নিজের জন্য সব গ্লাণী, সবার জন্য ভালোবাসা। মওলানা আকরম খাঁ
উপমহাদেশের প্রখ্যাত ইসলামী ব্যক্তিত্ব, রাজনীতিক ও সাংবাদিক মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ ১৮৬৮ সালের ৭ জুন পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশপরগনায় জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বেশি ছিল না। তবে নিজ চেষ্টায় বাংলার মুসলমানদের সংস্কৃতি ও ইতিহাসে প্রভূত পাণ্ডিত্য অর্জন করেন।
খুব অল্প বয়সেই সাংবাদিক হিসেবে তিনি পেশাগত জীবনে পা রাখেন এবং আহলে হাদিস ও মোহাম্মদী আখবর নিয়ে কাজ করেন।
১৯০৮-২১ সাল পর্যন্ত তিনি মাসিক মোহাম্মদী এবং আল ইহসান পত্রিকায় ছিলেন। পরে ১৯২০ এবং ১৯২২ সালের মধ্যে জামানা এবং সেবক নামে দুটি পত্রিকাও তিনি বের করতেন। সরকারবিরোধী লেখালেখির জন্য সেবক পত্রিকাটি পরে বন্ধ করে দেয়া হয় এবং আকরম খাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৩৬ সালে হালের একমাত্র বাংলা দৈনিক আজাদ তিনি প্রকাশ করেন বাংলায় ১৯৪৭-পূর্ব মুসলিম লীগকে সমর্থনের উদ্দেশ্য নিয়ে। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সমর্থক হিসেবে তিনি রাজনীতিতে যাত্রা শুরু করেন।
১৯০৬ সালে মুসলিম লীগ গঠনকালে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। ১৯১৮-২৪ সাল পর্যন্ত তিনি অসহযোগ এবং খেলাফত আন্দোলনে জড়িত ছিলেন। ১৯২০ সালে খিলাফত কমিটির সেক্রেটারি নির্বাচিতি হন ঢাকার আহসান মঞ্জিলের এক সভায়। হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির প্রবক্তা হিসেবে তিনি চিত্তরঞ্জন দাসের স্বরাজ পার্টি সমর্থন করতেন। তবে ১৯২৬-২৭ সালে সংঘটিত ধর্মীয় দাঙ্গায় তিনি স্বরাজ পার্টি ও কংগ্রেসের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেন এবং দল ত্যাগ করেন।
১৯২৯-৩৫ সাল পর্যন্ত কৃষক রাজনীতিতে (প্রজা) জড়িত ছিলেন। ১৯৩৬ সালে মুসলিম লীগে যোগ দেন। ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত এর কেন্দ্রীয় কার্যসভার একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন।
দেশভাগের পর তিনি ঢাকায় চলে আসেন এবং এখানেই স্থায়ী হন। সমস্যা ও সমাধান, মোস্তফা চরিত, আমপারার বঙ্গানুবাদ তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা।
মোসলেম বাংলার সামাজিক ইতিহাস তাঁর একটি বিখ্যাত গ্রন্থ। এখানে তিনি আকবরের দ্বীন-ই-ইলাহির সমালোচনা এবং আওরঙ্গজেবের গৃহীত ধর্মীয় পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। তার প্রতিষ্ঠিত দৈনিক আজাদ ১৯৬০-এর দশক পর্যন্ত প্রভাবশালী পত্রিকা হিসেবে রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৬১ সালের ১৮ আগস্ট বংশালে তিনি ইন্তেকাল করেন। এখানকার আল হাদিস মসজিদ প্রাঙ্গণে তিনি শায়িত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।