নতুন ব্লগার হিসাবে আছি....... চট্টগ্রামে কালকের হরতাল প্রত্যাহারের আহ্বান, মাওলানা শফীর প্রত্যাখ্যান
সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হেফাজতে ইসলামের আমির, বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড সভাপতি আল্লামা শাহ্ আহমেদ শফীকে গতকাল হরতাল প্রত্যাহারের আহ্বান জানালে তিনি তা নাকচ করে দেন। আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী সরকারি কর্মকর্তাদের জানান, ওলি-আউলিয়া ও পীর-মাশায়েখের পুণ্যভূমি চট্টগ্রামের পবিত্র মাটিতে ইসলাম ও আল্লাহ-রাসুলের জঘন্য কটূক্তিকারী শাহবাগি নাস্তিকদের প্রতিহত করা হবে। ১৩ মার্চ (আগামীকাল) চট্টগ্রামে কঠোর হরতাল পালন হবে এবং লাখ লাখ তৌহিদি জনতা রাস্তায় অবস্থান করে রাসুল (সা.) অবমাননাকারী নাস্তিকদের প্রতিহত করবে। এই পবিত্র ভূমিতে আল্লাহর দুশমনদের প্রবেশ করার যে কোনো প্রচেষ্টা সর্বাত্মকভাবে প্রতিহত করতে হবে। এটা কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়।
সরকারের বা কোনো দলের পক্ষে-বিপক্ষের কর্মসূচি নয়। এটা আল্লাহ, আল্লাহর রাসুলের (সা.) ইজ্জত রক্ষার কর্মসূচি।
গতকাল বিকাল ৩টায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক এমএ মান্নান, জেলা পুলিশ সুপার হাফিজ আক্তার, এসপি ডিএসবি রবিউল ইসলাম, হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশরাত জাহান পান্না, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) হাফিজ আক্তারসহ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসায় আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন। তারা আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীর সঙ্গে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও মতবিনিময় করেন।
তিনি বলেন, ১৩ মার্চ শাহবাগি নাস্তিকরা চট্টগ্রামে প্রবেশের চেষ্টা করলে তৌহিদি জনতা কঠোর হরতাল ও অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের প্রতিহত করবে।
আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী বলেন, পবিত্র ইসলাম ধর্ম ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব মুসলমানের নয়নমণি রাসুলের (সা.) বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র ও কটূক্তিতে একজন সাধারণ মুসলমানও নীরব থাকতে পারেন না। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনারাই বলছেন চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আছে এবং দেশের অন্যান্য শহর থেকে এখানে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। তাহলে পাঁচ দশজন নাস্তিককে চট্টগ্রামে এনে কেন কোটি মানুষের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে অশান্ত করার প্রয়াস চলছে? আপনারা সরকারকে জানান চট্টগ্রামের মানুষ নাস্তিকদের গ্রহণ করবে না।
জেলা প্রশাসক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীকে তাদের সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়ে বলেন, আমরা সার্বিক পরিস্থিতি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলকে জানাবো।
এদিকে বিকাল ৪টায় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক এম.এ. সালাম, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রফেসর মুহাম্মদ ইসমাঈল আল্লামা শাহ্্ আহমদ শফীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেন।
এ সময় নেতারা শাহবাগি আন্দোলনের নেতা ডা. ইমরান এইচ সরকার যাতে ১৩ তারিখ চট্টগ্রামে সমাবেশ করতে না আসে সে জন্য চেষ্টা করবেন বলে আশ্বাস দেন।
আরেকটি খবর
শাহবাগিদের আর চট্টগ্রাম যেতে হলো না : কাল প্রেস ক্লাব চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি
শাহবাগিদের আর চট্টগ্রামে যেতে হলো না। আগামীকাল শাহবাগিদের পূর্বনির্ধারিত সমাবেশস্থলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। শাহবাগিদের পাশাপাশি তৌহিদি জনতার জনপ্রিয় সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ঘোষিত সমাবেশস্থলেও ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এতে শাহবাগিদের মুখরক্ষা হলেও এটাকে হেফাজতে ইসলামের সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।
শাহবাগিদের প্রতিহত করার ঘোষণার মুখে এই প্রথম সরকারের মদতপুষ্ট কথিত গণজাগরণ সমাবেশে ১৪৪ ধারা জারি করা হলো।
শাহবাগিদের গণজাগরণ মঞ্চ ১৩ মার্চ চট্টগ্রামে সমাবেশ করতে চাইলে তা প্রতিরোধ করার ঘোষণা দেয় হেফাজতে ইসলাম। এদিন চট্টগ্রামে হরতাল ঘোষণা করা হয়। শাহবাগিদের ঘোষিত সমাবেশস্থলেও সমাবেশ করার ঘোষণা দেয় হেফাজতে ইসলাম।
এতে প্রথমেই বড় ধরনের ধাক্কা খায় শাহবাগিরা।
তারা প্রথমে লালদীঘিতে সমাবেশ করার ঘোষণা দিলেও পরে অবস্থান পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়। কিন্তু চট্টগ্রামের ধর্মপ্রাণ মানুষ তাদের প্রতিহত করতে পারে বলে ব্যাপকভাবে আশঙ্কা থাকায় শাহবাগিদের মুখরক্ষায় এগিয়ে এলো প্রশাসন।
গতকাল চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম এক আদেশে লালদীঘি মাঠ, জামালখান প্রেস ক্লাব চত্বর, পুরাতন রেল স্টেশন চত্বর ও জেলা পরিষদ চত্বরে ১৩ তারিখ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। হরতালের পাশাপাশি এসব স্থানে সমাবেশ করার জন্য পুলিশের অনুমতি চেয়েছিল হেফাজতে ইসলাম।
শাহবাগি নাস্তিক ব্লগারদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে চট্টগ্রাম : ইসলামবিদ্বেষী শাহবাগি নাস্তিক ব্লগারদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে চট্টগ্রাম।
ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে বারো আউলিয়ার পুণ্যভূমি ও বীর চট্টলা হিসেবে খ্যাত এই জনপদের লাখো তৌহিদি জনতা। ‘ধর্মবিদ্বেষীদের আস্তানা, চাটগাঁর বুকে হবে না’—চট্টগ্রামের সর্বত্র এখন এটাই আওয়াজ। এই স্লোগান এখন মুখে মুখে। আলেম-ওলামাদের নেতৃত্বে ধর্মপ্রাণ তৌহিদি জনতা কাল চট্টগ্রামে ইসলামবিদ্বেষীদের প্রতিরোধে সর্বাত্মক হরতালের প্রস্তুতি নিয়েছেন। তারা ধর্মবিদ্বেষী নাস্তিক ব্লগার প্রতিরোধ করতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করে বলেছেন, ‘তাদের আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে নয়, মহানবী (সা.)-কে যারা কুরুচিপূর্ণ ভাষায় আক্রমণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে।
নবীদ্রোহীদের সমর্থন করাও নবীদ্রোহিতার শামিল। মহানবীর কোনো উম্মত তাদের সমর্থন করতে পারে না। যারা তাদের সমর্থন দেবে তাদেরও প্রতিরোধ করা হবে। ’
শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরের উদ্যোক্তারা কয়েকদিন আগে চট্টগ্রামের লালদীঘি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩ মার্চ সমাবেশের ঘোষণা দেয়। এতে কথিত গণজাগরণ মঞ্চের নেতা ইমরান এইচ সরকার উপস্থিত থাকবেন বলে জানানো হয়।
এ ঘোষণার পরপরই চট্টগ্রামে ছড়িয়ে পড়ে ক্ষোভ। তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে শনিবার শীর্ষ আলেম-ওলামাদের সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বুধবার সমাবেশের দিন হরতাল আহ্বান করে চট্টগ্রামে। হরতাল কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে শাহবাগিরা লালদীঘির সমাবেশ থেকে সরে এসে সমাবেশ ডাকে জামালখান প্রেস ক্লাব চত্বরে। হরতালের পরও তারা সমাবেশের সিদ্ধান্তে অটল থাকায় হেফাজতে ইসলাম একই স্থানে পাল্টা সমাবেশ এবং ইমরান এইচ সরকারকে যেখানে দেখা যাবে সেখানেই প্রতিহতের নতুন কর্মসূচি দিয়েছে।
গতকাল চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলাম নেতারা বলেন, শাহবাগের কথিত গণজাগরণ মঞ্চ থেকে ইসলামবিরোধী কার্যকলাপ চালানো হচ্ছে।
সেখান থেকে আল্লাহ ও নবীকে নিয়ে কটূক্তি করা হয়েছে। এছাড়া নিহত রাজীব হায়দারসহ শাহবাগিদের অনেকে নবীকে নিয়ে নানা রকম অবমাননাকর মন্তব্য করলেও সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ইসলামের প্রবেশদ্বার বারো আউলিয়ার পুণ্যভূমি চট্টগ্রামের মাটিতে নাস্তিক ব্লগার ও তাদের সহযোগীদের আস্ফাালন নবীপ্রেমিক জনতা মেনে নিতে পারে না। ইসলাম রক্ষার জন্য তাই বাধ্য হয়ে এ কর্মসূচি দিতে হয়েছে।
হেফাজতে ইসলাম নেতারা জানান, তারা যে কোনো মূল্যে কাল জামালখানে সমাবেশ করবেন।
একই সঙ্গে ইমরান এইচ সরকারকে যেখানে দেখা যাবে সেখানেই প্রতিহত করা হবে।
সূত্র সরসরি কপিপেস্ট ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।