হেঁটে হেঁটে যতদূর চোখ যায় তিশা কখনোই ভাবেনি যে তার জীবনটাতে এমনটা হবে! কেমন যেন স্বপ্নের মত লাগছে সব কিছু! এত হুটহাট মানুষের জীবনে পরিবর্তন হয়! এখনও তিশার মনে হচ্ছে সে হয়ত নানির পানের সাথে লুকিয়ে কাঁচা সুপারি খেয়ে ঘোরের মধ্যে আছে! নিজেকে সে একটা চিমটি কাটে।
উহ! ব্যথা পেলাম তো! তার মানে সবই ঠিক আছে। সবই সত্য!
কিছুক্ষণ আগে তার বিয়ে হয়েছে। পাত্রপক্ষ সন্ধাবেলা দেখতে আসল। কিছুক্ষণ কথাবার্তা হল।
সে শুধু শুনেছে ছেলে নাকি সোনার টুকরা! ভাল চাকরি করে! ঘুষ না খেয়েই ভাল বেতন পায়। ছেলে তাকে পছন্দ করেছে। আর এতেই বাবা আনন্দে আত্মহারা! হঠাৎ বাবা এসে তাকে জিজ্ঞেশ করলেন, মা। আমরা চাই তোর এখানে বিয়ে হোক। তোর কি আপত্তি আছে?
তিশা কি বলবে প্রথমটায় বুঝতে পারছিল না।
পরে ভাবল বিয়ে তো করতেই হবে। তাছাড়া পাত্রের চেহারা তার অপছন্দ হয়নি। তাই সে দিল হ্যাঁ-বোধক মাথা নাড়িয়ে!
কিন্তু তখন তার মনে তেমন কোন জটিল চিন্তা না আসলেও এখন চরম অস্বস্তিতে তার মাথা ঘুরাচ্ছে! লাল একটা শাড়ি পরে সে বিছানায় চুপচাপ বসে আছে। একটু পরে তমাল (পাত্রের নাম) আসবে। বিষয়টা তিশা এখনো মেনে নিতে পারছে না।
চেনে না জানে না এমন একটা লোকের সাথে তাকে একই ছাদের নিচে থাকে হবে!
আচ্ছা তমাল এসে কি করবে! হালুম করে ঝাঁপিয়ে পড়বে নাতো! ইস এসব আমি কি ভাবছি!
তিশার ভাবনা অদ্ভুত থেকে অদ্ভুতুড়ে পর্যায়ে যেতে থাকে!
সম্পূর্ণ অপরিচিত একজন মানুষের সাথে কিভাবে আমি থাকব? একই ছাদ... একই বিছানা ... এ মা কাঁথাটাও তো একটাই...
একটু পর তমাল আসল। দরজা বন্ধ করার সাথে সাথে তিশার বুকটা কেঁপে উঠল। সে চোখ বন্ধ করে রইল। কিন্তু তার কান সম্পূর্ণ সজাগ! সে স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে তমাল হেঁটে হেঁটে খাটের কোনায় এসে পৌঁছেছে! হঠাৎ তিশার মনে হল কেউ বোধহয় তার শাড়ির আঁচল ধরে টানছে। শিট! এসেই শুরু করল! এ তো দেখছি চরম অসভ্যলোকরে বাবা!
পরক্ষণেই তিশা চোখ মেলে দেখল তার শাড়ি ধরে কেউ টানেনি।
আঁচলের এক অংশ খাটের মশারি স্ট্যান্ডের সাথে আটকে গিয়েছিল। আর তমাল তার সামনে বসে আছে। সে তিশাকে অবাক করে দিয়ে বলল, তোমার চোখ দুটো তো অনেক সুন্দর!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।