আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার ফেইল বেলা, পরীক্ষার যত ফেইল গুলো!!!

রাজাকার মুক্ত বাংলাদেশ চাই ঘটনাকাল আশির দশকের শেষ ভাগে। যদিও চট্টগ্রাম শহরে থাকতাম, কিন্তু আমার পড়ালেখা শুরু একেবারে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। বাংলা, ইংরেজী, পরিবেশ পরিচিত সমাজ, বিজ্ঞান, আর ধর্ম। এই কয়টা বিষয়ই পড়েছিলাম পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত। গ্রামার কি জিনিস সেটা জানতাম না।

পঞ্চম শ্রেণীতে উঠে সর্বোচ্চ ইংরেজী জ্ঞান ছিলো The Cow নিয়ে ১০টা বাক্য রচনা করা পর্যন্ত। প্রাইভেট কোচিং টোচিং কিছু ছিলো না, যদিও শহরে থাকতাম। এর মধ্যেই জীবনের প্রথম ফেইল করে বসে ক্লাশ ফোরে থাকাকালীন অংকে। ২৭ পেয়েছিলাম। ইংরেজীতে বরাবরই কাচা, কিন্তু ফেইল করেছিলাম অংকে।

হাই স্কুলে ভর্তি হলাম একটা সাধারণ মানের বেসরকারী স্কুলেই। এর পরে ২য় ফেইল করলাম ইংরেজীতে যখন আমি ৭ম শ্রেণীতে পড়তাম। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটা বিশেষ প্রজেক্টে কিছু কিছু বিদ্যালয়ে নতুন একটা টেক্সট বুক সাপ্লাই করেছিল। এক স্যার ঐ বই পড়াতো, কিছুই বুঝতাম না, ফলাফল স্বরূপ প্রথম সাময়িক পরীক্ষাতে ২৩ পেয়েছিলাম। সপ্তম শ্রেণীতেই ইংরেজী ২য় পত্র।

স্যার ক্লাশে আসলো, খাতা দেখালো। পেয়েছিলাম ২৯, (৩৩ এ পাশ)। স্যার বললো, সবাই খাতা যোগ করে দেখো, কারো ভুল থাকলে স্যার ঠিক করে দিবে। দেখা গেলো, অনেকেরই যোগ এ ভুল আছে, সবাই স্যারের কাছে যাচ্ছে খাতা নিয়ে। শেষে স্যার বিরক্ত হয়ে ছেলেরা যে যা বলছে, সেটাই বসিয়ে দিচ্ছিলো ফাইনাল শীটে।

আমি ভাবলাম, সুযোগটা হাত ছাড়া করা ঠিক হবে না। তাই আমি ও বললাম, স্যার আমার ৩৩ হবে, দিয়েছেন ২৯। অতঃপর, আমি পাশ করলাম ঐ বিষয়ে। এবং এই অভাগা কপাল গুণে অষ্টম শ্রেণীতে সাধারণ বৃত্তি পেয়ে গিয়েছিলাম। আর ঐ বার স্কুলে শুধু আমি একাই পেয়েছিলাম।

অনেকে বৃত্তির জন্য স্পেশাল কোচিং করেছিল, আমি সেটাও করি নাই। স্কুলের স্যার রা হতভাগ, বাসায় বললাম, আমি বৃত্তি পেয়েছি, কিন্তু আমার বাসার কেউ বিশ্বাস করলো না, কারণ আমার মতো কম পড়ুয়া ছেলের পক্ষে বৃত্তি পাওয়া সম্ভব নয়। পরদিন বড়ভাই স্কুলে গিয়ে খোজ করলো, ঘটনা ঠিক কিনা? তারপরে বিশ্বাস করলো। এর পরেও ফেইল করেছি, নবম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষাতে। ইংরেজীতে ১৫ তে পাশ (৫০ এ রিটেন হতো,), আমি পেয়েছিলাম ১৪।

খাতা দেখেছিলো হেডস্যার, উনি দয়াপরবশ হয়ে ১ নাম্বার দেন নাই। তবে দশম শ্রেণীতে এলাউ করেছিল। তবে সবচেয়ে লজ্জার ছিলো, সমাপনী পরীক্ষার ফল ঘোষনা করা হতো মাঠে, পুরো স্কুলের সব ছাত্র শিক্ষক দাড়িয়ে থাকতো। আর এর মধ্যেই হেডস্যার ঘোষণা করলো, আমাদের একমাত্র বৃত্তি পাওয়া ছেলে ইংরেজীতে ফেইল করেছে। কি লজ্জ্বা এর পর কলেজের প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় অংকে টেনে টেনে ৩৩ পেয়ছিলাম, টেস্ট পরীক্ষায় ফিজিক্সে ৩৪।

এর পর আল্লাহর রহমতে আর ফেল করি নাই। এইবার লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে বলে ফেলুন তো, আপনারা কে কয় বার ফেইল করেছেন?  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.