উন্মাদ বালক বইলাই কিন্তু আমি পুরা উন্মাদ না, সামান্য কয়টা তার ছিড়া... বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, স্বাধীনতার চেতনা,স্বাধীনতার চার দশক পর দেশের উন্নয়ন এবং স্বাধীন বাংলাদেশের সাথে অন্যান্য দেশের সম্পর্কসহ বেশ কিছু বিষয়ে রেডিও তেহরানের কথা বলেছেন মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টর কমান্ডার এম হামিদুল্লাহ খান বীরপ্রতিক। সেখান থেকে আমার পছন্দের কিছু আংশ তুলে ধরলামঃ
রেডিও তেহরান : স্বাধীনতার চেতনা বলে একটি কথা সব জায়গায়ই তোলা হচ্ছে। এই চেতনা বলতে একটি মহল ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধ থেকে দূরে থাকাকেই বুঝাবার চেষ্টা করে। স্বাধীনতার চেতনা বলতে আপনি কি মনে করেন ?
এম. হামিদুল্লাহ খান : দেখুন, স্বাধীনতার চেতনার প্রসঙ্গটি যখন আনলেন তখন এ সম্পর্কে আমি কি মনে করি সে কথা বলার আগে ওরা অর্থাৎ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার কি মনে করে সে সম্পর্কে একটু আলোকপাত করতে চাই। তারা মনে করে স্বাধীনতার চেতনা বলতে আমরা ভারতভুক্ত হয়ে যাই।
আর তা হলেই স্বাধীনতার চেতনা সফল। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের এমপি মোহায়মেন সাহেবের লেখা বই আছে, দিল্লি থেকে প্রকাশিত বসন্ত কুমার চ্যাটার্জীর 'The Inside Bangladesh Today' নামের বই আছে। সেখানে বাংলাদেশের অনেক তথাকথিত বুদ্ধিজীবী যারা বুদ্ধি বিক্রি করে খায়-তাদের ভাষ্যমতে, সংবিধানের ৩৭১ ধারায় একটি উপধারা সংযোজন করে বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গ করে ফেললেই তারা নিরাপদ বোধ করে। ওই বইয়ে ঠিক এভাবে লেখা আছে। তো আমরা যদি ভারতভুক্তির পক্ষে কথা বলি, ভারতের পক্ষে কথা বলি তাহলে আমরা ঠিক আছি এবং স্বাধীনতার চেতনার পক্ষে।
ভারত পানি নিয়ে যাক আর আমরা পানি অভাবে মরে যাই; তারা টিপাইমুখে বাঁধ করুক, তিস্তার পানি নিয়ে যাক, চট্টগ্রাম পোর্ট; মংলা পোর্ট তাদের হয়ে যাক- সেটাও ঠিক আছে, বিনাশুল্কে করিডোর পেয়ে গেল- তাতেও কোন অসুবিধা নেই-তবে এসবের বিরুদ্ধে গেলেই তারা স্বাধীনতা বিরোধী এবং স্বাধীনতার চেতনা বিরোধী।
দেখুন, আড়াই/তিনশ' বছর ধরে আমরা যুদ্ধ করেছি সংগ্রাম করেছি এ জন্যে নয় যে, ব্রাহ্মণ্যবাদের দিকে ঝুঁকে পড়ব, আকণ্ঠ নিমিজ্জত হব। আমরা যুদ্ধ করেছি- আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি সভ্যতা, ধর্ম-কর্ম, ঈমান আকিদা, নীতি আদর্শকে বাস্তবায়ন করব বলে। আমাদের দেশের চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা দেশের নতুন প্রজন্মকে সৎ সুস্থ ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করবে-এটাই আমাদের প্রত্যাশা ছিল। আমাদের মেয়েরা শাখা সিঁদুর ব্যবহার করবে, উলঙ্গপনা করবে এমনটি আমরা চাই না- আর এটিই হচ্ছে আমার স্বাধীনতার চেতনা।
রেডিও তেহরান : ইসলামী মূল্যবোধের পক্ষে কথা বললেই বিশিষ্ট মুক্তি যোদ্ধাকেও স্বাধীনতা বিরোধী আল বদর, রাজাকার বলা হয়। যেমন প্রভাবশালী সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিল এবং এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে সরাসরি পাকিস্তানের দোসর বলা হচ্ছে। তো এ বিষয়ে আপনি কি বলবেন ?
এম. হামিদুল্লাহ খান : দেখুন, আমরা তাদের ফাঁদে পা দিচ্ছি না, তাদের কথা শুনছি না ফলে তারা তো এ কথা বলবেই। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে -আমরা বাংলাদেশী অন্যদিকে ওরা বলছে ওরা বাঙালী, আমরা বাংলাদেশী হিসেবে আমাদের নীতি আদর্শ, সংস্কৃতি ও ধর্ম-কর্ম নিয়ে আমরা চলতে চাই। অন্যদিকে ওরা চলে ওদের মতো করে।
ওরা গোলাপ জলের বোতল ভেঙে জাহাজ উদ্বোধন করে না, ওরা হুইস্কির বোতল ভেঙে জাহাজ উদ্বোধন করে। তো আমরাও কি ওদের মত হুইস্কির বোতল ভাঙব? না, এমনটি হতে পারে না। আমি বলব তারা চৈতন্য হারিয়ে ফেলে তথাকথিত চেতনা রোগে ভুগছে। তবে এই তথাকথিত চেতনা রোগের কোনো দাম নেই। নানা কারণে আমাদের স্বাধীনতার প্রয়োজন ছিল।
আর সে কারণেই আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছি। তো সবশেষে এই চেতনাকে আমি একটি কুমতলবী শব্দ হিসেবে আখ্যায়িত করব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।