আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ওহাবী মতবাদ ও ইহার জনকের ইসলাম বিরোধী চক্রান্ত-শেষ



নারী প্রলোভনে আব্দুল ওহাব- একদিন আব্দুল ওহাব আমাকে বললেন যে ইসপাহানে অবস্থানকালে আব্দুল করীম নামে এক ব্যক্তির সাথে আমার বনদ্ধুত্ব হয় তিনি নিজকে একজন লেখক হিসেবে প্রচার করতেন। তিনি ইবন আব্দুল ওহাবের সাথে থেকে তার সমস্ত গোপনীয় তথ্য যেনে নেয়। তার সাথে সুফিয়াও কিছুদিনের জন্য ইসপাহানে আসে এবং আব্দুল ওহাব তার মুতয়ার মেয়াদ দু মাসের জন্য বাড়িয়ে নেয়। সিরাজ এলাকা সফরের সময় আব্দুল করীম তার সাথে ছিল এ সময় আব্দুল করীম আব্দুল ওহাবের জন্য সুফিয়া থেকেও আরো সুন্দরী মেয়ের ব্যবস্থা করে দেয় তার নাম ছিল আসিয়া। আব্দুল করিম ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক পুনর্বাসন এলাকার মন্ত্রনালয়ের কর্মচারী ছিল।

মোটকথা আব্দুল করীম, সুফিয়া, আসিয়া ও হামফ্রে মিলে দিনরাত চেষ্টা করে আব্দুল ওহাবকে ব্রিটিশ মন্ত্রনালয়ের ইচ্ছামাফিক প্রস্তুত করে নেয়। ব্রিটিশ সরকারের পদক্ষেপসমূহ- ব্রিটিশ সরকার আব্দুল ওহাবকে সাহায্য করার পুর্ন আশ্বাস দেয়ার পর জযীরাতুল আরবের অন্তর্গত নজদের নিকটবর্তী এলাকায় তার নেতৃত্বের প্রথম পদক্ষেপ সূচিত হয়। আব্দুল ওহাবের প্রথম পদক্ষেপগুলো ছিল- ১। আব্দুল ওহাবের মাযহাবে যারা শামিল হবেনা তাদেরকে কাফের বলা, তাদের মাল সামানা ইজ্ঝত সম্মান বিনষ্ট করা বৈধ মনে করা ২। মুর্তি পূজার বাহানায় যথাসম্ভব ক্বাবা ঘর ধংস করা আর হাজীদের মাল লুন্ঠনের জন্য আরব উপজাতীদের উত্তেজিত করা ৩।

রাসুল (স) এবং তার খলিফাদের এবং বিশেষ করে মহৎ ব্যক্তিদেরকে অবহেলার দোহাই দিয়ে এবং এমনি ভাবে শিরক ও মুর্তিপুজার চিন্নসমূহ বিলাপের বাহানায় মক্কা, মদীনা ও অন্যান্য শহরে যতটা সম্ভব মাজার ও কবরগুলো ধংস করা ৪। যতটুকু সম্ভব মুসলিম রাষ্ট্রগুলোতে ফিতনা ফাসাদ ও নিরাপত্তাহীনতা ছড়ানো ৫। কোরানে হ্রাস বৃদ্ধির উপর সাক্ষ্য হাদীস রেওয়াতের দিক দিয়ে এক নতুন কোরান প্রচার করা নতুন মতবাদ প্রচার- আমাদের পুর্ব পরামর্শ অনুযায়ী নজদের লোকেরা আমাকে ইবনে আব্দুল ওহাবের গোলাম মনে করত। আব্দুল ওহাবের দাওয়াতী পরিবেশ তৈরী করতে আমদের দুবছর সময় লেগেছে। ১১৪৩ হিজরী সনের মাঝামাঝি সময় আব্দুল ওহাব জযীরাতুল আরবে নতুন ধর্মমত ঘোষনার জন্য চূড়ান্ত ইচ্ছা প্রকাশ করেন এবং তার মতাদর্শী ও সাহায্য কারী লোকদের একত্রিত করেন।

প্রথমে তিনি শুধু নিজের লোকদের মধ্য অস্পষ্ট ভাষায় সংক্ষিপ্তভাবে দাওয়াতের সূচনা করেন, কিছুদিন পর নজদের সব চিন্তাবিদ লোদেরকে বড় বড় দাওয়াতনামা পাঠানো হয়। ধীরে ধীরে অর্থের বিনিময়ে আব্দুল ওহাবের পক্ষে একটি বড় জন গোষ্ঠিকে একত্রিত করতে থাকি। একথা উল্লেখ্য যে দাওয়াত প্রচারের শুরুতে তার বিরোধীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে, এতে আব্দুল ওহাব পিছিয়ে যেতে চাইলে তাকে আমরা সাহস দেই। আমি তাকে বলি" নবুয়তের প্রাথমিক দিনগুলোতে রাসূল (স) এর দুশমণ আপনার চাইতে বেশী শক্তিশালী ছিল, এ কষ্ট, অপবাদ সহ্য করা ছাড়া কোন দীর্ঘ পথ ও মর্যাদা লাভ করা সম্ভব নয়। আমার সফলতার অন্য দিক হলো একবার তার বিরোধিতাকারি ১২৬ ব্যক্তি তাকে হত্যা করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহন করে এবং আমি তা নস্যাৎ করে দেই।

অবশেষে ইবনে ওহাব আমাকে বললেন যে পুনর্বাসন মন্ত্রনালয়ের দেয়া ৫ দফাকে কার্যকরী করার জন্য নিজের পূর্ন চেষ্টা অব্যহত রাখবেন। তবে দুটি বিষয়ে তিনি কোন আশ্বাস দেন নি প্রথমটি হলো-মক্কা বিজয়ের পর কাবা ঘর ধংস করা কেননা মুসলমাংন এত তাড়াতারি রাজি হবেনা। আর দ্বিতীয়টি ছিল তার সাধ্যের বাইরে তা হলো নতুন কোরান লিপিবদ্ধ করা। তিনি এটা করতে রাজি ছিলেন না। এছাড়া তিনি মক্কা ও ইস্তামবুলের শাসকদের খুব ভয় করতেন।

আমি তার কৈফিয়ত যুক্তিযুক্ত মনে করলাম। ইবনে ওহাবের দাওয়াতের কয়েক বছর পর যখন ৫ দফা সফলতার চরম মনযিল পার করল, তখন ব্রিটিশ সরকারের পুনর্বাসন মন্ত্রনালয় ইচ্ছা প্রকাশ করল যে, রাজনৈতিকভাবে জযীরাতুল আরবে কিছু করা প্রয়োজন। এ কারনেই নিজ কর্মচারী মোহাম্মদ ইবনে সউদকে ইবনে ওহাবের সাথে কাজ করার জন্য প্রেরন করা হয়। তিনি সউদি বংশের প্রথম বংশধর ছিলেন। তিনি ১১৪৭ হিজরীতে ওহাবী মাযহাব গ্রহন করেন।

আর তিনি ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ হতে নজদের শাসনকর্তাও ছিলেন। তিনি ১১৭৯ হিজরীতে ইনতিকাল করেন। এ কাজ সমাধা করার জন্য মোহাম্দ ওহাবের নিকট গোপোনে একতি সাক্ষাৎকারী দল পাঠানো হয়। তারা মোহাম্মাদী দ্বীনের ( ওহাবী মতবাদের) কাজে অংশগ্রহনের উপর জোর দেয় এবং তাকিদ দেয় দ্বীনী বিষয়ে ফয়সালার ভার পুরোপুরি ওহাবের হাতে থাকবে কিন্তউ রাজনৈতিক বিষয়ের ফয়সালার ভার ইবনে সউদের জিম্মায় থাকবে। এরা উভয়েই নজদের নিকট 'দরইয়াহ' শহরকে নিজেদের কর্মস্থল করে নেয়।

এভাবে কেন্দ্রীয় সরকার (ব্রিটিশ সরকার) সমস্ত আরবে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.