কাগু ক্যান স্টার্ট অ্যা ফায়ার ইউজিং জাস্ট টু আইস কিউবস পর্ব -৩ এখানে (Click This Link)
পর্ব-৪
সূচনা
***
৯/১১ আক্রমণের পর এক পাগলপ্রায় আমেরিকার মা আমাকে তার দুঃখের কাহিনী বলছিলেন, যে তার ২৩ বছর বয়সী ছেলে ১৪ বছর বয়সের সময় ইসলামে দীক্ষা নিয়েছে । বিয়ে করেছে এক অদেখা মুসলিম মেয়েকে , তার ঈমামের আয়োজনে । এখন এই এক বাচ্চার বাবা বলছে আফগানিস্থানে গিয়ে তালেবানদের পক্ষে যুদ্ধ করে শহিদ হতে চায় । বছর কয়েক আগে সে বলেছিলো ইসলামি হুকুমত কায়েম হয়ে গেলে যদি সব কাফেরদের হত্যার নির্দেশ আসে তাহলে সে নিজের মা’কে খুন করতেও বিন্দুমাত্র দ্বিধা করবে না
***
শিক্ষিত বুদ্ধিদীপ্ত ২৫ বছর বয়েসি, পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত সাইমা নাযির ছুরিকাঘাতে খুন হন নিজ পরিবারের লোকদের দ্বারা । পিত্রালয়ে নিজের ৩০ বছর বয়েসি ভাই আর ১৭ বছর বয়েসি কাজিন তার গলায় ছুরি চালায় ।
অনেকের বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে নিজের পছন্দমত এক নিচু বংশের আফগানকে ভালোবেসে পরিবারের সম্মানে কালিমা দেয়া ছিলো তার অপরাধ(!) । ২০০৫ এর এপ্রিলে বাড়িতে(পাকিস্তানে) ডেকে নিয়ে পরিবারের সদস্যরা মিলেই এই কাজ ঘটায় । এক প্রতিবেশি তাকে পালানোর চেষ্টা করতে দেখেন, কিন্তু চুলের মুঠি ধরে ঘরে টেনে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় তার নিজ পিতা । “তুমি আর আমার মা নও” এই চিৎকার শুনে সেই প্রতিবেশি ধারণা করেন যে এই কুকর্মে মেয়েটির মা’ও জড়িত ছিলো । তার ২ এবং ৪ বছর বয়েসি ভাতিজিদেরও এই ঘটনা দেখতে বাধ্য করা হয় ।
বাচ্চাদের শরীরে রক্তের পরিমাণ দেখে ধারণা করা যায় তাদের মাত্র কয়েকফুট দূরত্বের মধেই ঘটে এই বর্বর হত্যাকান্ড । এই পরিবার ছিলো স্বচ্ছল এবং উচ্চশিক্ষিত ।
***
মোহাম্মদ আলি আল আয়াদ নামে ২৩ বছর বয়স্ক এক ছৌদি কোটিপতির আমেরিকা নিবাসী ছেলে ২০০৩ এর অগাস্টের এক সন্ধ্যায় তার মরক্কান ইহুদি বন্ধু সেলুক কে দেখা করার জন্য ডেকে আনে । দুজনে বারে মদ খেয়ে মধ্যরাতে আলি আল আয়াদের এপার্টমেন্টে ফিরে আসে । সেখানে আলি আয়াদ ছুরি নিয়ে আক্রমণ করে তার ইহুদি বন্ধুকে এবং ধড় থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলে তার মাথা ।
পুলিশের কাছে জবানবন্দিতে আলি আয়াদের রুমমেট বর্ণনা করে হত্যার আগে দুজনের মধ্যে কোন তর্ক বিতর্ক হয়নি । আয়াদের আইনজীবি এই ঠান্ডা মাথার খুনের কারণ হিসাবে বলেন, “ধর্মীয় মতপার্থক্য”
***
ইউনিভার্সিটি অফ নর্থ ক্যারোলাইনা থেকে পাশ করা ২৫ বছর বয়েসি মোহাম্মদ তাহেরি আযার । ২০০৬ এর মার্চে এক দিনে সে একটি এস ইউ ভি ভাড়া করে ধীরে ধীরে ক্যাম্পাসে ঢুকে । তারপর আচমকা গতি বাড়িয়ে গাড়িটিকে নিয়ে যায় ছাত্র-ছাত্রীদের ভিড়ের মধ্যে । উদ্দেশ্য যত বেশি পারা যায় খুন করা।
থামার আগে সে নয়জনকে আঘাত করে যার মধ্যে ছয়জন আহত হয় ।
***
করাচি নিবাসী হিন্দু দম্পতি সানাও মেনঘোয়ার এবং তার স্ত্রী একদিন সন্ধ্যায় কাজ থেকে ফিরে দেখেন তার তিন মেয়ে বাড়িতে নেই । ২০০৫ এর নভেম্বরের ঘটনা । দুইদিন পাগলের মত খোঁজার পরে তারা জানতে পারেন তাদের তিন কন্যাকে অপহরণের পর জোরপূর্বক ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে । পুলিশ তিন মুসলিম তরুণকে অপরাধের সাথে যুক্ত থাকার সন্দেহে গ্রেপ্তার করে, কিন্তু অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার কারণে তারা জামিনে ছাড়া পেয়ে যায় ।
মেনঘোয়ার দম্পতির মেয়েরা এখনো নিখোজ ।
করাচির এক হিন্দু বাসিন্দা লালজি বলেন, “ হিন্দু মেয়েদের এই ধরণের অপহরণ এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে । অপহরণের পর তারা ইসলামে দীক্ষা নিয়েছে এই মর্মে স্ট্যাম্প কাগজে জোরপূর্বক সই নেয়া হয় তাদের কাছ থেকে । ” তিনি আরো বলেন হিন্দুরা এমনকি তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করতেও ভয় পায়, নির্যাতনের ভয় ।
পাকিস্তানের অনেক হিন্দু মেয়ের ভাগ্যেই এইসব জোটে ।
অপহরণের পর জোরপূর্বক ইসলামে ধর্মান্তর এবং তার পর কোন মুসলিম পুরুষের সাথে বিয়ে দেয়া হয় এদের । বাবা মায়ের সাথে দেখা করতে দেয়া হয় না আর । “ মুসলিম আওরাত কেন কাফিরদের সাথে থাকবে বা যোগাযোগ রাখবে ?” প্রশ্ন মৌলভি আযিযের । এই ধরণের আরেকটি ঘটনায় আদালতে অপহরণকারীর পক্ষে বলতে গিয়ে এই প্রশ্ন রাখেন মৌলভি ।
কোন হিন্দু মেয়ের ধর্মান্তরের খবরে শত শত লোক ধর্মীয় শ্লোগান দিতে রাস্তায় নেমে আসে ।
কতৃপক্ষের বধির কানে বাবা মায়ের কান্নার শব্দ যায় না । এইসব অভাগীদের এরপর হুমকির উপর রাখা হয় যে ইসলাম ত্যাগ করলে তাদের মুরতাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড ভোগ করতে হবে । প্রায়ি আইনজীবিরা মৌলবাদীদের হামলার ভয়ে এই ধরণের মামলা লড়তে চান না ।
***
২০০৫ এর অক্টোবরে তিন খ্রিস্টান মেয়ে কোকোয়া ক্ষেতের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ইসলামি মৌলবাদীদের দ্বারা আক্রান্ত হয় । এরা ছিলো একটি খ্রিস্টান প্রাইভেট স্কুলের ছাত্রী ।
মুসলিমদের এক দল এদের আক্রমণ এবং শিরোচ্ছেদ করে । পুলিশ তাদের ধড় এবং মাথা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় খুঁজে পায়। একটি মাথা রেখে আসা হয়েছিলো চার্চের আঙিনায়। মুসলিম মৌলবাদীদের লক্ষ্য সুলাওয়াসি প্রদেশ । তাদের ধারণা সেখান থেকে শুরু করেই তারা পুরো ইন্দোনেশিয়াব্যাপী ইসলামি হুকুমত কায়েম করতে পারবে ।
২০০১ এবং ২০০২ সালে এ প্রদেশে মুসলিম মৌলবাদীরা একযোগে খ্রিস্টানদের উপর হামলা চালায় । গোটা ইন্দোনেশিয়া থেকে মুসলিমরা জড়ো হয় এই উদ্দেশ্য । দুবছরে তারা হত্যা করে প্রায় ১০০০ খ্রিস্টানকে ।
***
Muriel Degauque ৩৮ বছর বয়েসি বেলজিয়ান নারী । ছোটকাল থেকে তাকে চিনতেন এমন এক প্রতিবেশির বর্ণনায় খুব সাধারণ মেয়ে ।
শীতে তুষার পড়া শুরু হলে স্লেজ চড়তে যেতো । এই নারী এক মুসলিমকে বিয়ে করে ইসলাম ধর্মে দীক্ষা নেয় । পরবর্তীতে সে তার স্বামীর সাথে সিরিয়া হয়ে ইরাকে চলে যায় । সেখানে গায়ে বোমা বেঁধে ইরাকি পুলিশের প্যাট্রোল বহরের উপর আত্নঘাতী হামলা চালায় সে । হামলায় ৫ জন পুলিশ তৎক্ষণাৎ নিহত হন ।
গুরুতর আহত হন আরো একজন পুলিশ অফিসার এবং চারজন সাধারণ পথচারী ।
*****
এই হামলাগুলো সবই অস্বাভাবিক পাগলামি । কিন্তু যারা ঘটিয়েছে এইসব তাদের কেউই পাগল ছিলো না । এরা সবাই “পুরোপুরি স্বাভাবিক” মানুষই ছিলো । এইসব ঘৃনিত কাজে কিসে তাদের উদ্বুদ্ধ করেছিলো ? উত্তর হলো ইসলাম ।
ইসলামি বিশ্বে এইসব নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা । মুসলিমরা সর্বত্রই কে কি বিশ্বাস করলো এই নিয়ে খুন খারাবিতে ব্যস্ত ।
কেন ? কেন সুস্থ্য স্বাভাবিক মানূষ এমন পৈশাচিক কাজ করে ? কেন জাতি হিসাবে মুসলিমরা অন্যদের উপর এতই চ্যাতা আর গোটা দুনিয়ার সাথে এতই শত্রুমনস্কতা পোষণ করে যে খুব সহজেই এরা সহিংসতার পথ বেছে নেয় ? মোহাম্মদকে নিয়ে সামান্য কোন কথা বললেই দুনিয়ার মুসলিমরা সর্বত্র দাঙা হাঙামা আর সাধারণ মানুষের উপর হত্যাযজ্ঞে নেমে যায় । এইসব কোন সুস্থ্য স্বাভাবিক মানুষের কাজ হতে পারে না । কিন্তু এই কাজগুলো যারা করছে তারা সবাই সুস্থ্য স্বাভাবিক মানুষ ।
এই রহস্যের সমাধান কি ? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।