আমার সম্পর্কে কিছু বলার স্পর্ধা এখনও আমার হয়নি…. ঈদের আগে আমাদের দেশে শপিং এর নামে যা হয় তা আর বিস্তারিত বর্ননার কোন প্রয়োজন দেখি না। টিভি রিপোর্টে শপিং করতে আসা পুরুষগুলোর করুন মুখ দেখে খুব মায়া হয়। মনে হয় এদের প্রতি সহানুভুতি দেখানোর জন্যে কোন মাদার তেরেসা এই জগতে আসলোনা কেন? সিলেটে থাকার দরুন গত চার বছর আমি বাসায় গিয়েই আমার "ঈদের পোষাক" পেয়ে যাওয়ায় বাবার দিকে সমবেদনার দৃষ্টিতে একবার তাকিয়েই স্বস্তির নিঃস্বাস ফেলেছি। যারা মার্কেটে ঘুরাঘুরি করে এই সমস্যা শুধু তাদেরই না। এইটা একটা জাতীয় সমস্যা।
সারাদিন রোজা রেখে এইভাবে মার্কেটে মার্কেটে ঘোরাঘুরির ফলে আমাদের জাতীয় কর্মদক্ষতা হ্রাস পাচ্ছে। এই কর্মদক্ষতা হ্রাস পাওয়ার জন্যেই উপযুক্ত অর্থবরাদ্ধ থাকার পরেও যোগাযোগ মন্ত্রনালয় তার কাজ করতে পারছে না। শুধু তাই নয়, কোন ছুটির সকালে আপনি ভাবলেন "কোন একজনের" সাথে গল্প করবেন ফোনে। কিন্তু সে চলে গেলো ঈদের শপিং-এ। ব্যাস সারাদিনের মামলা।
অতএব মার্কেটে গিয়ে পরিশ্রম করে শপিং করা বন্ধ হোক। এটা জাতীয় দাবি। এই দাবির প্রতি সমর্থন রেখে একটা "নতুন বোতলে পুরোনো শরবত" টাইপ আইডিয়া শেয়ার করোলাম।
আমরা e-bay বা amazon এর মতো অনলাইন কেনাবেচার ব্যবস্থা দেখেছি। এটা অনেকটা এরকম।
তবে এখানে বিভিন্ন দোকান বা বুটিক হাউসের নিজস্ব ওয়েব সাইট খাকার দরকার নেই্। তাদের বরং ফেসবুকে একটা পেইজ খাকলেই চলবে। সেখানে ফোটো অ্যালবামে তাদের সব প্রোডাক্টের ছবি দেয়া থাকবে। কাস্টমার ছবি দেখে তার পোষাকটি পছন্দ করবে।
#ওই ড্রেস আমাকে মানিয়েছে কিনা কিভাবে বুঝবো?
খুব সোজা।
আপনার বাসায় একটা প্রজেক্টর খাকবে। (সেকেন্ড হ্যান্ড হলেও অসুবিদা নাই)। আপনি সেই পোষাকের ছবিটা প্রজেক্টর দিয়ে বের হলে তার সামনে গিয়ে দাড়িয়ে পড়ুন। তাহলেই বুঝবেন ড্রেসটা আপনাকে মানিয়েছে কিনা।
এই রকম সাকিব-আল-হাসানের মতো করে প্রজেক্টরের সামনে দাড়াতে হবে, তবে ওনার মত না করে হাসিখুশি মুডে থাকা ভালো
#ড্রেসের সাইজ ফিটিংস এইগুলো?
ওই একই।
ড্রেসটির সামনে দাড়িয়ে জুম ইন বা জুম আউট করে দেখেনিন আসল ইমেজের কতটুটু হলে আপনার গায়ে পোষাকটা ফিট করবে।
#ড্রেসের কাপড় যদি ভালো না হয়?
এই জন্যে একটা স্ট্যান্ডার্ড প্যারামিটার থাকবে। আমরা কতচামচ চিনি হলে সরবত কতটা মিষ্টি সেটা যেমন বুঝতে পারি তেমনি পোষাকের কাপড়ের ক্ষেত্রে তার উপাদার গুলোর অনুপাত দেয়া থাকবে। সেখান থেকে কাপড়টা কেমন, ভারী না পাতলা তা বোঝা যাবে।
#মুলামুলি?????
মুলামুলি করা আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
কোর কিছুর দাম যদি ৩০০০ টাকা লেখা থাকে তবে দাম শুরু করতে হবে ৫০০ টাকা থেকে এবং কিনতে হবে ৮০০ টাকায়। এই সংস্কৃতি বজায় থাকার জন্যে দোকানদারের সাথে চ্যাট করা যেতে পারে। দোকানদার বলবে "আফা এই জিনিষ শুধু আপনার জন্যেই ৫০০০ টাকা".......আপনি লিখবেন " না না ৮০০ টাকা পারবা, নাইলে অফলাইন হইলাম"....ব্যাস বাকি সব আগের মতোই
#দাম দিবো কিভাবে?
ক্রেডিট কার্ড ,এটিমএম কার্ড , মোবাইল ফ্ল্যাক্সিলোড যেভাবে পারেন সেভাবে। আপনি পেমেন্ট করে দেয়ার পর সে পার্সেল যোগে আপনার কাছে ড্রেসটি পাঠিয়ে দিবে।
#আমার কাছে পার্সেল আসার পর দেখলাম মাল খারাপ, আমি তো আর টাকা ফেরত পাবো না?
মামদোবাজি?? ক্রেতার অধিকার বলে একটা জিনিষ আছে না।
দেখবেন যারা অডেক্সে বা অন্যান্য যায়গায় আউট-সোর্সিং এর কাজ করে তাদের কে ক্রেতারা একটা রেটিং দেয়। তার ভিত্তিতেই তার কাজ প্রাপ্তি বাড়ে ঠিক সেইভাবেই্ আপনি তার কাছ থেকে ড্রেস পাবার পর তার রেটিং করতে পারবেন। এই রেটিং অন্যরা দেখবে। রেটিং খারাপ হলে ওর দোকান থেকে কেউ কিছুই কিনবে না। ফলে সে নিজের ব্যাবসা বাঁচাতে হলেও কোন ধরনের তেরিবেড়ি করবে না।
অতএব আমাদের উচিৎ ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এই রকম শপিং এর ব্যবস্থা করা। এতে আমাদের নিজেদেরও অনেক সুবিধা হবে। জামে ঘন্টার পর ঘন্টা কষ্ট করে বসে থাকতে হবে না। রং থেকে আড়ং এ যেতে হলে এক ট্যাব থেকে আরেক ট্যাবে গেলেই হলো। আবার অনেক সময় এমন হয় তিনতলায় একটা জামা পছন্দ হয়েছিলো এখন ঘুরতে ঘুরতে নিচে চলে এসেছেন আবার জামা কিনতে তিনতলায় যেতে হবে।
এই কষ্ট থেকেও মুক্তি। পাশাপাশি সব ট্যাব খোলা রাখুন। এক ক্লিকেই চলে যান যেকোনো ট্যাবে। মানে যেকোন দোকানে। দোকান মালিকদেরও সুবিধা্, তাদের লাখ লাখ টাকা খরচ করে বসুন্ধরায় দোকান নিতে হবে না।
কোতোযালীতে একটা গোডাউনে বসেই সে ব্যবসা করতে পারবে। তার খরচ কমলে কমবে ড্রেস এর দামও। অতএব এই ভাবেই শপিং চালু হোক, সময় বাঁচুব, খরচ বাঁচুক, জীবন বাঁচুক। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।