চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে(চুয়েট) গত ১২ মে থেকে শুরু হওয়া তারুণ্য উৎসব ২০১১ গতকাল (শনিবার)শেষ হয়েছে। গতকাল তারুণ্য উৎসব এর সমাপনী দিনে সকাল ১০ টায় ছিল স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেও বিতর্ক প্রতিযোগীতা, সাড়ে বারটায় গোলটেবিল বৈঠক এবং এরপর ছিল পুরষ্কার বিতরণী। সন্ধ্যায় চুয়েট সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ গ্রহনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়েছে।
দেশের সুনামধন্য প্রায় ৪০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তিন দিনব্যাপী উৎসবের বিভিন্ন বিভাগে অংশগ্রহন করছে। এবারই প্রথম বাংলাদেশে অধ্যয়নরত বেশ কয়েকটি দেশের শিক্ষার্থীরা এই উৎসবে অংশগ্রহন করেছে।
এই উৎসবের মাধ্যমে সবার সামনে তুলে নিজ দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য ধরতে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংঙ্কা ও নেপাল হতে আগত শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছিল।
‘বেজে-ওঠো ফরিঙের রঙে দোয়েলের জীবনে দুর্জয় তারুন্যে দুর্নীতি প্রতিরোধে’ এই স্লোগানে অনুষ্ঠিতব্য এই তারুণ্য উৎসবে প্রধান কর্মসূচী হিসেবে ছিল বিতর্ক প্রতিযোগিতা, প্রজেক্ট প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক উৎসব, ফটোগ্রাফী প্রতিযোগিতা, স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসব, গ্রুপ থিয়েটার, প্রিমিয়ার শো ইত্যাদি।
আয়োজক সূত্রে জানা যায়, তারুণ্য উৎসবের প্রথম দিনে চুয়েটে আন্তঃ বিশ্ববদ্যিালয় ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী প্রতিযোগীতা, দূর্নীতি বিরোধী কার্টুন প্রদর্শনী ও গ্রুপ থিয়েটার অনুষ্ঠিত হয়েছে। আন্তঃ বিশ্ববদ্যিালয় ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী প্রতিযোগীতায় ৮ টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত শিক্ষার্থীরা তাদের তোলা ফটোগ্রাফি প্রদর্শন করে এবং এদের মধ্য থেকে চূড়ান্তভাবে তিনজনকে পুরষ্কৃত করা হয়েছে। ফটোগ্রাফী ও দূর্নীতি বিরোধী কার্টুন প্রদর্শনীর উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিআইবি এর আউটরিচ এন্ড কমিউনিকেশন বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার সাজ্জাদ হোসাইন, প্রোগ্রাম ম্যানেজার খালেদা আক্তার, সহযোগী ম্যানেজার ওয়াসিম রেজা চৌধুরী।
এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, চুয়েটের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. সাইফুল ইসলাম, প্রফেসর ড. মো. আব্দুর রশীদ,প্রফেসর ড. মো. তাজুল ইসলাম, ড. সজল চন্দ্র বণিক প্রমুখ। সন্ধ্যা সাতটায় প্রদর্শিত হয়েছে গ্রুপ থিয়েটার মলিয়ের এর ‘ভদ্দরনোক’। এটি রুপান্তর করেছেন গোলাম সারোয়ার, থিয়েটারের নির্দেশনায় ছিলেন চুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগের প্রভাষক আহসানুল হাবিব। থিয়েটারে ফজর আলী চরিত্রে অভিনয় করেছেন তানবীর, ফুলজান চরিত্রে প্রিয়াংকা ,সেফালী চরিত্রে নুসরাত এবং রাতুল চরিত্রে ছিলেন শফি আলম।
তারুণ্য উৎসবের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার সকালে প্রথমেই ছিল প্রজেক্ট প্রদর্শনী।
এই প্রদর্শনীতে সর্বমোট ২৫টি উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রদর্শীত হয়। এতে ৮ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ টি দল তাদের প্রজেক্ট প্রদর্শন করে। প্রদর্শনীতে প্রধান আতিথি ছিলেন চুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগ এর প্রধান ড. পরিতোশ কুমার সাধু খান। এছারা বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান কৌশল বিভাগ এর প্রধান তওসিফ সাঈদ, অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসাইন, ইনটেল-সফ্ট সলিওশান এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইনঞ্জিনিয়ার এ এইচ এম শাহানুল আলম সহ আরও অনেকে। এরপর দুপুরে আলোক চিত্র প্রদর্শনীর উদ্ভোধন করা হয়।
সবশেষে সন্ধ্যায় সল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শীত হয়। প্রদর্শনীতে প্রায় ১২টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রাথমিক ভাবে নির্বাচিত চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়(চুয়েট) শিক্ষার্থীরা প্রদর্শন করে- এক কাপ চা,জল ছাপ, কারা বন্দী স্বাধীণতা,সকালর খোঁজে ও ত্যাগ মোট পাঁচটি সল্পদৈর্ঘ চলচিত্র। খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়(কুয়েট) শিক্ষার্থীরা প্রদর্শন করে- রাহু ও মসান্তরাল নামে দুটি সল্পদৈর্ঘ চলচিত্র। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়(বুয়েট) শিক্ষার্থীরা প্রদর্শন করে- ডেথ নোট ও তিরোধান নামে দুটি সল্পদৈর্ঘ চলচিত্র।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রদর্শন করে- পরিপ্রেক্ষিত, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়- বেজোর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়- সাড়া দিবে? চুয়েটের চলচ্চিত্র দুটির মধ্যে রয়েছে মোহাম্মদ হাসান মাসুদ কর্তৃক নির্মিত বিবর্ণ, পরাগ কর্তৃক নির্মিত এ্যাডিকটেড টু ডেথ। বুয়েট ও বাংলাদেশ ইউভার্সিটির চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে চৈতন্য ও আই এ্যাম ইনসেন ও ব¬ু রোজ। এছাড়াও প্রদর্শনীতে চুয়েটের ৩৭ তম ব্যাচের সায়েম সিরাজ নির্মিত মিডনাইট ম্যাডনেস নামক ৩০ মিনিটের একটি নাটক দেখানো হয়। প্রদর্শনীতে প্রধান বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক শিবু কুমার শীল। এছাড়া চলচ্চিত্র পরিচালক নুরুল আলম আতিক ও নাট্যনির্মাতা অমিতাভ রেজা অনলাইনে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন।
আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় সল্পদৈর্ঘ চলচিত্র উৎসবে অংশ নেয়া অর্ণব কালের কণ্ঠকে বলেন,‘অমরা তরুণরা অমাদের স্বপ্নগুলোকে সেলিনয়েডের ফিতায় বন্দী করে সবার সামনে তুলে ধরতে চাই। আর এই প্লাটফর্ম তৈরী করে দেয়ার জন্য চুয়েট ডিএস এর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। ’
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।