বর্তমানের মতো প্রখর ছিলো না যা কিনা সব কিছুকে ধাধিঁয়ে দিতে সক্ষম।
তো এমনই এক দিনে চাঁদ উঠেছিল। জোৎস্নার চাঁদ। উঠতেই সারা আকাশ ভরে গেল আলোতে।
একবারে সব কিছুই স্পষ্ট। দূরের কাছের সব কিছুই দেখা যায়। সবাই দেখতে পেল অসাধারন এই দৃশ্য এবং চাঁদের আলো। কিন্তু তখন কেউ বুঝতে পারলনা চাঁদের এই অসাধারণত্বকে, ঠিক যেমন দাঁত থাকতে কেউ দাঁতের মর্যাদা দেয় না ঠিক সে রকম।
চাঁদ তো আর তা বোঝেনা যে কে কখন তাকে মর্যাদা দিচ্ছে আর সেটা করেও সে থোড়াই কেয়ার।
সে তার মতোই আলো দিয়ে যেতে থাকল যুগ যুগ ধরে। সাথে সাথে আকাশের তারাগুলোও তাকে সাপোর্ট করতে থাকল বেশ ভালো ভাবেই।
তবে কেউ কেউ চাঁদের গুরুত্ব ঠিকই দিতে লাগল।
"আয় আয় চাঁদ মামা টিপ দিয়ে যা
চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যা!"
কবিরা !! এই ধরনের আরও কবিতা তারা চাঁদকে নিয়ে লক্ষ লক্ষ লেখে, আবৃত্তি করে মোটামুটি চাঁদকে অস্থির করে তুলল। বাচ্চা থেকে শুরু করে বুড়োরা পর্যন্ত শুরু করল চাঁদের প্রশস্তি গাওয়া।
আর রোমান্টিক জুটির কথা তো আছেই।
সময়ঃ বর্তমান
কিন্তু তারপরও এতকিছুর পরও কিছুদিন পর চাঁদ কেন যেন হঠাৎই সব কিছু থেকে মন উঠে গেল। এর কারন বোধকরি বর্তমান যুগের হতাশাই দায়ি। বর্তমান যুগের সকলের মতো চাঁদও কেন যেন হতাশা বোধ করতে লাগল। এর কারণও অবশ্য আছে।
এখন যে লাল নীল ইলেকট্রনিক বাতি জ্বলে, যা কিনা চাঁদের আলো থেকেও অনেক বেশী প্রখর যা চাঁদের আলোকে করে দেয় মলিন। এই সকল ব্যপার গুলো তো আর চাঁদের চোখ এড়ায় না। এই সকল কারন তো আছেই আর সেই সাথে চাঁদের ও তো কিছু পার্সোনাল ব্যপার আছে তা না হয় নাই বললাম, সব কিছু মিলিয়ে চাঁদ মামা হতাশা গ্রস্থ হয়ে পুরোপুরি তার আলো বোধ করি কমাতে লাগল অথবা বোধকরি আমাদের ইলেকট্রনিক বাতি গুলোর পা্ওয়ার আস্তে আস্তে বাড়তে লাগল। যার কারনে আমরা আমাদের চর্মচক্ষু দিয়ে চাঁদকে এখন ভালো ভাবে দর্শন করতে পারছিনা। আর কখন যে চাঁদ উঠে ডুবে যায় পশ্চিমাকাশে তা তো কেউ মনে হয় বুঝতেও পারি না।
সময়ঃ অনেক অনেক দিন পর
এইভাবেই চাঁদ মামার আলো একসময় আমাদের চোখের আড়ালে চলে গেল। আর চোখের আড়াল মানে তো মনের আড়াল। মনের আড়াল মানে পুরোপুরি ভুলে যাওয়া। বেশীর ভাগ মানুষই এক সময় ভুলে যেতে লাগল জোৎস্নার সৌন্দর্য। একসময় পুরোপুরিই ভুলে গেল জোৎস্নার সৌন্দর্য।
তখন জোৎস্নাকে গৃহত্যাগী কোন সৌন্দর্যই বলা হত। কারন মানুষ তখন চাঁদকে দেখতে পেত গৃহত্যাগী কোন মানুষের মতো করেই। একজন গৃহত্যাগী মানুষ যেমন অনেক দিন পর বাসায় আসে এবং সবার কাছে বিশাল খবর হয়ে চাঁদও এই রকমই অনেক দিন পর পর আসতে লাগল সবার কাছে অনেক খুশীর খবর নিয়ে। আর এই খুশীর দিন গুলো তো জানাই।
দুই ঈদের দিন।
অনেক অনেক দিন পরও মানুষ চাঁদকে মনে রাখতে পারল, তার গৃহত্যাগী কড়া জোৎস্নার অসাধারন সৌন্দর্য মনে রাখতে পারল একমাত্র এই দুই খুশীর দিনের জন্যই।
সবাইকে অগ্রীম ঈদের শুভেচ্ছা আর লেখাটা কষ্ট করে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
পুনশ্চঃ লেখাটি কোন প্ল্যান করে তৈরী করা হয় নি। তাই লেখাটি অগোছালো মনে হতে পারে। অনেক দিন ব্লগে কোন পোষ্ট দেই না।
আজ আমার এক সহ ব্লগার বলল পোষ্ট দেয়ার জন্য আর কেন যানি কথাও দিয়ে ফেললাম, সেই কথা রাখতেই তাই এই পোষ্ট। ধন্যবাদ তাকে আমাকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য।
পুনশ্চঃ এই লেখাটি অমাবস্যার রাতকে উৎসর্গীকৃত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।