মনের ভাব প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম হল ভাষা। পৃথিবীতে আছে অগণীত ভাষা। আবার একই দেশেও আছে বহু ভাষা, তাছাড়া আঞ্চলিক ভাষারও কোন কমতি নাই।
এমনও দেখাযায় যে এক অঞ্চলের বুলি অন্য অঞ্চলের গালি!
আমরা চায়ের সাথে যে পুড়ি খাই সেই পুড়ি নামেই নাকি সিলেট অঞ্চলে কিশোরীদের ডাকা হয়। অর্থাৎ ঢাকার হোটের বিকেলের নাস্তার পুড়ি একই বানানে একই উচ্চারনে সিলেটের কিশোরী তরুণী।
অতএব, যদি আপনি সিলেট অঞ্চলে গিয়ে হোটেলে বসে নাস্তার আশায় পুড়ির অর্ডার দিয়ে ফেলেন তাহলে বুঝেনইতো কেমন বিরম্বনায় পরবেন।
মুরুব্বিদের মিঞা বলাহয় সম্মানার্থে অথচ চট্টগ্রামে নাকি ঘোড়াকে মিঞা বলে! আবার আরব দেশে একশত মানে মিঞা! চট্টগ্রামে গিয়ে কোন মুরুব্বিকে সম্মান করে মিঞা বল্লেযে মুরুব্বির নাতি নাতনিরা আপনার সম্মান বহুগুণে বাড়িয়ে দিবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
আমদের দেশে বা ব্রীটেনে মহিলাদের সম্মানের সাথে ম্যাডাম বলাহয় অথচ একই বানানে উত্তর আমেরিকায় পতিতার সর্দারণীকে ম্যাডাম ডাকা হয়। খবরদার ওদেশে গিয়ে কেউ ভুলেও কাউকে সাম্মানীতা করার জন্য ম্যাডাম সম্বধন করবেন না। যদি ভুলেও এমনটা করেন তাহলেযে আপনাকে বার ঘাটের পানি খেতে হবে তাতে সন্দেহ নাই।
আমি বিপত্তিতে পরেছিলাম সৌদি আরব এসে। গত দুইদিন পূর্বে ট্রান্সপোর্ট কোম্পানীর এ্যাকাউন্টেন্ট হয়ে সৌদি আরবে এসেছি। ইন্ডিয়ান ইউপির এক ড্রাইভার বশীর বল্ল 'সাব টয়লেটমে সাবুন নেহিহে'! কিন্তু সাবুন কি তাতো বুঝিনা! আমি ইংরেজি বাংলা ছাড়া আর কিছু বুঝিনা। আর সে হিন্দি উর্দূ আর আরবী ছাড়া কিছু বুঝেনা। হিন্দি উর্দূ আর আরবীতে একই শব্দ সাবুনই ব্যবহার হয়।
শেষপর্যন্ত এক বন্ধুকে ফোন করে সাবুনের অর্থ যে 'সাবান' তা উদ্ধার করেছিলাম।
শুধু সৌদিআরবে এসেই নয় এমন একটা বিপত্তিতে পরেছিলাম ছোট বেলায় চট্টগ্রামে গিয়ে। স্হানীয় এক বন্ধু বল্ল তাদের গাছে অনেক 'গইয়ম' ধরেছে। আমি 'গইয়ম' পছন্দ করিকিনা? করলে সে আমারকে এনে দিবে। কিন্তু 'গইয়ম' কি? আমিতো গইয়ম বুঝিনা! বন্ধুও 'গইয়ম' ছাড়া অন্য কোন নাম জানেনা।
শেষ পর্যন্ত বন্ধুকে বল্লাম দোস্ত দরকার নাই তোমার 'গইয়ম' খাওয়ার।
পরে আব্বার কাছে জিজ্ঞেস করে যখন বুঝলাম 'গইয়ম' অর্থ পেয়ারা তখন খুব আফসোস হয়েছিল। আহারে নাম না জানার কারনে প্রিয় ফলটা খেতে পারলাম না!
এক তামিল ভদ্রলোক এসেছে উত্তর প্রদেশে। সে তামিল ভাষা ছাড়া আর কিছু বুঝেনা। এক উর্দূভাষীকে জিজ্ঞেস করল, 'তামিল তেরি মা?' উর্দূভাষী মনে করেছে 'তামিল তোর মা! এই কথা বলেছে তাই সে জবাব দিয়েছে 'উর্দূ তেরী বাপ' মানে উর্দূ তোর বাপ? অথচ তামিলিয়ানের প্রশ্ন ছিল তুমি কি তামিল জান? ভাষা না জানার কারনেই এই বিপত্তি।
জাপানের প্রধান মন্ত্রী এরকমই একটা বিপত্তি ঘটিয়েছিলেন ইংরেজী না জানার কারনে ক্লিন্টনের সময় আমেরিকা ভ্রমণে গিয়ে।
সবই যদি আমি লিখি তাহলে আপনারা মন্তব্যে কি লিখবেন তাই বাকী ঘটনাগুলো আপনাদের জন্য ছেড়ে দিলাম। চট্টগ্রামের 'মিঞা' আর সিলেটেরা 'পুড়ি' শোনা কথা সত্যতা জানিনা।
যেকারনে আজকের লেখার অবতারনা তার লিঙ্ক থেকে জেনে নিন, হাতের পাঞ্জা যেভাবে কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রতীক হলো
সেই মজার ঘটনা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।