রুদ্ধদারে চেতনা বন্দি, স্বপ্নে শকুনীর ডানার গাঢ় অন্ধকারের সর্বগ্রাসী বেগবাণ স্রোতে দিশেহার দীপ্ত জোনাকির আলোর মিছিল! কুটীল দেবতার বর্বর চাল। অশুভশক্তির ক্রমশ হবে উত্থান। আমি অভিমন্ব, জন্ম থেকে জেনে আসা ভবিষ্যৎ এর নির্মম দ্রষ্টা, আমি সিসিফাস, দেবতার বিরুদ্
"ফেইল কইরা এতো ভাব কিতা এর ?"
পিছন থেকে এই প্রশ্ন করা অমানুষ গুলারে আমি এখনো খুঁজি, তারা আর সামনে এসে দাঁড়ায়না ।
কী বিধ্বস্ত- বিপর্যস্ত সময় পার করেছিলাম, আমি খুব মনে করতে পারি, চারপাশের মানুষ কত
সহজেই অমানুষ হয়ে যেতে পারে আমি হৃদয় দিয়ে অনুভব করেছিলাম,
আমি অসহায় বিপন্ন ভঙ্গুর প্রাণহীন শ্যাওলায় পরিণত হয়েছিলাম , আমি খুব মনে করতে পারি।
এক নাগারে ঘন্টার পর ঘন্টা যে কথা বলে যেতে পারতো যেকোনো বিষয়ে সে কথা বলতে ভুলে গিয়েছিলো আমি খুব মনে করতে পারি।
একটা ফেইল কিভাবে জীবন দুঃবিসহ করে তুলে তা নিজের জীবনে খুব ভালো করেই উপলব্ধি করেছিলাম নির্মম ভাবে।
ভাইয়া-আপু-আব্বা-আম্মা সবার জীবন বেশ লজ্জার হয়ে উঠেছিলো চারপাশের মানুষের জন্য।
আমার মনে আছে আম্মা বাসা থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন আমার মতই ,কেউ যদি ভুল কেরে জিজ্ঞেস করে ফেলে , আমি কি করেছি ? এই লজ্জায় এই ভয়ে । আর মানুষ ভুলে যায় না খুঁড়ে খুঁড়ে আঘাত করতে তারা স্বিদ্ধ।
যেদিন রেজাল্ট বেরিয়েছিলো, আমি রাত দশটা ফিরেছিলাম, সবাই অনবরত ফোন দিয়ে যাচ্ছিলো আমি ফোন ধরি না,
আমি হাটতে পারছিলাম না , আমি খুব মনে করতে পারি।
বাসায় ফিরেই বলেছিলাম, কান্না-কাটি কইরো না আগামিতে ভালো করবো, বলে নিজেই হাউমাউ করে কান্না শুরু করেছিলাম, সাথে আম্মা আব্বা।
ভাইয়া বলেছিলো, ধূর ফেইল তেমন কিছুনা ।
বাসায় কারো কোনো সমস্যা ছিলো না ফেইল নিয়ে , কিন্তু চারপাশের মানুষের বিরাট সমস্যা ছিলো।
ভাইয়া রাত দিন বুঝাচ্ছে , ফেইল যে কেউ করতেই পারে , একসিডেন্ট হতেই পারে কান্না-কাটী করার কি আছে বন্ধ কর, আর এক্সট্রা বই পড়া আপাতত বাদ দে , যারা খারাপ আচরন করতেছে , তাদের প্রত্যেকটা আচরণ ফিরাই দিবে, ভালো করে পড়,
।
এক বছর কোনো গল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধ কিছুই পড়ি নি, আমি পাঠ্য বই ও পড়ি নি, দিন-রাত বাসায় বাতি নিভিয়ে শুইয়ে থাকতাম, শব্দহীন ভাবে বাশিল কেবল ভিজে যেতো, আমি খুব মনে করতে পারি।
আবেগি যুক্তি দিয়ে আত্মহত্যার সমীকরণ মিলিয়েছিলাম কেবল।
ভাইয়ার কাউন্সিলিং এ সুস্থ হয়ে উঠে ছিলাম, এন্ড আই টুক এ ফার্ম ডিটারমিনেশন টু রিটার্ন অল বিহেভিয়ার ।
পড়া শুরু করে দিলাম, পাশ করলাম, যা দিয়ে গুটিকয় ভার্সিটিতে পরীক্ষা দেয়া যায়,
আমার ব্যক্তি নিজের ভার্সিটিতে পড়ার দরকার ছিলো না, দরকার ছিলো, বাসার, দরকার ছিলো অমানুষদের অবজ্ঞার প্রাসাদ গুড়িয়ে দেবার জন্য।
ফেইল করারও পরেও আমার উপরে ভাইয়াদের আত্মবিশ্বাস কমে নাই, বারবার বলছে , তুই চান্স পাইবে , ।
আমিও বাসায় ঘোষণা দিয়ে বসলাম, এই বছর একজন যদি ভার্সিটিতে নেয় সেটা হবো আমি।
যেদিন প্রথম ফোন করে জানালাম, ভাইয়া আমিতো চান্স পাইছি, আমি দেখেছিলাম, তারা কেমন শিশুমত আনন্দিত হয়েছিলো,।
চান্স পেয়েও আমি হাসিনি হাউমাউ করেই কেঁদেছিলাম, আমারে আর কেউ কিছু বলতে পারবো না, আমারে আর তিক্ত চাহনি সহ্য করতে হবে না ।
এক ছোট ভাই এসে জিজ্ঞেস করলো, ভাই তুমি নাকি চান্স পাইছো? হুম।
মিষ্টি খাওয়াও। আমি বলে ছিলাম, আমি চান্স পাইলে খাওয়াই না , ফেল করলে খাওয়াই।
এইটা ছিলো তীরন্দাজের নিক্ষিপ্ত প্রথম তীর, তারপর থেকে ভায়াবহ সব তীর এই তীরন্দাজ ছূড়েছে , চারপাশ এখন খুব বেশি পরিষ্কার।
কথা গুলা বলেছি, এই কারনে , গেট ওয়েল সুন।
ডোন্ট লেট আদারস পিপল টু ফাক ইউ, অলোয়েজ ট্রাই টু ফাক, নেভার বি ফাকড!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।