যা মাথায় আসে লিখে ফেলি ...:P এই কবিতা লাশ কাটা ঘরে ব্যবচ্ছেদের অপেক্ষায় থাকা সেই একলা লাশটার জন্য।
আজ বিকেলে ঘর থেকে একমাত্র নীল শার্টটা পরে বের হবার সময় যে ব্যস্ততা ,
এখনকার সাথে তার কোন সামঞ্জস্য খুঁজে পাওয়া যাবেনা, কারণ-
পার্থক্য এখানে আকাশের সাথে পাতালের।
তখন কেবল ৫টার মাঝে ছাত্রের বাসায় গিয়ে হাজিরা দেওয়ার চিন্তা সমস্ত ভাবনা জুড়ে।
মাসের শুরু- আজ হাতে এক মুঠো লাল গোলাপের মতই কিছু কড়কড়ে তাজা নোট থাকবার কথা।
সেই হাতটা এখনো বাড়ানো-
হাতের মুঠো খোলা
কিন্তু, নোটের বদলে সেখানে রক্তের কালো দাগ আর শূন্যতা, কিছু না পাওয়ার বা হারিয়ে যাওয়ার।
এখন ময়নাতদন্তে ব্যস্ত হয়ে পড়ি যদি লাশটাকে নিয়ে,
হাড় ভেঙ্গে দেয়ার-ভিসেরা বের করার সেই বীভৎস দৃশ্য নয়,
শব্দের আশ্রয়ে ঐ পাওয়া আর হারিয়ে ফেলবার হিসেব, বিশ্লেষণের একটা আলাদা ময়নাতদন্ত;
ফিরে দেখবো মুখে ফেনা তুলে অনর্গল বকে চলা -
বেশ সাজানো-গোছানো একটা "উচ্চ-মধ্যবিত্ত" ঘরের বসার ঘরে, সুদৃশ্য কাঁচের টেবিলের ধারে কিছু ঘন্টা।
সকাল-রাতে রুটিনমাফিক বাড়ি ফিরবার পথে সালাম সাহেব-
বাড়ি ভাড়া সময়মত দেয়া হয়নি, মাথা কুটে মরছে মাথার ভেতর অন্য ঠিকানা খুঁজে নেয়ার তাড়া।
চিলেকোঠার ভ্যাপসা ঘরের জানালা খুলে দু-দণ্ড বিশ্রাম-
দু-দণ্ডেতেই সীমিত কেননা রোজকার ঘরোয়া সঙ্গী অভাব এখনই মাথা-চাড় দিবে।
লাউঞ্জ-ফেসবুক এ সমস্ত বড়লোকি আড্ডায় দূরে একলা সরে যাওয়া-
ঘোড়ারোগ মানায় না তাকে, জীবন এ সত্য অনেক আগেই বুঝিয়ে দিয়েছে হাতেকলমে ।
নীরব একাকী সময়, গঞ্জনাময় -অভাব তাড়নায় বেঁচে থাকা আর ক'টা টাকার জন্য এই গৃহশিক্ষকের নিয়ম-মাফিক প্রতি মাসে ভিক্ষাবৃত্তি-
স্বপ্নের আর আত্মবোধের অপমৃত্যু বেঁচে থাকা প্রতিটা দিনে,
এমনকি হঠাৎ রিকশায় খেলাচ্ছলে ধাক্কা দেয়া বাসের আঘাতে চোখ চিরতরে বুজে আসার আগের মূহুর্তেও -
এই স্বপ্ন ভেঙ্গে যাওয়া রুটিনটার বাত্যয় ঘটেনি।
লাশ কাটা ঘরে ব্যবচ্ছেদের অপেক্ষায় পড়ে থাকা একা লাশটার ময়নাতদন্তে এতটুকু লিখবার পর কিছুটা থমকে দাঁড়ালেন লেখক,
এ কী? এ তো ...
নাহ! তা কি করে হয়?
অতীত বর্তমানে ফিরে আসতেই পারে , হোক না অন্য কারো মৃতদেহে ভর করে, একলা লাশ কাটা ঘরে।
অন্ত্যমিলটুকুন খুঁজে পাবার পরই কবির ময়নাতদন্ত স্পৃহাতে ভাঁটা পড়ে এসেছে বেশ খানিকটা, এবার তবে কবিতার সমাপ্তি টানা যায়।
কবিতা কল্পনায় জন্মায় বলেই ধরে নিচ্ছি লাশ কাটা ঘরের মুঠো খোলা হাত-
কিছু না পেয়েও এই শেষবেলায় কবির সামান্য সহানুভূতি পেয়েছে, হাতের উষ্ণতার স্পর্শে।
রোজ-কাল-দিনে এমন হাজারো হাত তো একলাই চলে যায়, এই কবিতা তাদের পাশ কাটিয়ে কেবল শেষবেলা শান্তি পাওয়া লাশটার জন্যে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।