এলোমেলো ভাবনা সারাক্ষণ মনকে আচ্ছন্ন করে রাখে আমরা মনে করি শুধু নারী এবং মেয়ে শিশুরাই যৌন নির্যাতন এবং যৌন হয়রানির শিকার হয়। কিন্তু ছেলে শিশুরাও যৌন নির্যাতনের শিকার। একথা ঠিক যে মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় অনেক বেশি নির্যাতনের শিকার। এর কোনটা প্রকাশ পায় এবং বিচার হয় এবং কোনটা প্রকাশ হয় না আবার বিচারও হয়না, কোন কোন যৌন নির্যতনকারী আবার আইনের ফাঁক গলে বের হয়ে যায়। দেখায় ভয়ভীতি।
আমি মনে করি নির্যাতন নির্যাতনই। সেটা ছেলেদের উপর হোক বা নারীদের উপর হোক। আমি ২০০৭ সালে ক্ক্সবাজারে একটা প্রশিক্ষণ চালাতে গিয়েছিলাম। সেখানে একজন ছেলেশিশু তার উপর নির্যাতনের অমানবিক দিক তুলে ধরেছিল। সে তখন নবম শ্রেণীতে পড়তো।
সে তার ভাইয়ের বৌ দ্বারা নির্যাতনের শিকার। টাঙ্গাইলের মধুপুরে গিয়েছিলাম। সেখানে শুনেছিলাম নির্যাতিত ছেলেছির মা'র নিকট,,,ছেলেটির বয়স ৭ বছর, সে ২৯ বছর বয়সী এক বিকৃত লোক দ্বারা নির্যাতনের শিকার। ছেলেটি খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। ছেলেটির মা বিচার চেয়েও বিচার পায়নি।
ঐসময়েই শুনেছিলাম টাঙ্গাইলের মাদ্রাসা শিক্ষক দ্বারা দুই ছাত্র নির্যাতনের ঘটনা। আমার কাছে মনে হয় এ নির্যাতনগুলো অহরহ হচ্ছে কিন্তু প্রকাশ খুবই কম পাচ্ছে। যারা নির্যাতনের শিকার তারা বড় হচ্ছে ঠিকই কিন্তু তারা মানসিক দিক দিয়ে খুবই দুর্বল হচ্ছে,অন্যকে বিশ্বাস করতে পারে না সহজে, অস্থিরতায় ভুগাসহ বিভিন্ন জটিল বিষয়ের মুখোমুখি হয়।
আজ প্রথম আলোতেও এবিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে এখানে ক্লিক করুন
আমাদের সকলকে পারিবারিকভাবেই প্রথমে এর মোকাবেলা করতে হবে, শিশুরা কার কার কাছে নিরাপদ এবং কার কার কাছে নিরাপদ নয় তা তাদেরকে খুবই কৌশলে গল্পের মাধ্যমে শিখাতে হবে। তাকে কে কে স্পর্স করতে পারবে এবং কে কে স্পর্স করতে পারবে না, তার শরীরের যে সীমানা আছে তা তার একান্ত নিজস্ব।
এই নিজস্ব দেয়াল অন্য কেউ ডিঙ্গাতে পারবে না। ভাল স্পর্স কি এবং মন্দ স্পর্স কি এই বিষয়েও শিশুদেরকে বোঝাতে হবে। যেমন অনেক সময় একজন শিশুটিকে গাল টিপে দিল বা হাত ধরে হান্ডসেক করলো,,,এখানে দুই ধরণের স্পর্স হতে পারে,,,ভাল এবং খারাপ। নির্যাতনকারীর মনে যদি কুমতলব থাকে তাহলে সে তা হাসিল করতে পারে। আবার ঘরে কেউ ডাকলে সে কি সেই ঘরে একা যাবে??? উত্তর না।
এখানে শিশুদেরকে ষষ্ঠ ইদ্রিয় সম্পর্কে জানাতে হবে। পঞ্চম ইদ্রেয়র পরে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় হলো মন। এই মন যদি বলে না ওখানে গেলে তার বিপদ হতে পারে,,তাহলে ওখানে যাওয়া যাবে না। স্নেহ মায়া মমতা দিয়ে গল্পে গল্পে তাকে জানাতে হবে, বুঝাতে হবে আপনি যা বলছেন তা এতটুকুও বানানো নয়, সবই বাস্তব সত্যি। প্রথমত শিশু নির্যাতিত হয় পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয় দ্বারা, তারপর স্কুলে এবং সমাজের অন্যান্য স্থানে।
তাই আসুন আমরা সবাই মিলে এই ভবিষ্যত সুনাগরিকদেরকে সহযোগিতা করি, ওদের বন্ধু হই,,,,, এমন একটা অদৃশ্য দেয়াল গড়ে তুলতে তাদেরকে সহয়োগিতা করি যে দেয়াল অতিক্রম করে কোন নির্যাতনকারী তাকে নির্যাতন করতে পারবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।