কিছুদিন আগে এক সন্ধ্যায় কথা হচ্ছিলো কবি রফিক আজাদের সঙ্গে। রফিকভাই একটু ক্ষোভের সঙ্গে বললেন, রেডিও টুডে, রেডিও ফুর্তিসহ অন্য বেসরকারি রেডিওর আরজে'রা এ রকম অশ্লিল ভাষায় গারগেল করে বাংলা বলছে কেনো?
আমি বললাম, ওদের টার্গেটগ্রুপ হচ্ছে ডিজুস জেনারেশন। তাই ঝাক্কাস ভাষা বেছে নিয়েছে।
রফিক ভাই বলেন, না এটিকে এতো হালকাভাবে নিলে চলবে না। আসলে বেসরকারি রেডিও কোম্পানীগুলো লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে বাংলা ভাষাকে ধ্বংস করার একটা সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে নেমেছে।
আর তারা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিচ্ছে এইসব অশালীন বাংলা উচ্চারণ।
রফিক ভাই, কিন্তু ওরা তো খুব ভালভাবে নিউজও প্রচার করছে। আর নাগরিক জীবনকে বিনোদনমুখি করার পাশাপাশি বহুবছর পর তারা মানুষকে রেডিওমুখি করেছে। ...যোগ করি আমি।
রফিক ভাই বলেন, না, ওদের এইসব ভালত্বকে ছাড়িয়ে গেছে মন্দত্বের মাত্রা।
বাংলা ভাষাকে নৃশংসভাবে একটু একটু করে ওরা হত্যা করছে।
আপত্তি করি আমি। বলি, নজরুলকে মৌলবাদীরা 'কাফের' আখ্যা দিয়েছিলো। পাকিস্তান আমলে রবীন্দ্রনাথকে করা হয়েছিলো নিষিদ্ধ। চেষ্টা করা হয়েছিলো, ঊর্দূকে রাষ্ট্র ভাষা করার।
সে সময় ঊর্দূ হরফে বাংলা লেখা চালু করার চেষ্টাও কম করা হয়নি। কিন্তু এ সব অপচেষ্টার সবই শুভবুদ্ধির মানুষের সম্মিলিত প্রতিবাদ আর গণআন্দালনের জোয়ারে ভেস্তে গেছে। বাংলা ভাষা তার গৌরব নিয়ে টিকে আছে দাপটের সঙ্গেই। একুশে ফেব্রুয়ারি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
রফিক ভাই বলেন, সেটাই তো কথা।
রেডিওগুলোর এই সব নোংরামির বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিবাদ তো দূরের কথা, একক কোনো প্রতিবাদও তো দেখছি না। আমি নিজেই এই সব নিয়ে লিখবো ভাবছি; তুমিও লেখ। আরো লেখা -- লেখিতে গণ সচেতনতা তৈরি করতে হবে। ...একদিন দেখো ঠিক ঠিক এসব রেডিও স্টেশন ঘেরাও হবে। এই তো সেদিন গণ আদালতে গোলাম আজমের ফাঁসীর রায় হয়েছে না! তাহলে এ কথা তো ঠিক যে, প্রকৃত দেশ প্রেমিকরা এখনো মরেনি।
কিন্তু এখন দরকার সত্যি সত্যি সম্মিলিত প্রতিবাদ -- বিক্ষোভ। । ...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।