বলিউডের অভিনেতা সালমান খানের বিরুদ্ধে গাড়ি চাপা দিয়ে মানুষ হত্যার মামলা নতুন মোড় নিল। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪(৩) ধারায় সালমানের বিচার-কার্যক্রম চলবে বলে আদেশ দিয়েছেন মুম্বাই সেশন কোর্ট। আজ সকালে সালমানের উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন আদালত।
সালমানের মামলার বিচার-কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিচারকও পরিবর্তন করা হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ১৬ আগস্ট।
তবে কাজের প্রচণ্ড ব্যস্ততার কারণে সামনে এ মামলার শুনানিতে হাজিরা না দিলেও চলবে ৪৭ বছর বয়সী এই তারকা অভিনেতার। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে ইন্দো-এশিয়ান নিউজ।
দুই বোন অর্পিতা এবং আলভিরাকে নিয়ে আজ সকালে আদালতে হাজির হন সালমান। সে সময় তাঁর পরনে ছিল গাঢ় ছাই রংঙের শার্ট এবং নীল পায়জামা। শুনানির পুরোটা সময় বেশ গম্ভীর দেখাচ্ছিল তাঁকে।
মুম্বাই সেশন কোর্টের বিচারক ইউ বি হেজিব গত ২৪ জুন জানিয়েছিলেন, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪(২) ধারায় সালমানের বিচার-কার্যক্রম চলবে। কিন্তু নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন থেকে ৩০৪(৩) ধারায় তাঁর বিচার কার্যক্রম চলবে। এই ধারায় সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
এর আগে একই মামলায় হাজিরা দিতে ১৯ জুলাই শুক্রবার দুই বোনকে নিয়ে আদালতে হাজির হয়েছিলেন সালমান। সেখানে যাওয়ার পর সর্বসাধারণের জন্য বরাদ্দকৃত বেঞ্চে বসতে গিয়ে তিনি বিচারকের বাধার মুখে পড়েন।
বিচারকের নির্দেশ অনুযায়ী আসামির জন্য বরাদ্দ করা বেঞ্চে বসতে হয় বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় এ তারকাকে।
মামলার কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর সালমানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র উত্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। তিনি দাবি করেন, দুর্ঘটনার সময় মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন সালমান। তাঁর এহেন খামখেয়ালির জন্য একটি তাজা প্রাণ ঝরে যায়। এ ছাড়া আহত হন ফুটপাতে ঘুমিয়ে থাকা নিরীহ চারজন মানুষ।
২০০২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ভোররাতে বান্দ্রায় একটি বেকারির সামনে ফুটপাতে ঘুমিয়ে ছিলেন পাঁচজন হতদরিদ্র মানুষ। ওই সময় সালমানের টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার গাড়িটি তাঁদের চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনায় একজন নিহত ও চারজন আহত হন।
দুর্ঘটনার সময় সালমানের সঙ্গে গাড়িতে ছিলেন তাঁর দেহরক্ষী (পুলিশ) প্রয়াত রবীন্দ্র পাতিল। তিনি বারবার সালমানকে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি না চালাতে অনুরোধ করলেও তা শোনেননি মাতাল সালমান।
তিনি ঘণ্টায় প্রায় ১০০ কিলোমিটার গতিবেগে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুটপাতের ওপর ঘুমন্ত লোকজনকে চাপা দিলে ওই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
অবশ্য বরাবরই সালমানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, দুর্ঘটনার সময় তিনি চালকের আসনে ছিলেন না। ২০০৫ সালে সালমানের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। কোনো এক অজানা কারণে তাঁর প্রতি নমনীয় আচরণ করেন আদালত।
বেপরোয়া ও অসতর্কভাবে গাড়ি চালানোর কারণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে রায় দেওয়া হয়। ভারতীয় পেনাল কোডের ৩০৪(১) ধারায় এ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা মাত্র দুই বছরের কারাদণ্ড।
পরবর্তী সময়ে ২০১১ সালে সালমানকে কঠোর সাজা দেওয়ার দাবি তোলা হয় মুম্বাই পুলিশের পক্ষ থেকে। পরে মামলার বিচার কার্যক্রম আবার শুরু হয়। যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়ার পর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪(২) ধারায় সালমানের সাজা হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানানো হয় আদালতের পক্ষ থেকে।
গুরুতর এ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের কারাদণ্ড। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।