আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টিয়া আমার একলা টিয়া

প্রাণখোলা হাসি সবচেয়ে ভালোবাসি ছোট বেলায় মিনা কার্টুন দেখে অনেক ইচ্ছা হতো,ইশশ্‌,আমারও যদি এমন একটা টিয়া থাকত, আমার নাম নিয়ে গান গাইতে গাইতে মাথার চারপাশে উড়াউড়ি করত। ইচ্ছাপূরন হলো একদিন। বাবা নিয়ে এলো একটা টিয়া। এক্কেবারেই বাচ্চা টিয়া। মা অভিযোগ করলেন কড়া স্বরে, কেন এই অপ্রয়োজনীয় ঝামেলা? যেই না বাচ্চা টিয়াটাকে দেখলেন, তার কণ্ঠস্বর নরম হয়ে এলো।

খাঁচায় তাকিয়ে বুঝতে পারলাম মিনা র মিতু আর আমার টিয়ার মধ্যে পার্থক্য কোথায়। আমার ছোট্ট পাখিটা তার এই পিঞ্জর থেকে বের হবার প্রাণপ্রণ চেষ্টা করছিল, খাঁচার লোহায় মাথা ঘষে ঘষে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছিল। একবার মনে হলো,মুক্তি দেই টিয়া পাখিকে। কিন্তু, পাখি পোষার অদম্য ইচ্ছা আমার হাতকে খাঁচার দরজা পর্যন্ত আসতে দিল না । পাখির যত্ন অনেক নিতাম আমি।

পাখির মন পাবার চেষ্টা করতাম। সময় মত খাবার দিতাম,কিন্তু খেতে চাইত না । এক এক মানুষ এসে এক এক পরামর্শ দিত, কাজ হতো না। দিন দিন আমার পাখির শরীর শুকিয়ে এল, পাখিটা যে সামান্যতম ডাকাডাকি করত তাও বন্ধ করে দিল। যেন আমার প্রতি তার ভীষণ রাগ! একদিন বাবা আবিষ্কার করলেন, টিয়ার মাথায় পালকের নিচে একটা বড় রকমের ঘা হয়ে গিয়েছে।

বললেন, "পাখিটা ছেড়ে দাও, ওকে বাঁচানো যাবে না, বনের পাখি, বনেই চলে যাক, তোমার কাছে মারা গেলে আল্লাহ পাপ দিবেন। " আমার কান্না দেখে কে তখন, পাখি ত উড়তে পারে না, বেজি খেয়ে ফেলবে, সাপ খেয়ে ফেলবে আমি কেমন করে ওকে এভাবে সারাজন্মের মুক্তি দেই? শেষ পর্যন্ত বাবার কথাই মানলাম, আমার প্রথম পোষা পাখিটাকে মৃত্যুপথে একলা রেখে চলে এলাম। পাখিটা এখনো বেঁচে আছে কিনা জানি না। শুধু চোখে ভাসে, ছোট্ট পাখিটা একপা দুইপা করে গাছের ডাল বেয়ে পাতার আঁড়ালে হারিয়ে গেল। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।