আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সমাজকর্মের পরীক্ষার ১৪ খাতা নিখোঁজ, আটকে আছে ফল

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার ১৪টি খাতা হারিয়ে গেছে। এতে আট মাস ধরে ওই বর্ষের পরীক্ষার ফল স্থগিত রয়েছে। এ ছাড়া ফল প্রকাশ না হওয়ায় এর প্রভাব পড়ছে বিভাগের অন্যান্য বর্ষেও। বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, তৃতীয় বর্ষের (২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষ) চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হয় গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর। শেষ হয় ৯ নভেম্বর।

তিন মাসের মধ্যে পরীক্ষার ফল প্রকাশের কথা থাকলেও বিভাগ ফল প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়। শিক্ষার্থীরা ফলাফলের ব্যাপারে একাধিকবার বিভাগের কাছে জানতে চাইলেও বিভাগের পক্ষ থেকে তেমন কিছুই জানানো হয়নি। তাঁদের কেবল জানানো হয়েছে, একটা সমস্যার কারণে ফল প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তবে কী সমস্যা, তা কখনো জানানো হয়নি। শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা মৌখিকভাবে কালের কণ্ঠের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই বর্ষের পরীক্ষার 'সামাজিক পরিসংখ্যান পরিচিতি' (কোর্স নম্বর ৩০৪) কোর্সের ১৪টি খাতা হারিয়ে গেছে। তবে কার কাছ থেকে হারিয়ে গেছে, তা নিশ্চিত জানা যায়নি। বিভাগের একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি, খাতা প্রশাসন ভবনের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তর থেকে হারিয়েছে। খাতা হারানোর বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে একাধিক বৈঠক হলেও কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি একাডেমিক কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে একাডেমিক কমিটিতে এখনো কোনো সভা হয়নি বলে জানা গেছে। এদিকে খাতা হারানোর কারণে তৃতীয় বর্ষের পাশাপাশি চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরাও বিপাকে পড়েছেন। কারণ চতুর্থ বর্ষের প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী তৃতীয় বর্ষের সঙ্গে একই কোর্সে মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিয়েছেন। এখন তাঁদের পরীক্ষার ফলও আটকে রয়েছে। এ ছাড়া চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা ৯ মাস আগে শেষ হলেও মানোন্নয়নের ফলাফলের অভাবে তাঁদের বিএসএস সম্মানের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে এখন যাঁরা তৃতীয় বর্ষে রয়েছেন, তাঁদের পরীক্ষা সঠিক সময়ে অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সমাজকর্ম সেশন জটমুক্ত বিভাগ। এ বিভাগে তিন মাসের মধ্যেই ফল প্রকাশ হয়। কিন্তু বর্তমান সংকটের কারণে আমরা বেশ কয়েক মাস পিছিয়ে পড়েছি। এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি দ্রুত ফল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

তা না হলে, তাঁরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন বলেও জানিয়েছেন। ওই বর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গোলাম কিবরিয়া ফেরদৌস কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা এমন একটা সংকটে পড়েছি, যা এর আগে কখনো হয়নি। তবে খাতা হারিয়ে গেছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। ওই কোর্সের শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস এবং কোর্সের দ্বিতীয় পরীক্ষক এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তর থেকে খাতা হারানোর ব্যাপারে কোনো লিখিত অভিযোগ এখন পর্যন্ত কেউ করেনি।

তাই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারব না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।