আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

২০তম বর্ষে বর্তমানে নাটোরের সবচেয়ে পুরাতন সংবাদপত্র

>>>বৈশাখের ঐ রুদ্র ঝড়ে আকাশ যখন ভেঙ্গে পড়ে, ছেঁড়া পাল আরও ছিঁড়ে যায়...<<< ( ফেসবুকে “সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা”র ফ্যান পেইজে যোগ দিতে চাইলে এই লেখায় ক্লিক করুন ) আমাদের এই বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন, প্রতি সপ্তাহে, ১৫ দিন পর পর, প্রতি মাসে, ছয় মাস পর পর, ১ বছর পর পর অথবা আরো ভিন্ন ভিন্ন বিরতিতে অসংখ্য সংবাদপত্র প্রকাশ হয়ে আসছে। ঠিক তেমনি বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এক জেলা শহর নাটোর থেকে সেই ১৯৯২ সালের ১৮ আগস্ট থেকে "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা" বিরতিহীন ভাবে নিরপেক্ষ সংবাদ প্রকাশ করে আসছে। জীবনানন্দ দাশ 'বনলতা সেন' কবিতার মাধ্যমে নাটোরকে যেমন পরিচিত করেছেন এবং এখনও করছেন, ঠিক তেমনি ভাবে নাটোরকে ১৯৯২ সালের ১৮ আগস্ট থেকে "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা" বিরতিহীন ভাবে, নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে তুলে ধরে আসছে সবার মাঝে। বর্তমানে নাটোর থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্র সমূহের মধ্যে সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা সবার চেয়ে পুরোনো। বিভিন্ন চড়াই-উৎরাই, বাঁধা ও প্রতিবন্ধকতার পাহাড় মাড়িয়ে মহতি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে স্থির রেখে, পথচলার সুদীর্ঘ পথ পরিক্রমায় উত্তর উত্তর অবদান অব্যাহত রেখে "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা" প্রকাশনার জগতে সাফল্যের সাথে ২০ বছরে পদার্পণ করেছে।

"সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা"-র জন্ম ১৯৯২ সালের ১৮ই আগস্ট অতি সাধারণ ঘরোয়া পরিবেশে অথচ অনেক স্বপ্ন ও আশা নিয়ে। "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা"-র প্রতিষ্ঠাতা বেগম ফজিলা নজরুল। "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা" নামটির সঙ্গে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে হয় পত্রিকাটির নেপথ্য রূপকার, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সমাজ সেবক, সমাজ সেবায় স্বর্ণ পদক প্রাপ্ত, সাহিত্য সংগঠক, জাতীয় সমবায় নেতা, মানুষ তথা লেখক ও সাংবাদিক গড়ার বর্ষিয়ান কারিগর, পত্রিকাটির বর্তমান সম্পাদক আলহাজ্ব প্রফেসর এ, কে, এম, নজরুল ইসলাম-এর নাম। যিনি শ্রম দিয়ে, মেধা দিয়ে, আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সাপ্তাহিক নাটোর বার্তার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছেন। যাঁর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অনুপ্রেরণা, সিদ্ধান্ত ও সর্বোপরি "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা"-র প্রতি সন্তানতুল্য যে ভালোবাসা তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।

তিনি ইতিমধেই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে সমাজ সেবায় স্বর্ণ পদকসহ পেয়েছেন বিভিন্ন সম্মাননা। কখনো সাহিত্যে অবদানের জন্য আবার কখনো বা শিল্প, সংস্কৃতি, শিক্ষা প্রভৃতিতে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ভূষিত হয়েছেন দেশ-বিদেশের বিশেষ পদক ও সম্মাননায়। "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা"-র প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে এ পর্যন্ত বড় পরিবর্তন এসেছে দু'বার। বর্তমান সম্পাদক প্রফেসর এ, কে, এম, নজরুল ইসলাম-এর পূর্ব পর্যন্ত প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে অত্যনত্দ নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সাথে সম্পাদক হিসেবে ছিলেন আলহাজ্ব অধ্যাপক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। আর বদলে গেছে বার্তা সম্পাদকের পদটি।

"সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা"-র প্রধান উদ্যোক্তা ও প্রথম বার্তা সম্পাদক এ, কে, এম, মাসুদ-উল-করিম মাসুদ ১৯৯৮ সালের ১৫ নভেম্বর আকস্মিক ভাবে মৃত্যু বরণ করলে বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তৎকালীন সার্কুলেশন ম্যানেজার এ, কে, এম, নাজমুল ইসলাম (মাসুম)। "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা" বাংলাদেশের ছোট্ট জেলা শহর নাটোর থেকে প্রকাশিত হলেও শুধু নাটোরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই এর পদচারণা। "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা" পৌঁছে গেছে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি জেলায়, পৌঁছে গেছে দেশের গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। শুধু বাংলাদেশে নয়, নাটোর বার্তা পৌঁছে গেছে ইরান, জাপান, চীন, জামার্নী ও আমাদের পার্শ্ববর্তী বন্ধু দেশ ভারতে। "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা" তার জন্মের পর থেকে পথ চলার সুদীর্ঘ কার্যপরিক্রমায় বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান অব্যাহত রেখেছে।

জাতীয় সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি গুরুত্ববহ স্থানীয় সংবাদ গুলো যথাযথ গুরুত্বের সাথে পরিবেশন করে স্থানীয় সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সংস্থাকে তাদের নিজ নিজ কর্মকান্ড অব্যাহত রাখতে উৎসাহিত করেছে। সরকারী আদেশ, নির্দেশ, সরকারী-বেসরকারী বিজ্ঞাপন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের খবরা-খবর, সংবাদ প্রতিবেদন নিয়মিত প্রকাশ করা ছাড়াও স্থানীয় অবহেলিত জনপদের জনগণকে উৎসাহিত, অনুপ্রাণিত, উপকৃত ও শিক্ষা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা"। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংবাদ ও শিক্ষা মূলক প্রতিবেদন প্রকাশ ও দিক নির্দেশনার মাধ্যমে শিক্ষার জাগরণ অব্যাহত রাখছে "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা"। সমাজ সেবার ক্ষেত্রেও পত্রিকাটির অবদান অবিস্মরণীয়। বিভিন্ন ধরণের সামাজ কল্যাণ মূলক সংবাদ পরিবেশন করে পত্রিকাটি একদিকে যেমন স্থানীয় সমাজ কল্যাণ প্রতিষ্ঠান গুলোকে তাদের সমাজ কল্যাণ কর্মতৎপরতা অব্যাহত রাখতে সাহায্য করছে অন্যদিকে পত্রিকার পক্ষ থেকেও বিভিন্ন সমাজ কল্যাণ মূলক কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণ করে সমাজ সেবায় অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে।

সাহিত্য, সাংস্কৃতি ও ক্রীড়া উন্নয়নে "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা"-র অবদান দৃষ্টান্তমূলক, অনুসরণীয় ও বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সব ধরণের লেখক, পাঠক, সাহিত্যিক তথা সাহিত্যের যে কোন ধরণের সৃজনশীল সাহিত্যকর্ম প্রকাশের জন্য "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা"-র রয়েছে 'নাটোর বার্তা মাসুদ স্মৃতি সাহিত্য আসর' নামে একটি সম্পূর্ণ সাহিত্য পাতা। এ ছাড়া জানা অজানা, এ সপ্তাহের হাসি, আমার আঁকা ছবি, কার্টুন রঙ্গ, শব্দ জট, ভ্রমণ কাহিনী, চিঠি পত্র, কলম বন্ধু, প্রাপ্তি স্বীকার সহ বিভিন্ন নতুন নতুন বিষয়ে লেখা ও মন্তব্য নিয়মিত ছাপা হয়ে থাকে। সাহিত্য পাতায় দেশ-বিদেশের লেখক-লেখিকারা নিয়মিত গল্প, কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ ইত্যাদি লিখে থাকেন। বলতে গেলে "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা" লেখক তৈরির পাঠশালা।

নতুন নতুন লেখকরা এখানে লেখা প্রকাশের সুযোগ পেয়ে নিজেদের লেখার উন্নয়ন ঘটিয়ে প্রতিষ্ঠিত লেখক হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা" নিয়মিত সাহিত্য পাতা প্রকাশের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতীয় দিবসে সাহিত্য মূলক স্মারক সংখ্যা নিয়মিত ভাবে প্রকাশ করে থাকে। "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা" সাহিত্য মূলক লেখা প্রকাশের পাশাপাশি লেখক তৈরীর উপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে। 'মাসুদ স্মৃতি সাহিত্য আসর' নামে নিয়মিত/অনিয়মিত ভাবে সাহিত্য অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। সাহিত্য আসরে নতুন নতুন লেখকরা তাদের স্ব স্ব লেখা পাঠ করে থাকেন।

প্রবীন লেখকরা তাদের লেখার উপর আলোচনা করে ভাল লেখার দিক নির্দেশনা দেন। লেখকদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য পুরস্কারও প্রদান করে থাকে "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা"। "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা" ২০১০ সালের ২৪ এপ্রিল অর্ধ বঙ্গেশ্বরী রাণী ভবানী'র নাটোর রাজবাড়ীস্থ আনন্দ ভবনে (যেখানে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একদা সাহিত্য সম্মেলনে পদার্পণ করেছিলেন) "সাংবাদিক মাসুদ স্মৃতি লেখক সম্মেলন ও গুণীজন সংবর্ধনা-২০১০" এর আয়োজন করে। যেখানে দেশ-বিদেশে অসংখ্য কবি-সাহিত্যিকের আগমন ঘটে এবং তাঁদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্ব স্ব অবদানের জন্য সম্মাননা ও পদক প্রদান করা হয়। লেখক, শিল্পী সৃষ্টির পাশাপাশি "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা" সাংবাদিক সৃষ্টিতেও উল্লেখযোগ্য অবদান অব্যাহত রেখেছে।

স্কুল, কলেজ তথা বিভিন্ন তরম্নণ বয়সের ছেলে-মেয়েরা সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা'য় হাতে কলমে নতুন তথা শিক্ষানবীশ সাংবাদিক হিসাবে কাজ করার সহযোগিতা পায়। এখানে হাতে কলমে সাংবাদিকতা কাজ শিখে অনেক তরুণ, যুবক প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিক হচ্ছেন। নতুন নতুন লেখক ও সাংবাদিক সৃষ্টির অবদানের প্রেক্ষিতে সাপ্তাহিক নাটোর বার্তাকে সাংবাদিক তৈরীর কারখানা বললেও নিশ্চয় ভুল হবে না। সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা"-র সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগঃ সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা ২৭, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মার্কেট, নাটোর-৬৪০০, বাংলাদেশ। ফোনঃ +৮৮০৭৭১-৬২৬০১, +৮৮০৭৭১-৬২৫২০ মোবাইলঃ +৮৮০১৮৩০১৮৯২১৫, +৮৮০১৭১৬৪০৮৫৪১ ই-মেইলঃ আর ফেসবুকে “সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা”র ফ্যান পেইজে যোগ দিতে চাইলে এই লেখায় ক্লিক করুন যতই দিন যাচ্ছে "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা"-র বয়সও প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী বেড়েই চলেছে।

বিরতিহীন, সাফল্য গাঁথা ১৯ বছর পেরিয়ে ২০ বছরে পদার্পণের মাধ্যমে আরো দায়িত্ব বেড়ে গেল "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা"-র। পাঠক মহলেরও আশা আকাঙ্খা বেড়ে গেছে বহু গুন। আশা করছি, অতীতের মত সামনের পথেও "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা" তার পাঠক মহলের আশা পূরণ তথা আরো ভালো ভালো ও সৃজনশীল কর্মকান্ডের মাধ্যমে, "সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা"-র প্রতি পাঠক মহলের যে ভালোবাসা আছে সেই ভালোবাসাটাকে আরো বহু গুণ বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম হবে। শুভ কামনা রইলো সাপ্তাহিক নাটোর বার্তার ভবিষ্যৎ দিন গুলোর জন্য। ( ফেসবুকে “সাপ্তাহিক নাটোর বার্তা”র ফ্যান পেইজে যোগ দিতে চাইলে এই লেখায় ক্লিক করুন )  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.