অজানাকে জানতে ছুটছি অবিরাম...!
অল্পদর্শী
বিশ্বখ্যাত গণমাধ্যম বিবিসির বিপুলসংখ্যক কর্মী জড়িয়ে পড়ছেন নানা অপরাধের সঙ্গে। এর মধ্যে রয়েছে ড্রাগ ও অ্যালকোহলের বেপরোয়া অপব্যবহার, চৌর্যবৃত্তি, পর্নোচিত্র প্রদর্শন এবং অসদাচরণের মতো অপরাধ। সেইসঙ্গে আছে যৌন হয়রানির অভিযোগও। বিশেষ করে মাদক জেঁকে বসেছে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের মধ্যে। একটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে, বছর দুয়েক আগে বিবিসির উপস্থাপক নাতাশা কলিন্স অতিরিক্ত কোকেন গ্রহণ এবং মদপানের ফলে মারা যান।
এর তিন মাস পরই ভগ্নহৃদয় বাগদত্ত মার্ক স্পেইটের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। সূত্র বিবিসি, সানডে নিউজ পেপার
বিবিসি তাই এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছে সংস্থাটির শৃঙ্খলা রক্ষায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিবিসির কয়েকশ কর্মীকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে। গত পাঁচ বছরেই এ সংখ্যা চারশর ওপরে। ২০০৬ সালের এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত ৪১০টি অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়েছে।
যার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিভিন্ন ধরনের সাজা দেয়া হয়। এর মধ্যে মাদক গ্রহণের জন্য ১১ জনকে তিরস্কার করা হয়েছে। ধারণা করা হয়, এরা কোকেন, অ্যালকোহলের মতো বিপজ্জনক মাদকে আসক্ত। ১৪ জনকে দায়ী করা হয়েছে অসদাচরণের জন্য। মজার ব্যাপার হলো, ১৯ জন জড়িত ছিলেন চৌর্যবৃত্তিতে।
সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম চুরির অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এছাড়া কয়েকজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে বিবিসির যন্ত্রপাতির অপব্যবহারের। সংস্থার কম্পিউটারে পর্নো ছবি দেখার অভিযোগ আনা হয়েছে এদের বিরুদ্ধে। আর খুব বেশি অভিযোগ অসদাচরণের। এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে ১১৯টি।
এসব অপরাধে জড়িতদের বিভিন্ন ধরনের সাজাও দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বিবিসিতে ‘মাদক সংস্কৃতি’র বিষয়টি সবেেচয়ে বড় হয়ে দেখা দেয় নাতাশার মর্মান্তিক মৃত্যুর পর। নাতাশা কলিন্স (৩১) ছিলেন বিবিসির শিশু বিষয়ক অনুষ্ঠানের সাবেক উপস্থাপক। তার বাগদত্ত ও সহকর্মী টিভি উপস্থাপক মার্ক স্পেইটের সঙ্গে এক পার্টিতে অতিরিক্ত কোকেন গ্রহণের ফলে তিনি মারা যান। সেটি ২০০৮ সালের জানুয়ারি মাসের ঘটনা।
অবাধ তথ্য অধিকার ঘোষণার পরই এসব অপরাধের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে বলে এখন বলা হচ্ছে। এসব ঘটনায় বৃটেনে এখন ব্যাপক সমালোচনা চলছে। প্রশ্ন উঠেছে বিবিসির মতো একটি বিশ্বনন্দিত ও প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে কীভাবে এসব অপসংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়ছে? তারা বলছেন, ড্রাগ চর্চার জন্য প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট হচ্ছে, যা অনাকাক্সিক্ষত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, সব কর্মীর জন্য ড্রাগ পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা দরকার।
বিবিসির কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, এ ধরনের ঘটনা খুবই বিরল।
সারা পৃথিবীতেই বিবিসির অগণিত কর্মীর মধ্যে এ সংখ্যা খুব বেশি নয়। তবু করপোরেশনের ভাবমূর্তি ধরে রাখার স্বার্থে এটা নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। কর্তৃপক্ষ সে ব্যবস্থাও নিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। বিবিসির একজন মুখপাত্র বলেন, সংস্থাটি তার মান ও ভাবমূর্তি নষ্ট হতে দেবে না। কর্মীদের কাছ থেকে কর্তৃপক্ষ শুধু নয়, সাধারণ মানুষও ভালো আচরণ আশা করে।
তাই কর্তৃপক্ষ অসদাচরণের সব অভিযোগ বিবেচনায় নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। পেশাগত মান বজায় রাখাই প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য বলে তিনি মন্তব্য করেন।
দেখা গেছে, বিবিসির কর্মীদের মধ্যে সম্প্রতি মাদক ও সহকর্মীদের প্রতি অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রবণতা বেড়েছে। বিশেষ করে নারীরা বিভিন্ন সময় পুরুষ সহকর্মীদের দ্বারা নাজেহাল হচ্ছেন। যদিও সরাসরি কোনো যৌন হয়রানির অভিযোগ এখনো নথিভুক্ত হয়নি।
কিন্তু এ ধরনের ঘটনার কথা মুখে মুখেই ছড়িয়ে পড়েছে। অন্যদিকে নারী কর্মীরাও ড্রাগসহ পর্নোচিত্র দেখায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। যাতে করে নষ্ট হচ্ছে কর্ম সময় ও মেধা এবং পরিবেশ। বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করছে না কেউ। এ পরিস্থিতিতে বিবিসি এখন ঘর সামলাতে ব্যস্ত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।