আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একুশে আগষ্ঠ গ্রনেট হামলার খলনায়ক ,জঙ্গি কানেকশনের হোতা মতিউরের প্রথম আলোর বেল্কীভাজি ও ধান্ধাবাজী.(সংকলিত)

বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের উপর নজিবিহীনভাবে বর্বরতার সংবাদটি বাংলাদেশের সব পত্রিকা প্রধান শিরোণাম করেছে। টিভি ফুটেজ এবং সংবাদপত্রের ধারবাহিক চিত্র দেখে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে গেছে প্রকৃতপক্ষে ঘটনাটি কি ঘটেছিল। দিনের সংবাদ হিসেবে সরকারের গোড়া সমর্থক ভারত বান্ধব পত্রিকাগুলো এটি প্রধান খবর না করে পারেনি। টিভি চ্যানেলে যেহেতু বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেছে সেক্ষেত্রে কালের কণ্ঠের মতো পত্রিকাও লুকানোর চেষ্টা করেনি। সর্বোচ্চ তারা একটা ব্যালেন্স করার চেষ্টা করেছে চারদলীয় জোট আমল এবং ফকরুদ্দিন-মইনুদ্দিন আমলে আওয়ামীলীগের আমলে নেতা নেত্রীদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের ছবি ছাপিয়ে এবং সেসব ঘটনার বর্ণনার মাধ্যমে।

কিন্তু প্রথম আলো তার বিশাল সার্কুলেশন দিয়ে ঘটনাটিকে ভিন্নরূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছে। পত্রিকাটি প্রথম পাতার ওপর চার কলামের মধ্যে ছোট ছোট করে তিনটি ছবি দিয়েছে। প্রথম ছবিটির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, বাস লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়ার ভঙ্গি জয়নুল আবদিন ফারুকের। পরের ছবিটি জয়নুল আবদিনের পাশে এক পুলিশ কর্মকর্তা রাস্তায় হেলে পড়েছে। পরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে খালি গায়ে উর্ধ্বশাসে দৌড়াচ্ছে জয়নুল।

এ ছবিগুলোর নিচে চার কলামের আরেকটি ছবি সেখানে তার ভয়কাতুর অপরাধি চেহারা। এ ছবিগুলো দেখে পাঠকদের ধারণা হবে জয়নুল আবদিন ফারুক বিশাল অন্যায় করেছিলেন তার সাজা হয়েছে। পুলিশ তাকে সাজা দিয়েছে। টেলিভিশন ফুটেজগুলো আগেই স্পষ্ট করেছিল ঘটনাটি। না হলে দেশের বিশাল একটা অংশ প্রথম আলোর ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের শিখার হতেন।

পত্রিকাটি এ ধরনের লাইভ কোনো ছবির ক্ষেত্রে স্ট্যাম্প সাইজের ছবি ব্যবহার করে না। কিন্তু পুলিশ ও জয়নুল আবদিনের এ ঘটনার ছবির ক্ষেত্রে কেন তারা এ মিনি ছবি ব্যবহার করলো তা পাঠককে ভাবাবে। এ ধরনের ভাবনার সাথে যদি টিভি ফুটেজগুলোও সামনে আসে তাহলে তারা একটা অর্থ করে নিতে পারবে। পত্রিকাটি যে অসততা করেছে মিনি সাইজের পরপর সাজানো ছবি থেকে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রথম ছবিতে জয়নুলের অস্পষ্ট হাতে একটা ঢিল মনে হচ্ছে।

পরের ছবি দেখলে এটা পরিস্কার যে সেটা তার মোবাইল। কিন্তু পত্রিকাটি চাতুয্যের সাথে প্রথম ছবির ক্যাপশন করেছে, বাস লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়ার ভঙ্গি। পাঠককের মনে ক্যাপশান এভাবে পঠিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, ‘বাসে ঢিল ছুড়ছেন জয়নুল’। ক্যাপশনটিতে তারা, ‘বাসে ঢিল ছুড়ছেন’ একথা বললে ঢাহা মিথ্যা হয়ে যাবে তাই বলতে পারেন নি। কিন্তু তিনি ঢিল ছুড়ছেন এ বিষয়টি পাঠকের মনে গেথে দেওয়ার জন্য তারা এ প্রতারণা আশ্রয় নিয়েছে তা বুঝতে অসুবিধা হয় না।

কেনো এ ধরনের অসততা? কিছুদিন আগে ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরো নগ্ন অসততার আশ্রয় নিয়েছিল পত্রিকাটি। এই কলামে৭ এপ্রিল প্রকাশিত সেই ঘটনাটি ছিল মুফতি আমিনির ডাকা হরতাল বিষয়ক সংবাদ কাভারেজ। সেখান থেকে কোট করলাম, ‘প্রথম আলো প্রথম পাতায় চার কলাম ৫ ইঞ্চি একটি ছবি দিয়েছে। এর ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, রাজধানীর শান্তিনগরে গতকাল পুলিশের ওপর হরতাল-সমর্থকদের হামলা। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে দুজন পুলিশের মুখোমুখি একজন ছাত্র।

ওই ছাত্রের পেছনে আরো বেশ কিছু ছাত্র। ছবিটি দেখেই মনে হবে ওই ছাত্র পুলিশকে ঘুসি মারছে। কিন্তু একটু ভালোভাবে লক্ষ্য করলে বোঝা যাবে আসল বিষয়টি সম্পূর্ণ এর বিপরীত। ওই ছাত্রের পায়ের দিকে তাকালে দেখা যাবে পায়ে ছাগলের খুটি। ডান হাতটি দুই পুলিশের মাঝে।

পা এবং হাত ভালো করে খেয়াল করলে স্পষ্ট হবে ছাত্রটি পুলিশকে আঘাত করছে না বরং ওই ছাত্রটিকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে পলিশ। দুই পুলিশের মাঝের আড়াল হাতটি আসলে পুলিশের শক্ত আটুনির মধ্যে। সে পায়ে সমস্ত শক্তি দিয়ে পুলিশের লৌহ বেস্টনি থেকে ছুটে যাওয়ার প্রাণপ্রণ চেষ্টা করছে। এবারের ঘটনাটির বর্ণনা নিম্নরূপ: পুলিশের উপযুপুরি মারের চোটে সংসদের বিরোধী দলীয় হুইপ জয়নুল আবেদিনের জিহবাটা বেরিয়ে গিয়েছিলো। মৃত্যুপথযাত্রীর অন্তিম মুহূর্তের ক্ষীণকণ্ঠ দেখা গিয়েছিল সেখানে।

তিনি অস্পষ্ট স্বরে বলছিলেন ‘পানি’। পানি তো দুরের কথা; সহকর্মীরা তার জীবনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন। টেলিভিশন ক্যামেরায় শুরুটা দেখা গেল এভাবে। পুলিশের কর্মকর্তার সাথে তিনি উত্তপ্ত বাগবিতন্ডায় লিপ্ত হয়েছেন। একপর্যায়ে হারুন কষে একটি চড় মারলেন জয়নুল আবেদিনকে।

তাগড়া হারুনের বিশাল থাবায় তিনি রাস্তায় টালমাটাল ছিটকে পড়তে যাচ্ছিলেন। থাবা দেয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে হারুন নিজেকে গুছিয়ে নিল। এবার ফিল্মি কায়দায় দৌড়ে গিয়ে অসুরের শক্তি নিয়ে হামলে পড়লেন তার ওপর। তার সাথে যোগ দেন বিপ্লব কুমারসহ অন্যরা। হারুনের আগে বিপ্লব কুমার একচোট উস্কানিমুলক গালাগাল দেন জয়নুলকে।

‘তোকে দেখে নেব’ এ ধরনের উক্তির জবাবে বিপ্লব চীফ হুইপকে বলেন, ‘থাপ্পড় মেরে তোর দাঁত ফেলে দেব’। হারুন এবং বিপ্লব কুমারের মিলিত আক্রমনে রাস্তায় ধরাশায়ি হন জয়নুল। তার ওপর পুলিশি গণপিটুনি চলে। পিটুনির চোটে তার গেঞ্জি ছিড়ে যায়। এক পর্যায়ে পুলিশ তার গেঞ্জি খুলে ছুড়ে ফেলে রাস্তায়।

লাঠি ও বুটের উপর্যুপুরি আঘাতে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ থেতলে যায় তার। ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরুতে থাকে। হারুনের নেতৃত্বাধীন পুলিশ দল এবার দম নেয়। এ সুযোগে উপস্থিত এমপিরা তাকে ধরাধরি করে এমপি হোস্টেলের দিকে রওনা দেয়। কিছুটা অগ্রসর হওয়ার পর পুলিশ তাদের ধাওয়া করে।

জান বাঁচাতে রক্তাক্ত শরীর নিয়ে এমপি হোস্টেলে ডুকার জন্য উর্ধ্বশ্বাসে ছুটে ব্যর্থ হন জয়নুল। তাকে অন্ধকার গ্যারেজের মধ্যে ধরে ফেলেন হারুন-বিপ্লব বাহিনী। আরেক দফা গণ লাঠিচার্জ হয় সেখানে। অর্ধমৃত করে জয়নুলকে এবার চার হাত পা ধরে চ্যাংদোলা করে ছুড়ে ফেলা হয় অপেক্ষমান ভ্যানে। শরীরে অর্ধাংশ বাইরে রেখেই চালিয়ে দেয়া হয় ভ্যান।

তিনি মৃতের খসে পড়ার মতো চলন্ত যান থেকে রাস্তায় পড়ে যান। একইদিন ছিল ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসএম কৃষ্ণার বাংলাদেশ সফর। সাধারণভাবে প্রথম আলো কৃষ্ণাবিষয়ক সংবাদটি এ দিন প্রধান শিরোণাম করতো। মাঝখান থেকে চিফ হুইপ মার খেয়ে কৃষ্ণা চলে গেলে পাতার নিচের দিকে। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো না থাকলে জয়নুল আবদিন প্রধান শিরোনাম হতেন না।

প্রকৃতপক্ষে টেলিভিশনের বোক ক্যামরাম্যানরা ছবি তোলার প্রতিযোগিতার কারণে ঘটনাটি একেবারে সামনে চলে আসে। সেজন্য দিনের প্রধান খবর এসএম কৃষ্ণা মার খেয়ে যায়। ভিকারুন্নেসার ঘটনা : এ খবরটি এড়িয়ে যাওয়ার চেস্টা করে ব্যর্থ হয়েছে প্রথম আলো। নয়া দিগন্ত, আমার দেশ এবং দিগন্ত টেলিভিশন ফলাও করে সংবাদ প্রকাশের ফলে পরিমলকে গ্রেফতার না করে থাকা যায়নি। শেষে প্রথম আলোও খবরটি দিয়েছে।

সমকালে পরিমলের ছবি ছাপলেও প্রথম আলো শেষের পৃষ্টার কেবল সাদামাটা করে খবরটি দিয়েছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.