আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আবেগহীন আমলে সওয়াব বেশি

আবেগহীন আমলে সওয়াব বেশি অনেক লোক এ চিন্তায় অস্থির থাকে যে, নামাযে মজা আসে না। আবেগ-উদ্দীপনা যদি সৃষ্টি হয় না। ভাই! মজা তো উদ্দেশ্যই নয়? মূখ্য উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহর সন্তুষ্টি। তা যদি হয়, তাহলে নিশ্চিন্ত হয়ে যাও। বরং হযরত থানবী রহ. বলেন যে, কোনো কোনো সময় যে ব্যক্তি আমলের মধ্যে অনেক বেশি স্বাদ পায়, তার তুলনায় ঐ ব্যক্তির আমলের সওয়াব বেশি হয়, যে ব্যক্তি মন না চাইলেও কষ্ট করে আমল করে এবং তার আমলের মধ্যে একেবারেই স্বাদ পায় না।

দলিল ওই হাদীস, যাতে হুযূর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনÑ اسباغ الوضوء على المكاره.......فذلكم الرباط অর্থাৎ, যে লোক ঐ সময় সুন্দর করে অযু করে, যে সময় অযু করা খুবই কষ্টকর ও পীড়াদায়ক, সে জিহাদের সওয়াব পায়। যেমন প্রচন্ড শীতের মৌসুম, বরফ পড়ছে, পানি খুবই ঠান্ডা, গরম পানির কোন ব্যবস্থা নাই, নামাযের সময় হয়ে গিয়েছে, এমন সময় ঠান্ডা পানি দ্বারা অযু করা খুবই কষ্টকর মনে হয়। কিন্তু এতদসত্ত্বেও যে ব্যক্তি আল্লাহর হুকুম মনে করে অযু করবে, তার এ আমল জিহাদে গিয়ে রাতের বেলা সীমান্ত পাহারা দেওয়ার মতো বলে গণ্য হবে। এখন বলুন! এ অযুতে সে কি কোন মজা পেয়েছে? বোঝা গেলো, মন না চাইলেও আমল করলে কোনো কোনো সময় ঐ আমলের চেয়ে সওয়াব বেড়ে যায়, যা আবেগ-উদ্দীপনার সাথে করা হয়। কারণ, আবেগ-উদ্দীপনার সাথে করা আমলে কষ্ট হয় না।

যার নামাযে মজা আসে না তাকে মুবারকবাদ এ জন্য হযরত গাঙ্গুহী রহ. বলতেন- ‘আমি ঐ লোককে মুবারকবাদ দেই, যে কিনা সারা জীবন নামায পড়েও মজা পায়নি; এরপরেও সে আল্লাহ তাআলার পালনার্থে নামায পড়েছে। ’ কারণ, নামাযের মধ্যে মজা আসা তো ভালো, কিন্তু এতে আশঙ্কা আছে যে, হতে পারে সে মজার জন্যে নামায পড়েছে, আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে নয়। যদ্দারা ‘ইখলাস’ হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। দ্বিতীয় কথা এই যে, নামাযের মধ্যে যখন অধিক মজা লাগতে থাকে, তখন নামাযীর মধ্যে আত্মশ্লাঘা জন্মাতে থাকে। এ রকম খেয়াল হতে থাকে যে, ‘আমি তো এ মাকামে পৌঁছে গেছি’।

তখন আত্মশ্লাঘায় লিপ্ত হয় যে, আমি তো বুযুর্গীর উচ্চ মাকামে পৌঁছে গেছি। আমি তো আল্লাহওয়ালা হয়ে গিয়েছি। ইবাদত আমার স্বভাবে পরিণত হয়েছে। ইবাদতের মধ্যে মজা আসার দরুণ মানুষের মধ্যে এ সব খারাবি পয়দা হয়। পক্ষান্তরে যার নামাযে মজাই আসে না, তার মনে এ সব খেয়াল আসবে কোত্থেকে? তার তো সর্বদা এই ভয় থাকবে যে, আমার নামায আবার আমার মুখেই ছুঁড়ে মারা না হয়।

( হযরত মাওলানা জালালুদ্দিন সাহেবের বই "ইসলামী আকীদা-বিশ্বাস ২" হতে নেয়া ) http://www.maktabatulashraf.net/  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।