নিজেকে সাধারণ বলে দাবী করি এর মানে এই না যে আমি অসাধারণ হতে চাইনা... দেশ- মা- মাতৃভূমি…
বেশ কয়েকদিন ধরে এই বিষয়ে ফেসবুক, টুইটার আর বাংলা ব্লগসমূহে কথার খই ফুটছে। ব্লগে ব্লগে ঘোরাঘুরি করলাম… বিষয়টা সম্পর্কে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জানলাম… গুটিকয়েক লেখাতে মন্তব্যও করলাম। ব্যস! এটুকুতেই আমার দেশপ্রেম!
ব্লগে এই লেখাটা লিখতে আমার একফোঁটা লজ্জা করছে না। সত্যি বলতে, আসলে কার বিরোধ করব? কেনইবা করব সেটা বুঝে উঠতে কষ্ট হচ্ছে।
গত শুক্রবারে ‘স্বপ্নীল’ রেস্তোরায় দেশের রাষ্ট্রধর্ম কেন ইসলাম হবেনা তা নিয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করাতে আমার বন্ধুদের খাবারের আমেজটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
আমার ব্যক্তিগত ধারণা কিংবা যুক্তি ছিল- রাষ্ট্র যদিও একটা নিরপেক্ষ ইস্যু, তার পরেও প্রত্যেক রাষ্ট্রের যদি একটি নির্দিষ্ট ধর্ম থাকে তাতে আমি কারো ক্ষতি দেখছিনা। আর না থাকলেও। এর আগের শুক্রবারে জুমার নামাজের খুতবায় চট্টগ্রাম কলেজ জামে মসজিদের ইমাম সাহেব বলেছেন, ‘রাষ্ট্রের যদি ভাষা থাকতে পারে, ধর্ম কেন নয়?’ আমি ‘স্বপ্নীল’ রেস্তোরার সেই আলোচনা সভায় ঠিক সেই কথাই বললাম- কারণ আমার কাছে যুক্তিটা গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে। স্বাভাবিক চিন্তায় তো অন্য যে কারোরই সেই কথা মনে আসার কথা বলে অন্তত আমি বিশ্বাস করি। এমন না যে কোন একটা রাজনৈতিক দলের পক্ষে গিয়ে আমি ওই উক্তিটি করেছিলাম।
আমার ওই বন্ধুর কথা হচ্ছে- ধর্ম হচ্ছে ব্যক্তিগত ব্যাপার… কোন একটি দেশ কখনই কোন একটি ব্যক্তির উপর ধর্ম চাপিয়ে দিতে পারেনা… আর ভাষার সাথে তো তুলনাই চলেনা ধর্মের… একটি দেশের ভিত্তি গড়ে উঠে ভাষার উপর… রাষ্ট্রের সকল বিধিবিধান ভাষা না থাকলে কিভাবে সকলের জন্য হবে? ইত্যাদি ইত্যাদি…
আমি তার কথার সাথে অনেকাংশেই সহমত প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম ওইদিন। আমাদের আলোচনার আবহাওয়া এতটাই উত্তপ্ত হয়ে গিয়েছিল যে কিছু বলা সম্ভব হয়নি।
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম হওয়া মানে যে সকলের উপর জোরপূর্বক ইসলাম চাপিয়ে দেওয়া কিংবা সকলে জন্য ইসলাম বাধ্যতামূলক তাও না। ওর মত আমিও মানি যে ধর্ম ব্যক্তিকেন্দ্রীক। আমার মত অনেকেই আছে যাদের নামাজ-কলমার ঠিক-ঠিকানা নেই, ৩ ওয়াক্ত পড়লে দুই ওয়াক্ত বাদ পড়ে…
কিন্তু রাষ্ট্রধর্ম যদি ইসলাম হয়ে থাকে তবে তো কারও লাভ যেমন হচ্ছেনা তেমন ক্ষতিও হচ্ছেনা।
যাহোক… বাদ দিই এইসব হাবিজাবি… প্রত্যেকের মত প্রত্যেকের কাছে থাকবে শেষতক। এই বাতিঘরের চাবি তো ক্ষমতাসীন দলের কাছে… আমরা আমজনতার চিন্তায় কি আর তালা খোলে?
ঠিক এমনটাই আমাদের দেশপ্রেম। অবশ্যই আমি চাই, টোকাইদের এই অবরোধ সফল হোক… দেশের সম্পদ দেশের মানুষেরই থাকুক… আমিও নামি তাদের সাথে… জন্মের সাথে সাথেই এই ভূমি আমার জন্য জায়গা ছেড়ে দিয়েছে, আমারও তার দুর্দিনে নিজের হতে কিছুটা না ছাড়লেও অন্তত তার পাশে গিয়ে দাঁড়ানোর ইচ্ছা হয়…
দেশ যাদের দিয়ে চলে তারা যতক্ষণ এটি নিয়ে না ভাবছে ততক্ষণ আমাদের এই আস্ফালন কেবলি স্কুলের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের দৌড়-ঝাঁপের মতোই। কানাড়ীয় আদালত তাদের কোম্পানীকে দণ্ড দিতে পারে স্রেফ এই জন্য যে, ক্ষতিপূরণ কমাতে বাংলাদেশী এমপি-মন্ত্রীকে ঘুষ দিয়েছে…
কিন্তু আমরা পারিনা…
আমাদের সরকার-আমাদের আদালত অন্যায়ের বিরুদ্ধে নয়, স্রেফ ক্ষমতায় টিকে থাকার লড়াই করতে জানে… ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।