আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রেডিও তারকা লিলি অ্যালেন

চলছে গাড়ি যাত্রাবাড়ি। বর্তমানে তারহীন যোগাযোগের মাধ্যমগুলো খুব বেশি জনপ্রিয়। এর মাঝে একটি বড় অংশজুড়ে রয়েছে রেডিও এবং আমাদের তরুণ প্রজন্মের একটি বড় ধরনের ব্রেকথ্রু হলো, এ প্রজন্মের রেডিও আর্টিস্টরা। এটি তরুণ প্রজন্মকে দিক নির্দেশনা দেওয়ারও একপ্রকার মাধ্যম বলা চলে। সেই সাথে অলস সময়ে বিনোদনের ব্যবস্থা তো থাকছেই।

আর এই কাজগুলোর সাথে আমাদের তরুণেরা জড়িত থাকায় এতে আরও উন্মাদনার মাত্রা যোগ হয়েছে। তবে শুধু আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটেই নয়, দেশে-বিদেশে সব জায়গাতেই রয়েছে এমন উন্মাদনার নজির। তেমনই একজন ব্রিটিশ রেডিও আর্টিস্ট, লিলি অ্যালেন। মাত্র ২৬ বছর বয়সেই তিনি মাতিয়েছেন রেডিও ভুবন। প্রজন্মের এই তরুণী, লিলি অ্যালেনকে নিয়ে আজকের ফিচারটি লিখেছেন প্রাঞ্জল সেলিম শুরুর কথা ও ক্যারিয়ার লিলি রোজ বেট্রিস অ্যালেন, জন্মসূত্রে একজন ব্রিটিশ নাগরিক।

মাত্র ২৬ বছর বয়সেই তিনি পৌঁছে গিয়েছেন খ্যাতির শীর্ষে। তার ক্যারিয়ারের শুরুটা রেকর্ডিং আর্টিস্ট ও টক শো হোস্ট দিয়ে হলেও বর্তমানে তিনি নিজের মতো করে গুছিয়ে নিয়েছেন তার ক্যারিয়ার, একজন রেডিও আর্টিস্ট হিসেবে। পাশাপাশি তার আরও একটি পরিচয় আছে, তিনি একজন গায়িকাও বটে। বিখ্যাত অভিনেতা ও সঙ্গীত সুরকার কেইথ অ্যালেন-এর একমাত্র সন্তান তিনি। তার মা, অ্যালিসন ওয়েন ও মিডিয়ার সাথে জড়িত।

তিনি অবশ্য সঙ্গীতের জগতের মানুষ নন, তিনি সিনেমা পরিচালনা করেন। বাবা-মা দুজনেরই প্রতিভা লক্ষ করা যায় লিলির মধ্যে। তিনি খুব ছোট বয়স থেকেই সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছেন। তার অনুপ্রেরণার মূলে ছিল অলটার্নেটিভ সং আর্টিস্ট ‘গালম রক’। লিলি গানের সাথে এত বেশি জড়িয়ে পড়েছিলেন যে পড়াশোনা খুব বেশিদূর পর্যন্ত এগোয়নি তার।

স্কুলে থাকা অবস্থাতেই তিনি বেশ কয়েকটি ডেমো সং তৈরি করে ফেলেছিলেন। এরপর ২০০৫ সালের প্রথমদিকে তিনি মাইস্পেসকে বেছে নেন তার নিজেস্ব একটি প্রোফাইল তৈরি করার জন্য। সেখানে তিনি তার রেকর্ডিংগুলো অনলাইন উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন সকলের জন্য। আর এই কাজটির মাধ্যমেই তার ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়। তিনি সুযোগ পেয়ে যান একটি নামকরা কোম্পানির সাথে কাজ করার।

১ বছরের মধ্যে তিনি তার অ্যালবামের কাজ শুরু করার সুযোগ পেয়ে যান। তার প্রথম মুক্তি পাওয়া সিংগেল গানটি ছিল ‘স্মাইল’ নামে। এই গানটি ২০০৬ সালের জুলাই মাসে ইউকে টপ চার্টের টপ পজিশনে ছিলেন। এই সিংগেল গানটির পাশাপাশি তিনি দ্বৈতভাবে ‘অলরাইট স্টিল’ নামের একটি গানেও কণ্ঠ দিয়েছিলেন। ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে খুব ভালো ব্যবসা করেছিল তার গানগুলো।

অ্যালবামের প্রায় আড়াই মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়ে যায় কয়েক সপ্তাহের মধ্যে। তার খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা এত বেশি ছিল যে এই গানগুলোর জন্য তাকে দেওয়া হয়েছিল ‘গ্রামি অ্যাওয়ার্ড’। এই পুরস্কার পেয়েই থেমে যাননি তিনি, জিতে নিয়েছেন ‘ব্রিট অ্যাওয়ার্ড’, ‘এমটিভি মিউজিক অ্যাওয়ার্ড’। জনপ্রিয়তা তাকে উদ্বুদ্ধ করে একটি টক শো উপস্থাপনা করার পথে। তিনি শুরু করেন, ‘লিলি অ্যান্ড ফ্রেন্ডস’ নামের একটি টক শো।

বিবিসি ট্রিতে শোটি ব্রডকাস্ট করা হতো। তবে এসব করতে গিয়ে তিনি তার গানের অধ্যায়টি কখনোই বন্ধ করেননি। বরং খ্যাতিকে আরও কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টাই করেছেন। ‘ইটস নট মি, ইটস ইউ’ নামের একটি অ্যালবাম মুক্তি পায় সেই বছরই। অ্যালবামে তিনি আরও নতুনত্ব নিয়ে এসেছিলেন।

অ্যালবামটির সাফল্য তাকে ও তার অ্যালবামটিকে নিয়ে গিয়েছিলেন ‘ইউকে অ্যালবাম চার্ট’ ও ‘অস্ট্রেলিয়া আরিয়া চার্টে’। তার এই অ্যালবামটি নিন্দুকদেরও মুখ বন্ধ করে দিয়েছিল সেসময়। একরকমের মিউজিকাল ইনফ্লুয়েন্স বলা চলে অ্যালবামটিকে। ২০০৯ সালে তিনি একটি সংগীত প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন নিজের যোগ্যতা পরীক্ষা করার জন্য। সেখানে তিনি ছাড়া আরও ৫ জন গায়িকা ছিলেন।

তাদের মধ্য থেকে তিনি ‘ইয়ার অব দ্য ওমেন’ সেক্টর থেকে মারকারি পুরস্কার জিতেছিলেন। সেই বছর অ্যালেন রেকর্ডিং-এর ব্যবসা শুরু করেন। তার এক বোনের সাথে মিলে তিনি এই ব্যবসাটি শুরু করেছিলেন। অবশেষে তারা ২০১১ সালের শুরুতে, অর্থাত্, চলতি বছরের প্রথম দিকে নিজস্ব একটি রেকর্ডিং কোম্পানি শুরু করেন। ফ্যাশন জগত সংগীতের পাশাপাশি তার একটি অন্যরকম ক্যারিয়ারের কথা শোনা যায়।

তিনি ফ্যাশান জগতেও পা রেখেছিলেন ক্যারিয়ারের কিছুটা সময়। ২০০৭ সালের মে মাসে তিনি ড্রেস, জুতা ও মেয়েদের অন্যান্য টুকিটাকি জিনিসপত্রের মডেলিং করেছেন। ‘লিলি লভস’ নামের টাইটেল নিয়ে ভালই হয়েছিল বিষয়টি। তিনি একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে কাজ করতে থাকেন। এরপর ২০০৯ সালের শেষদিকে এসে রেকর্ডিং কোম্পানির সাথে জড়িয়ে পড়ায় ফ্যাশনজগত ছাড়তে হয়।

রেডিও এসবের মধ্য দিয়েই তার রেডিও জগতে প্রবেশ। তিনি রেকর্ডিং জগতের পাশাপাশি জড়িয়ে পড়েন আরজেইংয়ের সাথে। ধীরে ধীরে এই জগতে তার কদর বাড়তে থাকে। বাড়তে থাকে চাহিদা। তার নিত্য নতুন আইডিয়া ও কাজের জন্য খ্যাতির চূড়ায় ওঠা তার জন্য কিছুটা সহজই ছিল।

তিনি রেডিওতে বেশিদিন ধরে কাজ শুরু করেছেন এমনটা নয়, এরই মঝে তিনি অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছেন তার এই রেডিও ক্যারিয়ারটি নিয়ে। তিনি কাজটিকে খুব ভালোমত ইনজয় করেন এবং এখন পর্যন্ত যথেষ্ট শ্রম দিয়ে চলেছেন তিনি। ব্রিটিশ রেডিও আর্টিস্ট হিসেবে তিনি অনেক জনপ্রিয় একটি আসন দখল করে নিয়েছেন। সেই সাথে তার গান যোগ করেছে আরও এক মাত্রা। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তার সম্পর্কে একটি খবর শোনা গিয়েছে যে, তিনি মিউজিসিয়ান, এডি সিমসনের সাথে সম্পর্কে গড়েছেন।

এর কিছুদিন পরই তিনি ও তার বয়ফ্রেন্ড ঘোষণা দিয়েছিলেন তাদের সন্তানের। ২০০৮ সালে তার মিসক্যারেজ হয়। এরপর তিনি আর কোনো সন্তান নেননি। মনোযোগ দিয়েছিলেন তার ক্যারিয়ারের দিকে। সম্প্রতি জানা গেছে, তিনি ম্যারি সাম কুপার নামের এক ইংরেজের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে যাচ্ছেন ২০১১ সালের ১১ জুন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.