------ চেতনা ৭১’ :: আমার স্বপ্নের ক্যাম্পাসে ::
চেতনা ৭১
শাবি।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
আমার স্বপ্নের ক্যাম্পাস।
জীবনের সোনালী দিনগুলি আমার যেখানে কেটেছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা।
সন্ধ্যা থেকে রাত। দিন..মাস..বছর। গোল চত্তরে আড্ডা তারপর পায়ে হেটে "এক কিলো" ক্যাম্পাসের গেইটে "ক্যালিক্স ফাস্ট ফুডের" দোকানে কেটে যেত সন্ধ্যাবধি। ক্যালিক্স ফাস্ট ফুড ছিল আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে দেয়। শাবি ক্যাম্পাস গেইটে প্রথম ফাস্ট ফুড কালচারের গোড়াপওন করি আমরাই।
অনেক গুলো সাংস্কৃতিক সংগঠন ছিল আমাদের ক্যাম্পাসে। বুধবারে ক্লাস শেষে জমে উঠত প্রথম আলো বন্ধুসভার নিয়মিত আড্ডা, সাথে গরম গরম ডাল পুরী আর চা। আমরা রোভার স্কাউট করতাম। সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের মামুন স্যার ছিলেন আমাদের ইউনিট লিডার।
আমরা অনেক চেয়েছিলাম আমার স্বপ্নের ক্যাম্পাসে একটা স্বাধীনতার ভাস্কর্য হউক।
অনেক প্রতিবন্ধকতা ছিল। নামকরণ বিরোধী আন্দোলনের কারনে আমাদের জীবন তখন স্তব্ধ হয়ে যাবার পথে।
ক্যাম্পাসে সাংস্কৃতিক সংগঠন গুলোকে নাটক, নৃত্য রিহারসেল করতে দিতনা জামাতিরা।
অনেক বছর পর সেই স্বপ্নের বুনন সুদৃঢ় হলো। শাবিতে সিলেটের প্রথম ভাস্কর্য ‘চেতনা ৭১’ উদ্বোধন হলো।
৬ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে ক্যাম্পাসের এ বিল্ডিংয়ের উত্তর পার্শ্বে নির্মিত ভাস্কর্যের উদ্বোধন হয়ে গেল ৩০শে জুলাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৫/০৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্যোগে ও প্রথম ব্যাচের (১৯৯০-৯১) শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তায় ভাস্কযটি নির্মিত হয়।
নির্মিতব্য ভাস্কর্যটির নকশা করেছেন সভাপতি মোবারক হোসেন নৃপাল। আর নির্মাণ কাজে নিয়োজিত আছে তারই সংগঠন ‘নৃ’ এর স্কুল অব স্কালচার।
ভাস্কর্যটিতে বর্তমান সময়ের শিক্ষার্থীদের আদলে ব্যবহার করা হয়েছে।
পোশাক ও আনুষঙ্গিক উপকরণও বর্তমান সময়ের। মডেলে ছাত্রের হাতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উচুতে তুলে ধরার ভঙ্গিমা এবং ছাত্রীর হাতে বই, যা বাংলাদেশের সংবিধানের প্রতীক নির্দেশ করে।
খরচের চেয়ে ভাস্কর্যের সৌন্দর্যের দিকে গুরুতারোপ করা হয়েছে। একাডেমিক ভবন গুলোর সঙ্গে মিল রেখে বেদির নিচের প্লেট ৩টা বানানো হবে সিরামিক ইট দিয়ে। এর মধ্যে নিচের প্লেটটার ব্যাস হবে ১৫ ফুট, মাঝের প্লেটের ব্যাস সাড়ে ১৩ ফুট এবং উপরের প্লেট হবে ১২ ফুট।
প্রত্যেকটি আবার ১০ ইঞ্চি করে উচু হবে। প্লেট ৩ টার উপরে মুল বেদিটি হবে ৪ ফুট উচু, তার উপরে ৮ ফুট উচু ফিগার।
প্রগতিশীল শিক্ষকরা দীর্ঘ দিন ধরে ক্যাম্পাসে ভাস্কর্য নির্মাণ করার দাবী জানিয়ে আসছিল। কিন' সিলেটবাসীর ভাস্কর্য বিরোধী আন্দোলন ও বাধাঁর কারণে নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে ২১ বছর পরে হলেও ভাস্কর্য নির্মাণ হলো।
আজ খুব প্রশান্তি লাগছে। খুব ভালো লাগছে।
অবশেষে আমার স্বপ্নের ক্যাম্পাসে চেতনা ৭১ নামের মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য নির্মিত হলো।
রাজাকার নিপাত যাক::
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।