পেট্রটিজম বা দেশপ্রেম নিয়ে অনেকে অনেক রকম উক্তি দিয়েছেন তার মধ্যে আবার কিছু কালজয়ী উক্তিও আছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে লন্ডনে ১৭৭৫ এর ৭ এপ্রিলের সন্ধায় ইংরেজ লেখক, সমালোচক ও কবি ড. স্যামুয়েল জনসন (১৭০৯-১৭৮৪) তার সুবিখ্যাত বই “ডিকশনারি অফ দি ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ” পেট্রটিজমের ডেফিনেশন দিতে গিয়ে বলেছেন, “patriotism is the last refuge of a scoundrel” বাংলায় এর মানে হচ্ছে “দেশপ্রেম প্রদর্শন বা প্রচার করা হচ্ছে একজন দুর্বৃত্তের শেষ আশ্রয়স্থল বা ভরসাস্থল”।
.
আমেরিকান প্রাবন্ধিক জেমস লিরয় এক বক্তৃতায় বলেছেন যে, “বক্তৃতাবাগীশ রাজনৈতিক নেতারা যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের বদলে স্বদেশপ্রেমের প্রতি আনুগত্য দেখানোর জন্য জনসাধারণকে আবেগ তাড়িত করে খেপিয়ে দেন। এ ধরনের নেতারা জনসাধারণের সমর্থন পাওয়া এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা ধরে রাখার আশায় যা খুশি তাই বলতে পারেন। কোনো ব্যক্তি যদি এই ধরণের নেতার সাথে একমত না হন তাহলে সেই নেতার ভিন্নমত পোষনকারী ব্যক্তিটিকে দেশপ্রেম, দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও দেশে বিরোধী রুপে আখ্যায়িত করতে পারেন।
সৎ মনে ভিন্নমত পোষন করলেও সেই ব্যক্তির চরিত্র হনন করা হতে পারে। এই ধরণের নেতা যখন দেশপ্রেম প্রচার করেন তখন তার আসল মতলব থাকে জনসাধারণের সরল অনুভূতিগুলোকে নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য ব্যবহার করা”।
.
নোবেল বিজয়ী ইংরেজ দার্শনিক বারট্রান্ড রাসেল বলেন “ খুব তুচ্ছ কারণে হত্যা করতে এবং নিহিত হতে রাজি হওয়াই হচ্ছে দেশপ্রেম”।
.
আমেরিকান দার্শনিক রালফ বি পারি বলেন, “ যদি দেশপ্রেম হয় একজন দুর্বৃত্তের শেষ আশ্রয়স্থল তবে সেটা শুধু দেশপ্রেমের নামে খারাপ কাজ করার জন্যই সে সেটা প্রচার করে না। সে দেশপ্রেমের তীব্র আবেগ সৃষ্টি করে নৈতিকতার সকল সীমারেখা নিশ্চিহ্য করার লক্ষেও দেশপ্রেমের কথা বলতে পারে”।
.
ইংরেজ বিখ্যাত নাট্যকার বার্নড শ বলেন “দেশপ্রেম হচ্ছে চরম বুদ্ধিহীনতার একটি বিধ্বংডসী ও বিকারগ্রস্ত রুপ”।
.
ইংরেজ বিখ্যাত নাট্যকার অসকার ওয়াইল্ড আরো সোজাসাপ্টা ভাবে বলেন, “দেশপ্রেম হচ্ছে দুষ্টের গুন”।
.
আমেরিকার স্যাটায়ার লেখক অ্যামব্রোস বিয়াস অতি বিনয়ের সঙ্গে বলেন, “যদিও আমি ড. স্যামুয়েল জনসন মত পন্ডিত নই তবুও আমার মনে হয় তিনি একটা ভুল করেছিলেন। দেশপ্রেম প্রদর্শন বা প্রচার করা হচ্ছে একজন দুর্বৃত্তের শেষ আশ্রয়স্থল বা ভরসাস্থল নয়, এটি হচ্ছে তার প্রথম আশ্রয় বা ভরসাস্থল”।
[উপরোক্ত তথ্য গুলো শফিক রেহমান সম্পাদিত ম্যগাজিন “মৌচাকে ঢিল” এর বিশেষ সংখ্যা আগষ্ট ২০১১ এর শফিক রেহমান রচিত “সংবিধান দেশপ্রেম ও ড. জনসন” নামক প্রবন্ধ পৃষ্ঠা ৮ ও ৯ থেকে নেয়া হয়েছে।
]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।