আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পরোক্ষ ধূমপানঃ অভিজ্ঞতা, পরিকল্পনা এবং স্বপ্ন

চেষ্টা করে দেখি। পরোক্ষ ধূমপানকে না বলুন গ্রুপটি অনেক স্বপ্ন নিয়ে শুরু করেছি। এখানে কাজ করতে করতে অনেক অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে, অনেক সম্ভাব্য পরিকল্পনা মাথায় আসে। এই সব ঘটনা এবং চিন্তার ৬ টি পরিস্থিতি নিয়েই এই লিখা। অভিজ্ঞতা অভিজ্ঞতা-১ (ইউনিভার্সিটিতে): আমিঃ কি ব্যাপার,এতক্ষন ধরে সামনে বসে ধোঁয়া খাওয়াচ্ছেন কেন? স্মোকারঃ আমি তো এক সাইডে, আপনার নাকে ধোঁয়া গেলো কেমনে? আমিঃ প্রশ্নটা তো আমি করবো।

আপনি সি এন জি তে উঠলেন ৫ মিনিটের জন্য, অন্য মানুষ আছে সেটা ভাবার দরকার মনে হলো না। স্মোকারঃ অহেতুক ঝামেলা করছেন কেন? আমিঃ অহেতুক মানে? আপনি কি এখানকার স্টুডেন্ট? কোন বিভাগে, কোন ইয়ারে পড়েন? স্মোকারঃ পরিসংখ্যান ৪/১। তো কি হয়েছে? আমিঃ আমি এখানকার সি.এস.ই বিভাগের টিচার। আমি খোঁজ নিতে চাই, আচার আচরন না শিখে কিভাবে তোমরা অনার্স ৪র্থ বর্ষে উঠে পড়। অভিজ্ঞতা-২(রিক্সায়): আমিঃ এই, থামেন থামেন।

(রিক্সাওয়ালা রিক্সা থামায়। ) রিক্সাওয়ালাঃ আপনি নেমে যাবেন? আমিঃ আমি নামব মানে? আপনি নামবেন। নেমে সিগারেট শেষ করে তারপর উঠবেন। (রিক্সাওয়ালা নেমে সিগারেট শেষ করে তারপর আবার চালাতে শুরু করে। গন্তব্যে পৌঁছে নামার পর ১০ টাকা ভাড়া দেই।

) রিক্সাওয়ালাঃ এই গরমে ২টা টাকা বাড়ায়ে দেন। আমিঃ আপনাদের তো ইস্যুর অভাব নেই। গরম, রোজা, বৃষ্টি, ঈদ, রাত এরকম আরো কত কিছু। এত ইস্যু দেখিয়ে টাকা নিয়ে কি যে করেন একটু আগেই তো দেখলাম। আমাকে যে এতগুলো ধোঁয়া দিলেন,আপনার গায়ের সিগারেটের গন্ধে যে আমার বমি আসছিলো সেটার জরিমানা নেওয়া দরকার।

২ টাকা ফেরত দেন। পরিকল্পনা পরিকল্পনা - ১: আমিঃ সিগারেট খেয়ে কী পরিমান ক্ষতি করছেন আপনি জানেন? স্মোকারঃ আমার পয়সায় আমি সিগারেট খাই, তাতে আপনার কি? আমিঃ কার পয়সা খরচ হচ্ছে সেটা তো ইস্যু না, সিগারেটটা এখানে ইস্যু। স্মোকারঃ সিগারেট খাওয়া আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার, আপনি জোর করার কে? আমিঃ ঠিক বলেছেন, আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপারে আমার জোর করা ঠিক না। তবে ব্যাপারটা যেন ব্যক্তিগতই থাকে। স্মোকারঃ তার মানে কি? আমিঃ আপনার সিগারেটের ধোঁয়া যদি অন্য কারো নাকে যায় তাহলে আমাদের জোর করার ব্যাপার আছে।

চেষ্টা করে দেখতে পারেন। পরিকল্পনা -২: আমিঃ কি ব্যাপার ভাই, সিগারেটের ধোঁয়া দিচ্ছেন কেন? স্মোকারঃ আপনার প্রবলেম হলে আপনি দূরে সরে গেলেই পারেন। আমিঃ আজবতো! খাবেন আপনি, আর দূরে সরে যাব আমি? স্মোকারঃ খাচ্ছি আমি, কিন্তু আমার তো কোন প্রবলেম হচ্ছে না, যার প্রবলেম হচ্ছে সে সরে গেলেই তো হয়। আমিঃ আরে মিয়া, ফাজলামো পাইছেন? পাবলিক প্লেসে দাঁড়াইয়া সিগারেট টানছেন, আর বলেন যাদের প্রবলেম তারা সরে যেতে! স্মোকারঃ হ্যা বলছি, অনেক ভদ্রভাবে বলছি। তুই জানস আমি কে? আমি অমুক দলের তমুক লিডার।

আমার মামা তমুক এমপি, আমার চাচা বাংলাদেশ কাউয়া দলের সভাপতি .........। আমি এইখানে তোর সামনে বসে সিগারেট খামু, তোর মুখের উপর ধোঁয়া ছারমু, কি করবি কর দেখি। (ঝগড়া শুনে পরোক্ষ ধুমপানের ব্যাপারে বেশ কিছু সচেতন মানুষ জড়ো হয়। ) একজনঃ কি হয়েছে? ২য়জনঃ এই লোক মনে হচ্ছে ব্যাপক ক্ষমতা হাতে নিয়ে সিগারেট খাচ্ছেন। ৩য়জনঃ মাথায় ব্যাপক বুদ্ধিও নিয়েও চলছেন মনে হচ্ছে।

(স্মোকার হঠাৎ টের পায় যে তার গনপিটুনি খাওয়ার ভাল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ) স্মোকারঃ না ভায়েরা, কিছু হয় নাই। কেউ আশেপাশে ছিল না বলে সিগারেট ধরিয়েছিলাম। এখন মানুষজন দেখেই ফেলে দিচ্ছিলাম। (বলে সে সিগারেটটা ফেলে দেয়) স্বপ্ন স্বপ্ন - ১: আমিঃ এই যে ভাই, আপনার হাতে মনে হয় সিগারেট দেখা যাচ্ছে, ঘটনা কি? স্মোকারঃ না ভাই, কিছু না।

আমিঃ তাহলে হাতে সিগারেট, লাইটার নিয়ে ঘুরছেন কেন? স্মোকারঃ জ্বী, হাতে রয়ে গেছে আর কি। সকাল থেকে ৫ বার স্মোকিং রুমে গিয়েছি, সিরিয়াল পাচ্ছি না। আমিঃ তো আপনি কি এই খোলা জায়গায় সিগারেট খাওয়ার পরিকল্পনা করছেন নাকি? স্মোকারঃ কি যে বলেন, গত দশ বছরে ভুলেও তো কোন স্মোকার খোলা জায়গায় সিগারেট খাওয়ার কথা ভাবেনি। আমিঃ ভাল, ভাল। এই ব্যাপারে কোনভাবে কোন ভুল ভাবনা না ভাবাই ভাল।

আপনার জন্য হিতে বিপরীত হতে পারে। স্বপ্ন - ২: স্মোকারঃ হ্যাঁগো, ছেলেদের কি স্কুল থেকে আসার সময় হয়ে গেছে? স্ত্রীঃ কেন, কি হয়েছে? স্মোকারঃ নাহ, তেমন কিছু না। ছাদে যেতে ইচ্ছা করছে না, ঘরেই সিগারেটটা খেয়ে ফেলতে চেয়েছিলাম। স্ত্রীঃ তুমি কি ভেবেছ যে তোমার ছেলেরা এসে টের পাবে না? আর আমি যে একটা জ্যান্ত মানুষ ঘরে আছি, সেটা তোমার চোখে পড়ছে না। স্মোকারঃ তুমি আমার জন্য একটা দিন একটু কষ্ট করতে পার না? স্ত্রীঃ একদিনের কষ্ট হলে তো ভালই ছিল।

এখন তুমি ধোঁয়া খাওয়াবা, আর আমার মিনিমাম এক সপ্তাহ কাশি নিয়ে ভুগতে হবে। তোমার মধ্যে ছেলেদের ভয় ডর কমে গেল নাকি? স্মোকারঃ ঠিক আছে, ঠিক আছে, যাচ্ছি। স্ত্রীঃ যাও, আর ছাদের ওই জায়গায় থাকবে যাতে আশেপাশের বিল্ডিয়ের বাচ্চারা না দেখে। পরোক্ষ ধূমপান নিয়ে যথেষ্ট পরিমান সচেতন মানুষকে পাশে পেলে এই পরিকল্পনা এবং সপ্নগুলো একসময় বাস্তব হবে বলেই আশা করছি। (বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ পরিকল্পনা -২ এর আইডিয়া দিয়েছেন পরোক্ষ ধূমপানকে না বলুন গ্রুপের সদস্য কেশব চক্রবর্ত্তী।

) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.