net worker গাছগাছালি আর শস্য-শ্যামলে ভরা আমদের প্রিয় বাংলাদেশ কতো জাতের যে পাখি আছে তার হিসেব অনেক দীর্ঘ। গ্রাম-গঞ্জের অতি পরিচত পাখি ‘মাছরাঙা'। যাকে দেখতে পাওয়া যায় বিলের পাশে, পুকুর ধারে, নৌকার গলোইয়ে কিংবা ডোবা-নালার পাশে গেথে থাকা কোন খুঁটিতে। এই ছোট পাখিটা যখন কোথাও বসে থাকে তখন তাকে চিন্তা মগ্ন দেখায়।
বিজ্ঞানীরা ভেবেছেন আজ থেকে ২২০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে সংগ্রহ করা একটি নতুন মাছরাঙার আন্তর্জাতিক নাম দেয়ার সময় ইউরোপের আদি কবি সাফোর প্রেমসী ‘আত্তিদ' এর নামানুসারে মাছরাঙার বৈজ্ঞানিক নাম রাখা হয়েছে।
Olcadu Attis (অলকোড আত্তিস) এই গ্রিক নামটির অর্থ ‘মাছরাঙা আত্তিস'। বাংলাদেশের এই মাছরাঙা মূলত ছোট একটি পাখি আকারে চড়ুইয়ের চেয়ে একটু বড়। ওজন ২৫ গ্রামের মত হয়ে থাকে। কিন্তু এই পৃথিবীতে টিকে থাকার অসাধারণ ক্ষমতা আছে তার। ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে এদের দেখতে পাওয়া যায়।
অনেক প্রতিকূল পরিবেশে ও সে ভালোই টিকে যাকে। বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি গ্রামে তাকে দেখতে পাওয়া যায়। খাবার হিসেবে ব্যাঙের পোনা, মলা, ঢেলা, বিছা পোকা, কিংবা বড় কোন মাছের পোনা শিকার করতে পারলেই তার দিন চলে যায়।
এক জাতের প্রাণী কয়েক মহাদেশে ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র তার চেহারা ও কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হয়ে যায়। মাছরাঙার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
ইউরোপ, আফ্রিকা, এশিয়া, আন্দামান আর বেগম ভিলা দ্বীপের পাতি মাছরাঙার মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। চেহারা আর আকারে ছোট ছোট পার্থক্যের ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা পাতি মাছরাঙাকে সাতটি উপজাতিতে ভাগ করেছেন। আমাদের দেশে যে পাতি মাছরাঙ্গাটাকে দেখা যায় তার উপজাতীয় নাম দেয়া হয়েছে ‘অলকেডো আত্তিস বেঙ্গালেনসিস' যার অর্থ ‘বাংলার মাছরাঙ্গা আত্তিস'।
‘বেঙ্গালেনসিস' উপপ্রজাতির মাছরাঙা শুধু বাংলাদেশে নয় ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইন্দোচীন, চীন, রাশিয়া ও জাপানে আছে। এতগুলো দেশের মানুষ এই মাছরাঙাটিকে দেখে একই সঙ্গে ইউরোপের কবি সাফোর প্রেয়সী আত্তিস আর আমাদের এই শ্যামল বাংলাদেশকে স্মরণ করেন।
কারণ তার নামই যে ‘আত্তিস বেঙ্গালেনসিস'।
মাছরাঙার প্রজনন কাল সাধারণ বর্ষাকাল। এই সমযে তারা ডোবা, নালার খাড়াপাড়ে মাটিতে সুড়ঙ্গ করে বাসা তৈরি করে। মেয়ে মাছরাঙাটি বাসায় কাঁঠালের বিচির মতোই চার পাঁচটা সাদা ডিম পাড়ে। ডিম ও বাচ্চা নিরাপদ রাখার জন্য বাসা সুড়ঙ্গ করে ২-৩ফিট লম্বা আকা বাকা করে খোড়ে বাসা তৈরি করে।
যার কারণে খাটাশ, বাগডাস আর বেজির মতো বুভুক্ষু প্রাণীর নাগালের বাইরে থাকে। তবে সাপ যদি একবার হানা দিতে পারে গপাগপ ২-১টি ডিম গিলে ফেলে। ব্যাপকহারে জলাশয় ভরাট পাড় ভাঙ্গন ও অপরিকল্পিত ভূমি কাটার কারণে এই পাখির বংশ বৃদ্ধি ব্যাঘাত ঘটছে। এই পাখিটির ইংরেজি নাম-King Fisher. ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।