জীবন তুমি স্বাধীনতার জন্য। যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ, আমাকে ছুতে পারবেন পরাধীনতা ঘ্রাণ। ঘটনা-১ ঃ কম্পিউটার হোম সার্ভিস দেই বলে প্রতিদিনই কল আসলে কোন না কোন বাসা কিংবা অফিসে গিয়ে কাজ করতে হয়। কিছুদিন আগে আমার এক পরিচিত লোক ফোন দিয়ে বললেন- ভাই আমার বাসায় একটু যান, আমার মেয়ের কম্পিউটারটা কি জানি সমস্যা হয়েছে একটু দেখে আসেন। ভদ্রলোকের মেয়ে আবার ঢাকার একটি নামকরা কলেজে পড়েন।
কম্পিউটারে তার অনেক কাজ। ভদ্রলোক বেশ গর্বের সাথেই বললেন- তারা মেয়ে সারাদিন কম্পিউটার নিয়ে ব্যস্ত থাকে কলেজের বিভিন্ন এসাইমেন্ট তৈরি করে কম্পিউটারে সুতরাং দেরি করা যাবে না। তাই কল পাবার সাথে সাথেই বাসায় চলে গেলাম। কম্পিউটার পাওয়ার দিয়ে বুঝতে পারলাম, উইন্ডোজ ইনস্টল করতে হবে। উইন্ডোজ ইনস্টল করার পর বিভিন্ন ড্রাইভে ক্লিক করে তো আমি পুরো টাস্কি খেয়ে গেলাম।
কম্পিউটারে ৫টি ড্রাইভ ছিল। এমন কোন ড্রাইভ নেই, যে ড্রাইভ দেশী বিদেশী পর্নো ছবি নেই। একটি ড্রাইভে সেলফ ইমেজ নামে ফোল্ডারে প্রবেশ করে তো আমার মাথা আরো টাস্কি খেয়ে গেল। মেয়ে এগুলো করছে কি? পুরো ফোল্ডারেই তার নিজের খোলা মেলা ছবি সাথে ওয়েবক্যামে ধারণকৃত ভিডিও আছে। আমার নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না, একটা মেয়ের পিসিতে এই রকম জিনিস থাকতে পারে।
আমার আর বুঝতে বাকি রইল না যে, মেয়ে তার কম্পিউটার কেন এত ব্যস্ত। অনেকক্ষণ চিন্তা করলাম আমি এই ছবি এবং ভিডিওগুলো কি করতে পারি। একবার চিন্তা করলাম মেয়েটিকে না বলেই সবগুলো ড্রাইভ ফরম্যাট দিয়ে দেবো। কিন্তু মনে মনে চিন্তা করলাম- না বলে যদি ফরম্যাট দিয়ে দেই তাহলে মেয়ে যদি আবার কোনো এ্যাকশনে যায়- ফোন করে যদি তার বাবাকে বলে তুমি কি ইঞ্জিনিয়ার পাঠাইছো- সে আমার কম্পিউটারের সব গুরুত্বপূর্ন ডাটা মুছে ফেলে দিয়েছে? এখন আমি কাজ করবো কিভাবে? তাহলে তো টাকার টাকাও পাবো না- বোনাস হিসেবে কপালে চরম অপমানও জুটতে পারে। এত কিছু চিন্তা করতে করতে হঠাত আমাদের দেশের ডাক্তারদের কথা মনে পড়ল, নিজেদের ভূল অপারেশনে রোগী মারা গেলে যেমন ডাক্তার নির্দোষ থাকে, অপারেশন করতে গিয়ে রোগী মারা গেছে, তাতে ডাক্তারের কি করার আছে।
তাছাড়া অপারেশনের আগেই তো সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে নেয় যে, অপারেশন করতে গিয়ে যদি কোনো কারণে রোগী মারা যায়, তাহলে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিতসক কোনোক্রমেই দায়ী নয়। তাই আমার মাথায় যেহেতু ভূত চাপছে যে, যে করেই হোক কম্পিউটার থেকে এগুলো ডিলিট করতে হবে। তাই অনুমতির জন্য মেয়ের বাবাকে অফিসে ফোন দিলাম। বস, আপনার মেয়ের কম্পিউটারের প্রতিটি ড্রাইভে ভাইরাসে ভরা। তাই কম্পিউটারে পুরনো কোনো ফাইলই রাখা যাবেনা।
সব ড্রাইভ ফরম্যাট করতে হবে। তা না হলে কম্পিউটার ঠিক করা যাবে না। আমার ফোনের সময় মেয়েটি আমার পাশেই দাড়িয়ে ছিল- বলল না না কোনো কিছুই ডিলিট করা যাবে না। আমার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল আছে কম্পিউটারে। পরে এগুলো আমি কালেকশন করতে পারবো না।
বললাম বুঝতে পারছি আপনার কম্পিউটারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল আছে। কম্পিউটারে যে পরিমান ভাইরাস আছে, সেগুলো ডিলিট না করলে আমার কিছু করার নেই, উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য আরেকটু বাড়িয়ে বললাম ভাইরাস ডিলিট না করলে কম্পিউটার যেকোন সময় ক্রাশ করতে পারে। এখন চিন্তা করেন কি করবেন। কম্পিউটার ফ্রেশ করবেন নাকি- হার্ডডিস্ক ক্র্যাশ করার সুযোগ দিবেন। মেয়ের সাথে কথা বলার সময় মোবাইলে মেয়েটির বাবাও সব শুনছিলেন- বললে আপনে ওর কোনো কথা শুনবেন না।
যেভাবে ভালো হয় সেভাবেই কম্পিউটার ঠিক করে দিয়ে আসেন। মনে মনে ভরসা পেলাম- যাক বাবা এবার রোগী মারা গেলেও আমার কোনো দোষ থাকবেনা। ঠিক আছে বস, বলে ফোনের লাইন কেটে দিয়ে মেয়েকে বললাম শুনলেন তো আপনার বাবা বলেছেন যেভাবেই হোক কম্পিউটার ঠিক করে দিয়ে যাবার জন্য, এখন ডিসিশন আপনার। আমাকে বলেন কি করবো। মেয়েটি যেনো রাজ্যের হতাশা ব্যক্ত করে বলল, ঠিক আছে একটু অপেক্ষা করেন- আমি আমার ফ্যারেন্ট এর কাছে জেনে নেই তার কাছে ডাটা গুলো আছে কিনা যদি থাকে- তাহলে ফরম্যাট দিতে পারবেন বলে মেয়েটি ভেতরের রুমে গিয়ে মোবাইলে ফিসফিস করে কি যেন আলাপ করে আবার ফিরে এল।
বলল আপনার যদি কোনো উপায় না থাকে তাহলে ফরম্যাট করে দেন। বলতে দেরি কিন্তু ফরম্যাট দিতে আর দেরি করলাম না। ফরম্যাট দিতে দিতে ভাবলাম একটা মিশন তো সাকসেসফুল হল- কিন্তু মেয়েটি তো আবার তার বন্ধুর কাছ থেকে পর্নো ছবিগুলো কালেকট করে আবার ব্যস্ত হয়ে যাবে কম্পিউটারে। আসার পথে মনকে শান্তনা দিলাম- ব্যাটা তুমি আদার বেপারী জাহাজের খবর রেখে লাভ কি? তুমি কয়জনের কম্পিউটার ফরম্যাট দিবা? সে যদি তার নিজের গুদমারা নিজে খায়, তাহলে তোমার চুলকায় কেনো? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।