আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে



শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোঁকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রিস্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে শয়তানের চর ইহুদী খ্রিস্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরন এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা যার মূলে থাকে খ্রিস্টীয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের।

ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর- হেমপার। সে মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদের উপর তুর্কি ভাষায় রচিত হযরত মুহম্মদ আইয়ূব সাবরী পাশা রহমতুল্লাহী আলাইহি-এর “মিরাত আল হারামাইন” কিতাবের ইংরেজি অনুবাদ থেকে বাংলায় ধারাবাহিকভাবে ভাষান্তর করা হচ্ছে ইনশাআল্লাহ। ) আরব উপদ্বীপটি যখন ‍উমাইয়া (Ottoman) বংশের শাসনাধীন ছিল, রাষ্ট্র নির্ধারিত এক একজন কর্মকর্তা কর্তৃক প্রতিটি রাষ্ট্র শাসিত হত। পরবর্তীতে, হিজাজ ব্যতীত, প্রতিটি অঞ্চল যখন যে জবরদখল করতে পেরেছিল তারই আয়াত্বাধীনে এসে গিয়েছিল এবং শাসিত হয়েছিল রাজতন্ত্র হিসেবে।

১১৫০ হিজরীতে, ১৭৩৭ ঈসায়ী সনে ওহাবী নজদীর মাধ্যমে ওহাবী মতবাদ প্রচার লাভ করেছিল যা খুব অল্প সময়ে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন করে দিয়েছিল এবং প্রচারিত হয়েছিল সমস্ত আরবে। পরবর্তীতে, ইস্তাম্বুলের খলীফা, মুহম্মদ আলী পাশার নির্দেশে মিশরের শাসক তার অল্প সজ্জিত মিশরীয় বাহিনী দিয়ে আরবকে মুক্ত করেছিল। ১২০৫ হিজরীতে, (১৭৯১ ঈসায়ী সন) ওহাবী মতবলম্বী আব্দুল আজিজ, মক্কার আমীর, শরীফ গালিব আফেন্দির বিরুদ্ধে প্রথমবারের মত যুদ্ধ ঘোষণা করে। এযাবৎ গোপনে তারা ওহাবী মতবাদ ছাড়িয়ে যাচ্ছিল, তারা হত্যা করেছিল অনেক মুসলমান পুরুষ, নারী ও শিশুদের। দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ এবং জবরদখল করেছিল তাদের সম্পদ-সম্পত্তিসমূহ।

ওহাবী নজদী ছিল বনী তামিম গোত্রের। ১১১১ হিজরী শতকে (১৬৯৯ ঈসায়ী সন) নজদ মরুর হুরাই-মিলা শহরের নিকটস্থ উআইনা গ্রামে তার জন্ম এবং মৃত্যু হয় ১২০৬ হিজরীতে (১৭৯২ ঈসায়ী সন)। প্রথম দিকে ব্যবসার উদ্দেশ্যে সে গিয়েছিল বসরা, বাগদাদ, ইরান, ভারত এবং দামেস্কে। সেখানে সে তার চাতুরতা ও আগ্রাসী স্বভাবের জন্য “শেখ নজদি” খেতাব পেয়েছিল। এই অঞ্চলগুলি থেকে বহু অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা লাভের ফলশ্রুতিতে একজন নেতা হওয়ার পরিকল্পনা আঁটতে শুরু করে সে ১১২৫ হিজরীতে, (১৭১৩ ঈসায়ী সন।

বসরাতে তার সাক্ষাৎ হয় একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর হেমপার এর সঙ্গে। যে কিনা বুঝেতে পেরেছিল যে, এই নাদান যুবকের (ওহাবী নজদীর) রয়েছে বিপ্লব ঘটিয়ে নেতা হওয়ার অভিলাষ। দীর্ঘদিনে সে তার সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করে। সে তাকে প্রলুব্ধ করেছিল সেসব শয়তানি আর শঠতায় যা সে “ব্রিটিশ মিনিস্ট্রি অব দি কমনওয়েলথ-এর কাছে শিখেছিল। নজদির এসব প্রবঞ্চনার প্রতি এতো অনুপ্রেরণা দেখে সে তাকে একটি নতুন ধর্ম প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেয়।

এজন্য এই গুপ্তচর এবং ওহাবী নজদী যা খুঁজছিল তা তারা পেয়ে যায়। তারা ভেবে দেখল, লক্ষ্য অর্জনে নতুন তরীকা বের করতে হলেও করতে হবে এবং লক্ষ্য অর্জনের প্রস্তুতি হিসেবে মনোযগের সঙ্গে শুনতে থাকে, পবিত্র মদীনা শরীফের এবং দামেস্কের হাম্বলী মাযহাবের উলামাগণের বক্তৃতাসমূহ। সে নজদে ফিরে গিয়ে গ্রামবাসীর জন্য ধর্ম বিষয়ে অনেক ছোট ছোট পুস্তিকা রচনা করে। সে লিখলো, যা সে ব্রিটিশ গুপ্তচরের নিকটে শিখেছিল এবং সংমিশ্রণ ঘটাল মু’তাজিলা ও অন্যান্য বিদয়াতিদের অপব্যাখ্যার ভ্রান্ত তথ্যসমূহ। বহু অশিক্ষিত গ্রামবাসী, বিশেষ করে দারইয়ার অধিবাসী এবং তাদের মূর্খ নেতা, ইবনে সউদ তাকে অনুসরণ করলো।

আরবরা পুরুষানুক্রতিক বংশ মর্যাদার বিশেষত্বকে খুব মান্য করে এবং যেহেতু ওহাবী নজদী নিজে কোন সুপরিচিত পরিবারের লোক ছিলো না তাই সে স্বীয় ত্বরীকা, যার নাম করণ করেছিল ‘ওহাবী’ মতবাদ। সে প্রচার কার্যে ইবনে সউদকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছিল। সে নিজেকে কাজী এবং ইবনে সউদকে হাবিস (শাসক) হিসেবে পরিচিত করেছিল। তারা তাদের শাসনতন্ত্রে পাশ করেছিল যে, উভয়ই কেবল তাদের সন্তানদের দ্বারা স্থলাভিষিক্ত হবে। ১৩১৬ হিজরীতে (১৮৮৮ ঈসায়ী সন) যখন ‘মিরআত আল-হারামাইন’ লেখা হয় তখন ইবনে সউদ বংশোদ্ভূত আব্দুল্লাহ্ ইবনে ফয়সাল নজদ-এর আমীর এবং ইবনে আব্দুল ওহাব কাজী।

(ইনশাআল্লাহ এ ব্যাপারে সামনে আরো বিস্তারিত পোষ্ট দেব) সউদী ওহাবী সরকার পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার রক্ষক নয়, বরং ক্ষতিসাধনকারী ইহুদীদের বংশধর সউদী ওহাবী সরকারকে অনেক অজ্ঞ মুসলমানগণ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার একনিষ্ঠ খাদিম এবং অনেক কিছু মনে করে। কথায় কথায় সউদী ওহাবী সরকারের উদাহরণ দেয়। যেহেতু মুসলমানগণ উনাদের অন্তরে পবিত্র মক্কা শরীফ, পবিত্র মদীনা শরীফ উনাদের প্রতি মুহব্বত রয়েছে সেহেতু মুসলমানগণ মনে করেন সউদী ওহাবী সরকার পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরুদ্ধে কোনো কাজ করতে পারে না। ঠিক এই বিশ্বাসের পূর্ণ ফায়দা লুটছে সউদী ওহাবী ইহুদী গোষ্ঠী। তারা একের পর বিভ্রান্তিমূলক, শরীয়ত বিরুদ্ধ কাজ করে যাচ্ছে।

হারামকে হালাল, হালালকে হারাম করে যাচ্ছে, চাঁদের তারিখ নিয়ে হেরফের করছে, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার স্মৃতিচিহ্ন ধ্বংস করছে, পবিত্র পবিত্র মীলাদ শরীফ ও পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনাদের বিরোধিতা করছে, বিভিন্ন ধরনের বদআক্বীদা পোষণ করাসহ এমন অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। সে হিসেবে এ সউদী ওহাবী সরকার পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার রক্ষক নয়, বরং ক্ষতি সাধনকারী। ইহুদীদের বংশধর, দালাল বলেই তাদের পক্ষে এসব সম্ভব। মুসলমানগণ উনাদের দায়িত্ব হলো- এই সউদী ওহাবী সরকারকে তওবা করানো; অন্যথায় ক্ষমতা চ্যুত করতে হবে। নচেৎ এরা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ক্ষতিসাধন করেই যাবে।

মুসলমান দেশসমূহ ধ্বংসে মুনাফিক সউদী ওহাবী সরকারের কিছু অপকর্ম ১) ফিলিস্তিনে ইহুদীদের নির্বিঘœ প্রবেশ ঘটাতে ব্রিটেনের সাথে গোপনে চুক্তি করে সউদী ওহাবী সরকার। সেই গোপন চুক্তি অনুসারে মাত্র ২০ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমি ইহুদীদের কাছে বিক্রি করে দেয় সউদী ওহাবী বিশ্বাসঘাতকরা। ২) ১৯৯০ সালে ইরাক হামলার সময় আমেরিকার সকল খরচ বহন করে সউদী ওহাবী সরকার। ৩) আমেরিকা সউদী ওহাবীদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সউদীরা সারা বিশ্বে অর্থ সরবরাহ করে সন্ত্রাসী সৃষ্টি করে আর আমেরিকা সেই কথিত সন্ত্রাস দমনের নামে আগ্রাসন চালায়।

৪) ২০০১ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন হামলার মূল উছিলা ভ- লাদেন, সেই লাদেন পারিবারিক ভাবে সউদী ওহাবী পরিবারের অতি ঘনিষ্ঠ। ৫) ২০০৩ সালে ইরাক হামলার সময় সউদী ওহাবী সরকারের অনুমতিতে সউদী ঘাঁটি ব্যবহার করে আমেরিকা। ৬) ইয়েমেনে মার্কিন ড্রোন হামলা চলছে, এখানেও সেই আমেরিকাকে ডেকে নিয়ে আসছে সউদী ওহাবী সরকার। ৭) মিশরে মুরসির পতনে সেনাবাহিনীকে অর্থ দেয় সউদী ওহাবী সরকার। ৮) সিরিয়ার বিদ্রোহীদের রাসায়নিক অস্ত্র সরবরাহ করে খোদ সউদী ওহাবী সরকার।

৯) রাসায়নিক অস্ত্রকে অজুহাত বানিয়ে আমেরিকাসহ সকল পশ্চিমা সন্ত্রাসীদের ডেকে নিয়ে আসে সউদী ওহাবী সরকার। ১০) সিরিয়ায় পশ্চিমা আগ্রাসনের সকল খরচ দিতে রাজি হয় সউদী ওহাবী সরকার। এরপরও কি মুসলমান উনারা সউদী ওহাবী সরকারকে বিশ্বাস করবে? ইংরেজ সৃষ্ট কথিত আহলে হাদীস ওরফে ওহাবী গ্রুপঃ এদের উৎপত্তি ইতিহাস আহলে হাদিস গুরুপের উৎপত্তির ছহীহ ইতিহাস ইংরেজদের ষড়যন্ত্রঃ ইতিহাস সাক্ষ্য ইংরেজরা আসার আগে এই উপমহাদেশে মাযহাবের বিরোধিতা ছিলনা। ধর্মীয় কোন্দল ছিলনা। টিপু সুলতান রহঃ, মোঘল সম্রাজ্যের সকল মোঘল বাদশা, শাহজাহান, ঘুরি, জাহাঙ্গীর, বাদশা যফরসহ সকলেই হানাফী মাযহাবী ছিল।

এ উপমহাদেশে যত মুসলিম হাকিম বংশীয়, যত গোলাম বংশীয় আর যত ঘুরি বংশীয়, আর যত খিলজী বংশীয়, সাদাত বংশীয়, তুঘলোক বংশীয়, আর সুরী অথবা মোগল বংশীয় বাদশা ছিল, সবাই ছিলেন সুন্নী হানাফী। ..... (তরজুমানে ওহাবিয়া-২৫) যখন ইংরেজরা আসল। ওরা দেখল এদেশের মুসলমানরা তাদের ধর্মের ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ। তাদের মাঝে কোন অভ্যান্তরীণ বিভেদ নাই। একতার এক স্বর্গীয় বাঁধনে তারা জড়িয়ে আছে।

তাই ইংরেজরা তাদের বহুল প্রচলিত “ডিভাইট এন্ড রোলস” তথা “পরস্পরে বিভেদ সৃষ্টি করে তাদের উপর শাসন করা হবে” এই নীতি বাস্তবায়িত করতে উঠেপরে লেগে গেল। মুসলমানদের মাঝে ধর্মীয় বিভেদ-কোন্দল সৃষ্টির জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করে দিল। টাকা দিয়ে, অর্থ সম্পদ দিয়ে, বিত্ত-বৈভব দিয়ে কিছু দুনিয়ালোভি আলেমদের নির্বাচিত করে। একদিকে হুসাইন আহমাদ মাদানী ছাহেবের ফাতওয়া যে, “ইংরেজদের দলে ঢুকা হারাম”। আর আশরাফ আলী থানবী ছাহেবের ফাতওয়া, “ইংরেজদের পণ্য ব্যবহার হারাম”।

অপরদিকে ইংরেজরা একদল ঈমান বিক্রেতাদের ক্রয় করে নিল। ইংরেজদের পক্ষে একজন কিতাব লিখল- “আল ইকতিসাদ ফি মাসায়িলিল জিহাদ”। যাতে সে লিখে যে, ইংরেজদের শাসন ইসলামী রাষ্ট্র। আর ইংরেজদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা হারাম। এই বই লিখার পর তাকে ‘শামসুল উলামা উপাধী’ দেয়া হয়, তাকে মেডেল দেয়া হয়।

অনেক পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। ওহাবী সম্বোধনঃ যখন এদেশের মানুষ দেখল যে, ওরা ইংরেজদের দালালী করেছে। তখন তাদেরকে “ওহাবী” বলে গালিদেয়া শুরু হয়। ওহাবী সেই যুগে তাদের বলা হত- যারা দেশের গাদ্দার। দেশদ্রোহী।

ওরা যেখানেই যেত সাধারণ মানুষ তাদের দেখে বলত- এইতো ওহাবী চলে এসেছে। আহলে হাদীছ নামকরণঃ এভাবে যখন তাদেরকে সবাই ঘৃণার চোখে দেখতে লাগল, তখন নিজেদের সম্মানিত করার জন্যওরা রাণী ভিক্টোরিয়ার কাছে গিয়ে আবেদন করল যে, আমরাতো আপনাদের কথাঅনুযায়ী কিতাব লিখে আপনাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা হারাম বলেছি, এখন আমাদেরসবাই ধিক্কার দিচ্ছে। গালি দিচ্ছে “ওহাবী” বলে। আমাদের জন্য সম্মানজক কোনপদবীর ব্যবস্থা করুন। তখন তাদের নাম দেয় রাণী ভিক্টোরিয়া “মুহাম্মদী” এবং পরবর্তীতে “আহলে হাদীস”।

(এশায়াতুস সুন্নাহঃ পৃ: ২৪-২৬, সংখ্যা: ২, খ: ১১) পাঠকের সুবিধার্থে ওহাবী থেকে আহলে হাদীছ পদবী পাওয়ার একটি দরখাস্তের অনুবাদ নিম্নে তুলে ধরা হলঃ “বখেদমতে জনাব গভার্মেন্ট সেক্রেটারী, আমি আপনার খেদমতে লাইন কয়েক লেখার অনুমতি এবং এর জন্য ক্ষমাও পার্থনা করছি। আমার সম্পাদিত মাসিক “ এশায়াতুস সুন্নাহ” পত্রিকায় ১৮৮৬ ইংরেজিতে প্রকাশ করেছিলাম যে, ওহ্হাবী শব্দটি ইংরেজ সরকারের নিমক হারাম ও রাষ্ট্রদ্রোহীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। সুতরাং এ শব্দটি হিন্দুস্তানের মুসলমানদের ঐ অংশের জন্য ব্যবহার সমীচিন হবে না, যাদেরকে “আহলে হাদীস” বলা হয় এবং যারা সর্বদা ইংরেজ সরকারের নিমক হালালী, আনুগত্যতা ও কল্যাণই প্রত্যাশা করে, যা বার বার প্রমাণও হয়েছে এবং সরকারী চিঠি প্রত্রে এর স্বীকৃতিও রয়েছে। অতএব, এ দলের প্রতি ওহ্হাবী শব্দ ব্যবহারের জোর প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে এবং সাথে সাথে গভার্মেন্টের বরাবর অত্যন্ত আদব ও বিনয়ের সাথে আবেদন করা যাচ্ছে যে, সরকারীভাবে এ ওহ্হাবী শব্দ রহিত করে আমাদের উপর এর ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক এবং এ শব্দের পরিবর্তে “আহলে হাদীস” সম্বোধন করা হোক। আপনার একান্ত অনুগত খাদেম আবু সাঈদ মুহাম্মদ হুসাইন সম্পাদক, এশায়াতুস সুন্নাহ দরখাস্ত মুতাবেক ইংরেজ সরকার তাদের জন্যে “ ওহ্হাবী ” শব্দের পরিবর্তে “আহলে হাদীস” নাম বরাদ্দ করেছে।

এবং সরকারী কাগজ-চিঠিপত্র ও সকল পর্যায়ে তদের “আহলে হাদীস” সম্বোধনের নোটিশ জারি করে নিয়মতান্তিকভাবে দরখাস্তকারীকেও লিখিতভাবে মঞ্জুরী নোটিশে অবহিত করা হয়- ক) সবর্প্রথম পাঞ্জাব গভার্মেন্ট সেক্রেটারী মি: ডাব্লিউ, এম, এন (W.M.N) বাহাদুর চিঠি নং-১৭৫৮ এর মাধ্যমে ৩রা ডিসেম্বর ১৮৮৬ ইংরেজিতে অনুমোদনপত্র প্রেরণ করেন। খ) অতপর ১৪ই জুলাই ১৮৮৮ ইং সি,পি গভার্মেন্ট চিঠি নং-৪০৭ এর মাধ্যমে গ) এবং ২০শে জুলাই ১৮৮৮ ইং ইউ,পি গভার্মেন্ট চিঠি নং-৩৮৬ এর মাধমে ঘ) এবং ১৪ই আগষ্ট ১৮৮৮ ইং বোম্বাই গভার্মেন্ট চিঠি নং-৭৩২ এর মাধ্যমে ঙ) এবং ১৫ই আগষ্ট ১৮৮৮ মাদ্রাজ গভার্মেন্ট চিঠি নং-১২৭ এর মাধ্যমে চ) এবং ৪ঠা মার্চ ১৮৯০ ইং বাঙ্গাল গভার্মেন্ট চিঠি নং-১৫৫ এর মাধ্যমে দরখাস্তকারী মৌলভী আবু সাইদ মুহাম্মদ হুসাইন বাটালভীকে অবহিত করা হয়। ( এশায়াতুস সুন্নাহঃ পৃ: ৩২-৩৯, সংখ্যা: ২, খ: ১১) এদের ভন্ডামী ও গোড়ামীর একাংশঃ এরা যা আমল করে সেগুলো সহীহ হাদীছ। যা করে না তা বেদয়াতী, কুফরী, শিরকী আমল। অথচ এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই।

যে সমস্ত হাদীছ তাদের দলের/মতের পক্ষে সেগুলোকে বলে ছহীহ হাদীছ। আর যে হাদীছগুলো তাদের মতের বিরুদ্ধে যায় সেগুলো ছহীহ হলেও তারা বলে এটা জাল হাদিস। (নাউযুবিল্লাহ) বুখারী শরীফ খুলে যা বুঝবে তাই আমল করবে। কাউকে অনুসরণ করবে না বা কোন বিশেষজ্ঞদের নিকট জ্ঞান অন্বেষণ করবেনা। মাযহাব মানা বেদয়াত ও নাজায়েয।

অথচ মাযহাব অনুসরণ করেছিলেন বুখারী, মুসলিম, তিরিমীযী, আবু দাউদ, নাসাঈ সহ সমস্ত হাদীছ শরীফ এর লিখকগণ এবং হক্কানী রব্বানী আলিম ওলামাগণ সকলেই। এমনকি মদীনায় মালেকী মাযহাব এবং মক্কা শরীফে হাম্বলী মাযহাবের প্রচলন রয়েছে। বড়ই আশ্চর্যের বিষয় যে, রমযান এলে বেনামাযী নামাযী হয়ে যায়। ফরজ যারা পড়তেন তারা নফল পড়া শুরু করেন। সকল আমলকে বাড়িয়ে দেন।

যে কুরআন পড়েনা, সেও কুরআন পড়তে শুরু করে। যে নফল দুই রাকাত পড়ত সেও ৪ রাকাত বা বেশি পড়তে থাকে। কিন্তু এই নাফরমান, ওহাবী, গায়রে মুকাল্লিদ, আহলে হাদীছ গ্রুপ ২০ রাকাত তারাবীহকে কমিয়ে ৮ রাকাত পড়ে। তারা যে বুখারী শরীফের দলীল যে তাতে তারাবীর নামাযের কথা নেই। মক্কা-মদীনা শরীফেও ২০ রাকাত তারাবীহ পড়া হয়।

মুলতঃ তারাবীর নামায বিশ রাকায়াত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহিস সাল্লাম-এর যুগ থেকেই শুরু হয়েছে। (মুসান্নেফ ইবনে আবী শায়বা ২/২৮৬, আবু দাউদ ১/২০২, বাইহাকী ২/৯৬) ফেতনাবাদ এই দলের অযৌক্তিক প্রশ্ন “তোমরা মুহাম্মদী না হানাফী”? ওদের এই প্রশ্নটিই একটা ধোঁকাবাজি। এরকম প্রশ্ন মূর্খতা ছাড়া কিছু নয়, আজ শনিবার নাকি ৫ তারিখ? আজ নভেম্বর নাকি রবিবার? প্রশ্ন হবে সামঞ্জস্যতামূলক আজ শনিবার নাকি রবিবার? আজ নভেম্বর নাকি ডিসেম্বর? সুতরাং এক্ষেত্রেও প্রশ্ন হবে-“তুমি মুহাম্মদী না ঈসায়ী? তুমি হানাফী না শাফেয়ী?” কিন্তু একথা বলা ভুল- আজ নভেম্বর না শনিবার? তুমি হানাফী না মুহাম্মদী?” আসলে শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় না। এরা মুহাম্মদি পরিচয় দিতে চায় কিন্তু আমরা উপরে ইতিহাস পড়েছি যে, এরা কথিত আহলে হাদীছ যারা ছিল ইংরেজদের দালাল তথা ওহাবী । এরা সন্দেহ সৃষ্টির এক ভয়ানক দল: আহলে হাদীস গ্রুপ ইংরেজদের হওয়ার কারণে, নবীজির শান মুবারকে মানহানি ও সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের সমালোচনায়, এবং জঙ্গিপনায়, দুর্নীতি মামলায় জর্জরিত।

এসবের দিকে তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। বরং যেই লোকগুলো নামায পড়ছে তাদের মনে ওয়াসওয়াসা তথা সন্দেহ সৃষ্টি করে দিয়ে বলছে যে, তোমাদের নামায হয়না। তোমাদের নামায মুহাম্মদী নামায নয় হানাফী নামায। এদের ওয়াসওয়া থেকে আশ্রয়ের জন্য আল্লাহ তায়ালা শিক্ষা দিয়েছেন যে, যারা মানুষের মনে ওয়াসওয়াসা তথা সন্দেহ সৃষ্টি করে দেয় মানুষ ও জিন জাতির মধ্য থেকে তাদের থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। {সূরা নাস-৫-৬} তথাকথিত আহলে হাদীছ নেতাদের সম্পর্কে জাতীয় পত্রিকায় যেসব খবর প্রকাশিত হয়েছে তার একাংশ: সোনালী ব্যাংকের আরো ঋণ জালিয়াতির তথ্য ফাঁস ঢাকা, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১২ (বাসস) : রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক অর্থ জালিয়াতির ঘটনা তদন্তকালে আরো কিছু কোম্পানীর বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতির তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

..... অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন, সম্পদের বিষয়ে তথ্য গোপন, অর্থ পাচার ও প্রতারণার অভিযোগে দুদক গত এক মাসে জনপ্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তা, ব্যবসায়ীসহ মোট ৫৮ জনের বিরুদ্ধে ৩২টি মামলা দায়ের করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- এনজিও’র মাধ্যমে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে প্রচুর পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করে তার অপব্যবহার করার অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অপসারিত শিক্ষক ড. আসাদুল্লাহ গালিবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের। (বাসস সংবাদ সংস্থা) আহলে হাদীস আন্দোলন নেতা গালিবের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ আহলে হাদীস আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আসাদুল্লাহ আল-গালিবের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশায় থেকে বেআইনীভাবে ব্যবসায় জড়িত থাকায় তার বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। .... মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, কুয়েতের চার্জ দ্য এ্যাফেয়ার্স ড. আসাদুল্লাহ আল-গালিবকে ইসলামের প্রচার, প্রসার ও সমাজ কল্যাণের স্বার্থে ১৯৯০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ১৭ লাখ ৬১ হাজার ৩৭৬ টাকার পে-অর্ডার দেন।

ওই পে-অর্ডার ড. গালিব নিজের নামে খোলা ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড রাজশাহী শাখায় (হিসাব নম্বর-১৭৪৮) জমা করে পরবর্তীতে ব্যাংক হতে অর্থ তুলে বিভিন্ন খাতে খরচ করেন। সরকারী বেতনে নিয়োজিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক এবং দ-বিধির ২১ ধারা অনুযায়ী পাবলিক সারভেন্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তাওহীদ ট্রাস্ট গঠন করে চেয়ারম্যান/আমির পদে নিয়োজিত থেকে বিদেশী প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যক্তিগতভাবে লাখ লাখ টাকার নির্মাণ কাজের চুক্তি ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারী কর্মচারী হয়ে বেআইনী ব্যবস্থায় জড়িত হয়েছেন, যা দ-বিধির ১৬৮ ধারার অপরাধ বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া সরকারী কর্মচারী হিসেবে বহাল থেকে কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে লাভজনক বেসরকারী এনজিওর সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ ২ নম্বর আইনের ৫ (১) (ডি) বর্ণনামতে ওই আইনের ৫ (২) ধারার অপরাধ করেছেন বলেও এজাহারে বলা হয়। (২৪-০৮-২০১২, দৈনিক জনকণ্ঠ, কালের কণ্ঠ, প্রথম আলো সহ সকল জাতীয় পত্রিকা) দুর্নীতি মামলায় জামিন পাননি ড. গালিব বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর, ২৯ আগস্ট, ২০১২, ঢাকা: আহলে হাদিস আন্দোলনের আমির ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের শিক্ষক ড. আসাদুল্লাহ আল গালিবের বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা মামলায় জামিন আবেদন উপস্থাপিত হননি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ... প্রসঙ্গত, জঙ্গি মদদদানের অভিযোগে ২০০৫ সালে ড. গালিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তাঁরবিরুদ্ধে দায়ের করা হয় একাধিক মামলা। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকেতাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। তবে ২০০৮ সালে তিনি জামিনে ছাড়া পান। ... উল্লেখ্য যে,এরা আব্দুল্লাহ বিন সাবার কায়েম মোক্বাম। আব্দুল্লাহ বিন সাবা যেমন মুসলমনাদের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে সুচারুভাবে।

ঠিক একই কাজ করছে এই ইংরেজ প্রসূত দল গায়রে মুকাল্লিদ ওহাবী তথা আহলে হাদীস গ্রুপ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।