প্রবাসী এখনকার সময়ের স্পেন এবং পর্তুগাল মিলিয়ে হল আইবেরিয়ান উপদ্বীপ। ল্যাটিন ভাষায় এই এলাকা কে হিস্পানিয়া ও বলে আর আরবেরা বলত আল-আন্দালুস বা আন্দালুসিয়া। উত্তর আফ্রিকার অধিবাসী দের বলা হত বারবার। বারবার এবং আরবের মুসলমানদের সম্মিলিত ভাবে বলা হত “মুর”
স্পেন জয়(৭১১-৭৫৬)
৭১০-বারবার সেনাপতি তারিক ইবন জিয়াদ তাঞ্জিয়ের দখল করেন জিব্রাল্টার প্রনালি অতিক্রম করে হিস্পানিয়া তে আসেন।
৭১১ সালে তারিক ইবন জিয়াদের নেতৃত্বে ৭০০০ মুসলিম যোদ্ধা( আরব এবং বারবার)নিয়ে জিব্রাল্টার প্রনালী অতিক্রম করে উত্তর আফ্রিকা থেকে আইবেরিয়াতে আসেন।
দামেস্কের উম্মাইয়া সম্রাট আল ওয়ালিদের অধীনস্ত ছিল এই সেনাবাহিনী। তা্রিক নিজেও ছিলেন বারবার।
গুয়াদালেতের যুদ্ধে তারিক ভিসিগথ রাজা রড্রিক কে পরজিত করেন। অতপরঃ তারিকের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর এক অংশ দখল করে টলেডো , মুগিত-আল রুমীর নেতৃত্বে অপর অংশ দখল করে কর্ডোবা।
৭১২ খৃস্টাব্দে উত্তর আফ্রিকার মুসলিম গভর্নর মুসা ইবন নুসাইর ১৮,০০০ সৈন্যের এক বাহিনী নিয়ে স্পেন আসেন এবং সেভিল মেরটোলা প্রভৃতি এলাকা দখল করেন
৭১৩_ নুসাইর পুত্র আব্দ-আল-আজিজ ইবন মুসা মুর্সিয়া, গ্রানাডা, সাগুন্তো এলাকাগুলো দখল করেন।
সেভিল এবং টলেডোর খৃস্টানেরা বিদ্রোহ করে, তাদেরকে দমন করা হয়। টলেডোতে ব্যাপক লুটপাট হয় এবং শীর্ষস্থানীয়দের শিরচ্ছেদ করা হয়।
৭১৫- সমগ্র স্পেন মুসলিম করায়ত্ব হয়। আব্দ-আল ইবন মুসা কে স্পেনের দায়িত্ব দিয়ে তারিক ফিরে যান। সেভিলে রাজধানী স্থাপন করেন।
আব্দ আল রড্রিকের বিধবা পত্নী এগিলোনাকে বিয়ে করেন। এগিলোনার প্রেমে এবং প্রভাবে আব্দাল খৃস্টান্ দের প্রতি উদার দৃস্টি পোষন করেন এবং উম্মাইয়া খলিফার বিরাগ ভাজন হন। অতপরঃ আব্দ-আল ইবন মুসাকে হত্যা করা হয়।
৭১৬ খৃস্টাব্দে পর্তুগালের রাজধানী লিসবন মুসলিমদের দখলে আসে। ৭১৭ খৃস্টাব্দে কর্ডোবা হয় নতুন মুসলিম সাম্রাজ্যের রাজধানী।
৭১৮ খৃস্টাব্দে খৃস্টান নেতা পালেয়ো “আস্টুরিয়া রাজ্য” প্রতিষ্ঠা করেন, মুসলিম দের আক্রমনে রাজা পালেয়ো অবুরুদ্ধ হলেও পালিয়ে যেতে সমর্থ হন।
৭১৯ খৃষ্টাব্দে সেপ্টিম্যানিয়া এবং ফ্রান্সের দক্ষিনাঞ্চল মুসলিম পদানত হয়, এই এলাকা ফ্রান্সে এখন লংদক হিসেবে খ্যাত।
৭২০-৭৩২ বার্সিলোনা এবং নারবোন মুসলিম অধিকারে আসে। একুইটেনিয়ান এবং ফ্রাঙ্ক খৃষ্টানেরা তুলুসের যুদ্ধে ৩৭৫, ০০০ জনের মুসলীম সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেন। আল আন্দালুসের গভর্নর জেনারেল আল-সাম-ইবন-মালিক-আল খাওলানী নিজে আহত হন।
মুসলিমদের জন্যে সবচে বড় পরাজয় ছিল এটি।
৭২২- রাজা পেলায়ো আমির মুনুজার বাহিনীকে পরাজিত করেন। পেলায়োর বংশদ্ভুতরা পরবর্তীতে মুসলিমদের কবল থেকে সম্পুর্ন স্পেন মুক্ত করেন(la reconquista- the reconquest”৭২৫- মুসলিমরা ফ্রান্সের ওতুন অবরোধ করেন। ৭৩২ খৃঃ আব্দুল রহমান আল ঘাফিকির নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী ফ্রান্সের বোর্দোর যুদ্ধে খৃষ্টান বাহিনীকে পরাজিত করেন। ফরাসী সেনাপতি চার্লস মারটেল একই বছরে তুর্সের যুদ্ধে মস্লিম বাহিনীকে পরাজিত করেন আল ঘাফিকি নিহত হন ।
মুসলমানদের উত্তর অভিমুখি যাত্রা থেমে যায়।
.৭৩৭-খৃঃ আরবেরা ফ্রান্সের আভিনো এবং রোন উপত্যকা দখল করেন।
৭৩৯-৭৫৫ উত্তর আফ্রিকা এবং আন্দালুসের বারবাররা বিদ্রোহ করেন। উম্মাইয়া খলিফার প্রেরিত বাহিনী কে পরাজিত করে তারা সেনাপতি কুলথুমকে হত্যা করে। এ বছরেই আস্টুরিয়ার আলফন্সো-১ গ্যালিসিয়া দখল করে নেন।
৭৪০খৃঃ এ বারবার বিদ্রোহীরা উম্মাইয়া খলিফাকে কর দিতে অস্বীকৃতি জানায়। ১০ হাজার মুসলিম সেনা নিয়ে তালাবা ইবন সালামা আন্দালুসিয়াতে আসেন। সিরিয়ার মুসলিম এবং আইবেরিয়ান মুসলমানদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ চলতে থাকে ৪ বছর অবধি। ৭৫৫ সালে আব্দ আর রহমান আব্বাসীয় খলিফাদের থেকে পালিয়ে আল আন্দালুসে আসেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।