মানবিক, যৌক্তিক আর অযৌক্তিক। সোজা কথা আরেকটা মানুষ। দশ জনের ভীরে ডুবে থাকার প্রানান্ত চেষ্টায় থাকা মানুষ। ছোটবেলার, ভালো ভাবে বলতে গেলে হাফপ্যান্ট কালের আমার এক বন্ধু আছে, বিচিত্র প্রতিভার অধিকারী। তার প্রতিভার কথা বলি, নাম বলা যাবে না, বললে কোন এক রাতের আড্ডায় আমাকে গাড্ডা খেতে হবে।
তার বিচিত্র প্রতিভা-টি ছিল ডান হাতের পাচটি আঙ্গুল শক্ত করে একই বিন্দু-তে এনে বন্ধু বান্ধবের পশ্চাৎ দেশে দেশে ঘোরা। সে এখনো বাংলাদেশ ভিন্ন অন্য কোন দেশ ভ্রমন না করলেও নিদেনপক্ষে হাজার খানেক বার বিভিন্ন মানবের পশ্চাৎ দেশে ভ্রমণ করেছে, উইদাউট টিকিট, উইদাউট ভিসা এবং উইদাউট ওই পশ্চাৎ দেশের মালিকের অনুমতি।
তো সে এহেন দেশে ঘুরে ঘুরে করতো টা কি? এই রাজ্য জয় করেও কিইবা লাভ?
সে যেই দেখতো কেউ অন্যমনস্ক, সেরেছে। তার ডান হাতের আঙ্গুল মিসাইল দিয়ে তীব্র আঘাতে একেবারে মিসাইলময় করে দিতো বন্ধুদের বসবার একমাত্র অবলম্বন। আমিও একবার সেই মিসাইল অনুভব করেছিলুম।
নাহ, এইটাকে তার প্রতিভা বলছিনা।
তার প্রতিভা ছিল, প্রতিবার একই কাজ করার পর ক্ষমা চাওয়ার। কোন মুলোটা বাড়বে সেটা যেমন পত্তনেই বোঝা যায়, ঠিক তেমন কোন মানুষ টা নির্লজ্জ হবে তা তার স্বাভাবিক বোধ থেকেই বোঝা যায়। বার বার ওই একই জায়গায় কি গুপ্তধন সে পেয়েছিল কে জানে, এই কাজ সে শৈশব, কৈশোর বয়েস পার হবার পরেও অনেকদিন ভুলতে পারেনি।
আমাদের মসজিদের ছাদে বহুদিন কোন তেরপল টাঙানো ছিলনা।
কড়া রোদে ওই ছাদেই জুমা পড়তাম সব আপাত এবং জোর করে বখাটে হতে চাওয়া সত্যিকার ভালো ছেলের দল( আদতে কারুরই ভাজা মাছ উল্টাবার সামর্থ্যও ছিল না)। একদিন এক রৌদ্রজ্বল শুক্রবারের জুমার পরে সবাই হুরমুড়িয়ে নামছি। এমন সময় এক মুরুব্বী, যার পেছনটা দেখতে আমাদের দলেরই আর কারো মত; তার পশ্চাতের ভিসা উন্মুক্ত করে দিলেন মিসাইল ম্যানের কাছে।
যা হবার তাই হোল। কউউউউউউত্তত্তত করে একটা আওয়াজ পেলাম।
পেছনে ফিরে দেখি আঙ্কেল তার দেশ বেদনার চেয়ে মনের বেদনায় আক্রান্ত হয়ে, মিসাইল ম্যানের কান ধরে দুটো দিলেন।
এই সময় গুলো বেশ উপভোগ্য। আমরা তখন কেউ মিসাইল ম্যান কে চিনিনা। মুখ ঘুরিয়ে হাটা শুরু করতেই মিসাইল ম্যান সেই পুরনো রুপে।
" আঙ্কেল, আই তো দুরাইয়েনে নাইমতে গেলাম, হিতার লাই অনের এন্ডে বাড়ি লাইজ্ঞেদে... আরে মাফ গরি দিওন, আই কি ইচ্ছা গরি মাইজ্জিনা????..."
আঙ্কেল মাফ করে কান ছেড়ে দিলেন।
মিসাইল ম্যানের মিসাইল থামলো না। যাও বা থেমেছে, তাও তার অনেকদিন পরে। বয়েসের আলগা ভারিক্কি তে পড়ে।
'''''''''''''''''''
খবরঃ গোলাম মাওলা রনি ইচ্ছেমত মানুষ পিটিয়ে মাফ চেয়েছেন। বারংবার মাফ চেয়েছেন।
সাংবাদিক বলছিনা সজ্ঞানেই, মানুষ পেটানোর সাথে কোন গোষ্ঠী বা কোন পেশার গুনফল, ভাগফল হয়না।
এমন হাজারো রাজনৈতিক নেতা, পাতিনেতা, উপনেতা, কেথা, মেতা, জুতা আছেন বিভিন্ন দলের যারা মানুষ পেটান, ঝামেলায় পড়লে মাফ চান, এবং কেবল মাত্র অতি ঝামেলায় পড়লেই অফ যান।
তাদের বলি-
বাঙ্গালী এখন আর ওই আঙ্কেল না। পশ্চাতে মিসাইল মেরে মাফ চাইবেন, আর পরদিন আবার নতুন মিসাইল দাগাবেন।
কানটা আমরা লুকিয়েই ধরি।
একটা সিল মারি, তারপর একটা সাদা অসচ্ছ বাক্সে কাগজের কানটাকে ফেলে দেই।
মিসাইল ম্যান ভাইয়ারা এবং ওম্যান আপ্পিরা... আমরা কিন্তু কানটা পাঁচ বছরের জন্যে ধরি।
খুব খিয়াল কইরা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।