ওয়াইম্যাক্স ব্রডব্যান্ড সেবাদানকারী কিউবির বিরুদ্ধের প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রথমদিকে গ্রাহকদের ভাল সার্ভিস দিলেও গ্রাহক সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে সার্ভিসের মান কমতে থাকে বলে অভিযোগ এর ব্যবহারকারীদের।
অজের ব্রডব্যান্ড বাংলাদেশ লিঃ ২০০৯ সালে কিউবি নামে বাংলাদেশে ওয়াইম্যাক্স ব্রডব্যান্ড সেবা দেওয়া শুরু করে।
গ্রাহকরা বলছেন, ওয়াইম্যাক্স ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশন বলা হলেও গ্রাহকরা সাধারন ব্রাউজিং করা, ইমেইল করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারেন না।
তাদের অভিযোগ, বিভিন্ন মেলায় কিউবির স্টলে প্রদর্শনীতে দেখানো হয় যে কিউবির গ্রাহকেরা ইউটিউবে উচ্চগতিতে ভিডিও দেখতে পারবেন, বড় ফাইল মিনিটের মধ্যেই ডাউনলোড হয়ে যাবে।
কিন্তু সবই প্রতারণা। কিউবির গ্রাহকেরা ইউটিউবে ভিডিও দেখতে গেলে অথবা বড় কোন ফাইল ডাউনলোড করতে গেলে তাদের প্যাকেজের গতি অর্ধেকে অথবা এক-চতুর্থাংশে নামিয়ে আনা হয়, অর্থাৎ কোন গ্রাহক যদি ৫১২ কেবিপিএস প্যাকেজ ব্যবহার করেন তাহলে ইউটিউবে ভিডিও দেখা অথবা বড় ফাইল ডাউনলোড করার শাস্তি হিসাবে স্পিড ২৫৬ কেবিপিএস অথবা ১২৮ কেবিপিএস করে দেয়া হয়। কিন্তু বিলের ক্ষেত্রে কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হয় না। স্পিড কমিয়ে দেওয়ার এ পক্রিয়াকে কিউবির ভাষায় বলা হয় “ফেয়ার ইউজেস পলিসি”। এ “ফেয়ার ইউজেস পলিসি”-র ব্যাপারে কিউবি কখনো তাদের গ্রাহকদের পরিষ্কারভাবে কিছুই বলে না।
স্পিড কমিয়ে দেয়ার কারনে গ্রাহক কাস্টমার কেয়ারে ফোন করলে কাস্টমার কেয়ার এক্সিকিউটিভ গ্রাহকদের অহেতুক কথার মধ্যে আটকে রেখে, গ্রাহকদের সহ্য ক্ষমতার চরম পরীক্ষা নেন বলে অভিযোগ করেন একজন গ্রাহক। তিনি বলেন, পরবর্তীতে গ্রাহকেরা উপায় না দেখে অন্য ইন্টারনেট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের সেবা নিতে বাধ্য হন।
গ্রাহকদের আরও অভিযোগ, কিউবি প্রচার-প্রচারণায় খুব বেশি সক্রিয় থাকলেও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রদানের ক্ষেত্রে এবং গ্রাহকদের সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে তাদের সক্রিয়তা চোখে পড়ে না। কিউবি তার গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতি মাসের ৮ তারিখের মধ্যে বিল সংগ্রহ করে এবং এই “ফেয়ার ইউজেস পলিসি” ব্যবহার করে গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করা হয় মাসের ১০-১৫ তারিখের মধ্যে। যেহেতু গ্রাহক অগ্রিম বিল দিয়ে থাকে সেহেতু কিউবিও তাদের সেই টাকা ফেরত দেয় না।
কিউবি প্রায়ই তাদের গ্রাহকদের ভৌতিক (অতিরিক্ত) বিল পাঠায়। কোন গ্রাহকের বিল ১৪৩৮ টাকা হলেও ৫০০০ টাকার উর্ধে বিল পাঠানোর উদাহরণ আছে এই কোম্পানির। গ্রাহক কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিলে তাকে সেই ভৌতিক (অতিরিক্ত) বিল পরিশোধের অনুরোধ করা হয় এবং সাথে এটাও অবগত করা হয় যে ৮ তারিখের মধ্যে এই বিল না দিলে তার ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। সাথে থাকে ভৌতিক (অতিরিক্ত) বিল সঠিক করে অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস।
কিউবির ইন্টারনেট সার্ভিস থেকে তাদের কাস্টমার কেয়ারের সেবার মান আরও বাজে।
কাস্টমার কেয়ার ফোন দিলে সমস্যা সমাধানের চেয়ে গ্রাহকদের অহেতুক প্রশ্ন করে সময় নস্ট করা হয়। কিউবির নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে কোন গ্রাহক যদি ইন্টারনেট ব্যবহার না করতে পারেন তাহলেও কাস্টমার কেয়ার থেকে বলা হয় যে গ্রাহককে তার কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম পরিবর্তন করতে হবে, এন্টিভাইরাস আপডেট করতে হবে, ইত্যাদি।
কিউবির ইন্টারনেট সার্ভিস ব্যবহার করার জন্য গ্রাহককে তার বাসা পরিবর্তন করতে হবে বলেও কাস্টমার কেয়ার এক্সিকিউটিভরা উপদেশ দিয়েছেন। কাস্টমারে কেয়ারে ফোন করে কোন টেকনিক্যাল সাপোর্ট এক্সিকিউটিভ এর অনুরোধ করা হলেও সেই টেকনিক্যাল সাপোর্ট এক্সিকিউটিভ গ্রাহকের সমস্যা সমাধান করতে তার বাসায় আসেন না। আসলেও ৭ থেকে ১০ দিনে সময় লাগে।
এ সময় গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহার না করতে পারলেও বিলের ক্ষেত্রে কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হয় না। কাস্টমার কেয়ারে ফোন করলে গ্রাহকদের বলা হয় কিউবির ওয়েবসাইট থেকে সাহায্য চেয়ে অনুরোধ পাঠানোর জন্য কারন কাস্টমার কেয়ার এক্সিকিউটিভরা গ্রাহকদের সমস্যা লিখে রাখতে পারেন না। কিন্তু যে ব্যক্তি কিউবির ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করতে পারছেন না তিনি কিভাবে কিউবির ওয়েবসাইট থেকে সাহায্য চেয়ে অনুরোধ পাঠাবেনে? এমন প্রশ্নই তুলছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।
আরও অভিযোগ রয়েছে, ফেসবুকে কিউবির একটি ফ্যানপেজ এবং একটি গ্রাহকদের গ্রুপ আছে যা কিউবি কর্তৃপক্ষ নিজেই চালু করেছে। সেখানে কোন প্রতারিত গ্রাহক মন্তব্য করতে গেলে তাকে সেখান থেকে বাদ দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে যাতে কিউবির বিরুদ্ধে কোন মন্তব্য না করতে পারেন সেজন্য তাকে ব্লক করা হয়।
কিছু অতি উৎসাহী কিউবির কর্মচারীরা যারা কিউবির ফেসবুক ফ্যানপেজ এবং গ্রাহকদের গ্রুপ তত্ত্বাবধানে আছেন তারা ফেসবুক থেকে গ্রাহকদের ফোন নাম্বার সংগ্রহ করে অশ্রাব্য ভাষায় গালি-গালাজ করছেন এবং পরবর্তীতে দেখে নেওয়ার কথাও বলছেন এমন অভিযোগও জানিয়েছেন কেউ কেউ।
তাদের প্রশ্ন কিউবির ডিজিটাল প্রতারণা বন্ধ হবে কি?
সূত্র ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।