লেখালেখিই হোক আমার জীবন... ‘
প্রতিদিনের মত সে রাতেও ছিল মিস্টি চাঁদের আলো। অদিতি নিত্যকার অভ্যাসমত সেদিনও নামায আদায় করে অর্পকে নিয়ে ঘুমাতে গেল। অর্প অদিতির মেয়ে। দেখতে ভারি মিস্টি, চাঁদের মত মুখ, ফুলের মত সুন্দর আর পবিত্র। মনে হয় বিধাতার কি অপূর্ব সৃস্টি!মাঝে মধ্যে খুব ঈর্ষা হয় , যদি ওর মত হতে পারতাম!!
ভোররাতে অর্প হঠাত কিসের যেন শব্দ শুনতে পায়।
সুন্দর সেই সুর। আর তাতে সাড়া দিতেই অর্প বেড়িয়ে পড়ে। উঠানে চাঁদের আলোয় সে একটি খরগোশ দেখতে পায়। সে মনে মনে বলে,“কি সুন্দর!”
সাথে সাথে খরগোশটি বলে , “কি ভাবছ? এসো, আমরা খেলতে যাই”।
অর্প তার মুখের কথা শুনে আরো অবাক হয়।
“তুমি কথা বলতে পার? কথায় খেলতে যাব? আমিতো চিনিনা”- সে জিজ্ঞাসা করে।
“তোমাকে চিনতে হবেনা। এসো আমার সাথে”-খরগোশটি বলে।
অর্প তার সাথে হাটতে হাটতে বাগানের মধ্যে এল। সে দেখলো সেখানে আরও কয়েকটি খরগোশ এবং তাদের ছানা।
এরপর তারা চাঁদের আলোয় লুকোচুরি খেলতে গেল। খেলতে খেলতে ক্লান্ত হয়ে একপর্যায়ে সে ঘুমিয়ে পড়ল কামিণী ফুল্ গাছের নিচে। এদিকে ভোর হয়ে গেল এবং খরগোশগুলো লুকিয়ে গেল তাদের আস্তানায়।
ঘুম থেকে উঠে দেখে সে ফুল গাছের নিচে আর চারদিকে শুধু ফুল আর ফুল এবং অসংখ্য প্রজাপতির নাচানাচি।
কি সুন্দর প্রজাপতি! আমি যদি প্রজাপতির মত উড়তে পারতাম।
–অর্প চিন্তা করে।
কি অদ্ভুত ব্যাপার!! অর্প সাথে সাথে প্রজাপতি হয়ে যায়, সবুজ রঙের প্রজাপতি । অর্প অবাক হয়ে যায়, এসব কি হচ্ছে! যাই হোক, অর্প প্রজাপতি হয়েতো মহা খুশি। মনের সুখে উড়ে বেড়াচ্ছে এফুল থেকে ও ফুলে, এ ডাল থেকে ও ডালে। কখনোবা শূন্য আকাশে উড়ছে আর মনের সুখে গান গাইছে।
অর্পর ইচ্ছা হয় দীর্ঘক্ষন নীলাকাশে উড়তে। সে চেস্টা করে দেখে পারে কি না।
আশ্চর্যজনকভাবে সে আকাশে স্বাধীনভাবে উড়ছে। উড়তে উড়তে সে মেঘের দেশে চলে যায় সে। কি সুন্দর নীলাকাশে সাদামেঘ।
যদি মেঘ দিয়ে ঘর বানাতে পারতো!! অমনি ঘর তৈরি হয়ে যায়। ঘরে প্রবেশ করে অর্প আরও অবাক হয়। কি সুন্দর সাজসজ্জা। কোথায় যেন গান মিস্টি সুরে।
অর্প ভাবে , এখানে এবার গান এল কোথা থেকে?
সাথে সাথে উত্তর আসে, এটা বাতাসের সুর তোমাকে স্বাগত জানানোর জন্য।
অর্প শুধু শব্দ শুনে কিন্তু কিছুই দেখতে পায়না।
সে প্রশ্ন করে করে আমাকে স্বাগত জানাবে কেন?
অদৃশ্য সুর জবাব দেয়, তুমি এখানে এসেছ তাই। তোমার জন্য শত শতাব্দী ধরে অপেক্ষা। তুমি আসবে বলে। কখন আমরা তোমায় প্রানের সুরে পূর্ন করতে পারব? আমাদের সে স্বপ্ন সে আশা আজ পূর্ন তোমার আগমনে।
আমার জন্য তোমারা অপেক্ষা করেছিলে কেন? আর শত শতাব্দীপূর্বে তোমরা জানতে কিভাবে যে আমি আসব?- সে জানতে চায়।
জবাব এল, তোমাকে বুঝতে হবেনা । তুমি একজন ‘অ’। পৃথিবীতে মোট তিনজন ‘অ’ আছে। তুমি তাদের একজন ।
অন্য দুজন কারা?-অর্প প্রশ্ন করে।
অন্য দুজন হচ্ছে, অর্ঘ আর অদিতি। একমাত্র তুমি পূর্ন অ। আর পরে আরও দ’জনঅ আসবে। তোমার মেয়েরা ,অনামিকা আর অভ্র।
অর্প অবাক হয়। তাই নাকি? আচ্ছা এদের কাজ কি ?
‘অ’দের কাজ হচ্ছে বিনির্মান করা। আর এদের বিশেষত্ব হচ্ছে এরা যা চাইবে তাই হবে। তবে একটি ক্ষেত্রে সীমাবধ্যতা আছে সেটি হল, তুমি একজনকে তোমার মন দিয়ে তৈরি করতে পারবে। সেক্ষেত্রে মন একটাই থাকবে কিন্তু দু’জনার।
আমাদের কেউ মৃত নই, আমাদের মৃত্তু নেই। আমাদের আত্মা সর্বদা বিরাজ করে। যেখনেই অন্যায়, অত্যাচার আর দুর্নীতি সেখানেই ছুটে যাই আম্রা। যেখানে কল্পনা বাস্তবতাকেও হার মানায়। যেখানে সম্ভাবনা সন্ধাপ্রদিপ জ্বালে সেখানেই আমরা।
আমাদের মৃতু নেই কেন?-অর্প জানতে চায়
জবাব আসে, আমরা মানুষের মাঝে বিবেকবোধ জাগ্রত করি। নইলে পৃথিবী বিশৃংখলা, অমানবিকতা আর দুর্নীতিতে পূর্ন হয়ে যেত। তাই আমাদের মরন নেই।
অর্প মনে মনে ভাবে, আমার এখন সবুজ একটি পৃথিবী দেখতে ইচ্ছা করছে যেখানে সবাই সুখী, মানবতা বড়, আছে সবার জন্য ভালবাসা।
বাণী আসে, তুমি তোমার দু’হাত একত্রিত করে বুকের উপর রাখ।
এরপর বলতে থাক, ভালবাসা, বিশ্বাস, বন্ধুত্ব ও প্রেরনা এটাই কামনা।
অর্প তাই করে। সত্যি সে তার স্বপ্নের পৃথিবী দেখতে পায়। দূষনমুক্ত সবুজ পৃথিবী। যেখানে সবাই খুব খুশি, মানবতা বড় আর সবার জন্য সবার অনেক ভালবাসা।
অর্প অবাক হয়ে যায়।
ঠিক সেই মুহূর্তে তার মা ডাক দেয়, অর্প, অর্প, মা ঘুম থেকে উঠো।
মায়ের ডাকে হকচকিয়ে ঘুম থেকে ওঠে সে। মনটা তার অনেক খুশি। আনন্দে মাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় সে।
আর কল্পনা করতে থাকে। পৃথিবীতা যদি সত্যি এমন হত!! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।