বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ
তুতানখামুন (খ্রিস্টপূর্ব ১৩৪১-১৩২৩) প্রাচীন মিশরের অস্টাদশ রাজবংশের ফারাও। মাত্র ৯ বছর বয়সে সিংহাসনে বসে ৯ বছর মিশর শাসন করে ১৮ বছর বয়েসে মৃত্যু বরণ করেন । মৃত্যুর প্রায় ৩,৩০০ বছর পরে ব্রিটিশ ধনকুবের লর্ড কার্নারভন-এর অর্থায়নে ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক হাওয়ার্ড কার্টার ১৯২২ নভেম্বর মাসে ফারাও তুতানখামুন-এর সমাধি সৌধ আবিস্কার করে ।
ফারাও তুতানখামুন- এর শাসনকাল সেরকম উল্লেখযোগ্য কিছু নয়-তবে মমিসহ মূল্যবান ধনরত্নে পরিপূর্ণ সমাধি সৌধটি আবিস্কারের ফলে এবং কিছু রহস্যজনক ঘটনার যোগসূত্রে ফারাও তুতানখামুন রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন । ফারাও তুতানখামুন- এর সমাধি সৌধটি যেমন রহস্যময় তেমনি স্বল্পায়ূ ফারাওয়ের জীবনও ছিল অস্বাভাবিক ঘটনায় পরিপূর্ণ। ১৯৬৮ সালে মমির এক্স রে করার পর ফারাও তুতানখামুন -এর মস্তিস্কের করোটিতে গভীর ক্ষত চিহ্ন পাওয়া গেছে। কাজেই কিশোর ফারাও কে হত্যা করা হয়েছে কিনা এই প্রশ্নটি উঠে এসেছে ...
প্রাচীন মিশরের মানচিত্র ‘ভ্যালি অভ দ্য কিংস’-এর অবস্থান। নীল নদের পশ্চিম তীরে ।
থিবস নগরের (আধুনিক লুক্সর) বিপরীতে। এখানেই রয়েছে ফারাও তুতানখামুন-এর সমাধিসৌধ।
তুতানখামুন-এর সমাধিসৌধটি নানা কারণে রহস্যাবৃত। ১৯২২ সালে সমাধি সৌধ আবিস্কার পর থেকে তুতানখামুন-এর সমাধিসৌধে অদ্ভূত সব ঘটনা ঘটছে। যা ‘তুতানখামুন অভিশাপ’ বলে পরিচিত ।
সমাধি সৌধটি আবিস্কারের সাত সপ্তাহ পর, অর্থাৎ ১৯২৩ সালের এপ্রিল মাসে লর্ড কার্নারভন মারা যান। তার গালে মশা কামড়ে ছিল । আর তাতেই ইনফেকশন হয়েছিল । আশ্চর্য এই তুতানখামুন-এর এর মুখোশ খোলার পর দেখা গেল লর্ড কার্নারভন এর গালের যে জায়গায় মশা কামড়ে ছিল তুতানখামুন-এর গালের ঠিক সে জায়গায় মশার কামড়ের দাগ রয়েছে!
ফারাও তুতানখামুন -এর সমাধি সৌধ।
লর্ড কার্নারভন মারা যাওয়ার সময় কায়রো শহরে নাকি বিদ্যুৎ চলে গিয়েছিল।
ঠিক ওই সময়ে লন্ডনে লর্ড কার্নারভন কুকুরটিও (সুসি) মারা যায়। বিস্ময়ের এখানেই শেষ নয়। তুতানখামুন-এর সমাধি সৌধটি আবিস্কারের দিনই প্রত্নতাত্ত্বিক হাওয়ার্ড কার্টার-এর ক্যানারি পাখিকে একটি সাপ খেয়ে ফেলে। এসব অদ্ভূত ঘটনার কারণে তুতানখামুন-এর সমাধিসৌধটিও রহস্যাবৃত হয়ে রয়েছে।
ফারাও তুতানখামুন-এর সমাধি সৌধের নকশা।
যাকে নিয়ে কুড়ি শতকে এত রহস্য জমে উঠেছে, সেই তুতানখামুন- এর জন্ম ১৩৪১ খ্রিস্টপূর্বে । তুতানখামুন- এর পিতা ফারাও চতুর্থ আমেনহোটেপ। তুতানখামুন- এর মা কিয়া (বা কিরা) ছিলেন ফারাও চতুর্থ আমেনহোটেপ -এর একজন উপপত্নী। নেফারতিতি ছিলেন ফারাও চতুর্থ আমেনহোটেপ এর প্রধানা স্ত্রী । ছয় কন্যার জননী ছিলেন নেফারতিতি ।
৩য় কন্যার নাম রাখা হয়েছিল Ankhesenpaaten. পরবর্তীতে সৎ বোন আনখেসেনপাআতেন এর সঙ্গে তুতানখামুন- এর বিবাহ হয়েছিল। বয়সে আনখেসেনপাআতেন তুতানখামুন- এর সামান্য বড় ছিল।
চতুর্থ আমেনহোটেপ বা আখেনাতেন। (সময়কাল ১৩৫১-১৩৩৪ খ্রিস্টপূর্ব) প্রাচীন মিশরের ধর্মীয় চিন্তার ইতিহাসে এক বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছেন। চতুর্থ আমেনহোটেপ-এর সময়ে আমুন ছিলেন প্রধান দেবতা।
চতুর্থ আমেনহোটেপ বহু দেবদেবী ভিত্তিক প্রাচীন মিশরীয় সমাজে একেশ্বরবাদ প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ নিয়েছিলেন। দেবতা আমুন-এর উপাসনার বদলে সূর্যদেব আতেন-এর (aten) উপাসনার চতুর্থ আমেনহোটেপ । নিজের নাম বদলে রাখেন: ‘আখেনাতেন। ’ অর্থাৎ ‘আতেন এর দাস। ’ পারিবারিক ভাবে তুতানখামুন- এর নাম রাখা হয়েছিল Tutankhaten ; এর অর্থ: Living image of Aten. ফারাও আখেনাতেন প্রাচীন মিশরে দেবতা আমুন উপাসনা নিষিদ্ধ করে বলপূর্ব সৈন্যবাহিনী আমুন পুরোহিতদের দমন করতে চেয়েছিলেন।
রাজধানী থিবস থেকে সরিয়ে আখেতাতেন নগরে নিয়ে আসেন। আখেতাতেন শব্দটির অর্থ ‘আতেন এর দিগন্ত’। তুতানখামুন- এর জন্ম এই আখেতাতেন নগরেই। জায়গাটি বর্তমান মিশরের আমারনায়। যা হোক।
প্রাচীন মিশরে দেবতা আমুন-এর পুরোহিতরা ঐতিহ্যবাহী উপাসনালয়-কেন্দ্রিক অর্থনীতি পরিচালনা করত । আখেনাতেন প্রবর্তিত নতুন শাসনামল আমুন পুরোহিত দেবতা উৎখাত করে স্থানীয় প্রশাসক ও সামরিক কর্মকর্তারা ক্ষমতা গ্রহন করে এবং তারা ক্রমেই ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠে। এদের লোভের এবং দুনীর্তির কারণে নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধসে পড়ে। এতে সামাজিক অরাজকতা দেখা দেয় এবং সাধারণ জনগন
অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। আখেনাতেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হন।
সেনাবাহিনী দু-ভাগে ভাগ হয়ে যায়। একদল সৈন্য জনগনের পক্ষে আর একদল সৈন্য ফারাও আখেনাতেন-এর পক্ষে আনুগত্য প্রকাশ করে । কাজেই (হুসনে মুবারকের মতো) সমঝোতায় আসতে হল খেয়ালি ফারাও কে । দেবতা আমুন-এর উপাসনালয়গুলি খোলা হল। এমন এক পরিস্থিতিতে স্মেনখকারে মিশরের ক্ষমতা দখল করে ।
স্মেনখকারে ছিলেন ফারাও তৃতীয় আমেনহোটেপ- এর ছোট ছেলে। কাজেই ফারাও আখেনাতেন- এর ভাই। কারও কারও মতে মিশরের ক্ষমতা তখন চলে গিয়েছিল আখেনাতেন-এর স্ত্রী নেফারতিতি-র কাছে।
তুতানখামুন এবং তার স্ত্রী আনখেসেনপাআমুন।
আখেনাতেন যখন মারা যান সে সময় Tutankhaten -এর বয়স ৯।
৯ বছর বয়েসেই মিশরের সিংহাসনে বসেন Tutankhaten । ঐ বছরেই সৎ বোন আনখেসেনপাআতেন কে বিয়ে করেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমুন পুরোহিতরা Tutankhaten এর নাম থেকে আতেন শব্দটি ছেঁটে ফেলতে ক্রমবর্ধমান দাবীর তোলে। কাজেই Tutankhaten নাম বদলে রাখা হয় Tutankhamun. স্ত্রী আনখেসেনপাআতেন - এর নামও বদলে রাখা Ankhesenamun.
এভাবে দুজনের নামের শেষে ‘আতেন’ এর বদলে ‘আমুন’ যুক্ত করা হয়।
পরবর্তীতে আনখেসেনপাআমুন দুই কন্যা জননী হয়েছিল।
যদিও মৃত। সদ্যমৃত শিশু দুটির মমি তুতানখামুন-এর সমাধিতে পাওয়া গিয়েছে।
তুতানখামুন। তার আমলে মিশর জুড়ে বেশ কিছু নির্মান কাজ হয়েছিল। সেনাপতি হোরেমহেব-এর নেতৃত্বে নুবিয়া ও সিরিয়ায় সামরিক অভিযান পরিচালিত হয়েছিল।
তুতানখামুন ফারাও হওয়ার পর মিশরের রাজধানী আবার থিবস-এ সরিয়ে নেওয়া হয়। থিবস ছিল আমুন দেবতার তীর্থস্থান এবং আমুন পুরোহিতদের ক্ষমতার কেন্দ্র। তুতানখামুন-এর অল্প বয়েস। সে কারণে মন্ত্রী এই (নেফারতিতির বাবা ) এবং সেনাপতি হোরেমহেব রাজকার্যে তুতানখামুন কে নানা পরামর্শ দিত। তুতানখামুন-এর প্রতি সেনাপতি হোরেমহেব এর দৃঢ় সমর্থন ছিল।
সে প্রায় ‘উপ-ফারাও’ হয়ে উঠেছিল।
মন্ত্রী এই। তুতানখামুন আঠারো বছর বয়েসে মারা যান। মন্ত্রী এই -এর তত্ত্বাবধানে তাড়াহুড়ো করে ‘ভ্যালি অভ দ্য কিংস’-এ তুতানখামুন কে সমাহিত করা হয়। মন্ত্রী এই -এর কাজকর্মে মিশরের ফারাও হওয়ার বাসনা স্পস্ট হয়ে ওঠে।
তুতানখামুন এর বিধবা স্ত্রী আনখেসেনপাআমুন মনে হয় বিষয়টি মেনে নিতে পারছিল না। হিট্টিরা মিশরের চিরশত্রু হলেও হিট্টি রাজার প্রথম সাপপিলুলিউমার কাছে আনখেসেনআমুন চিঠি লিখেছিলেন। ...আমি ভয় পাচ্ছি। আমি আপনার যে কোনও একজন ছেলেকে বিয়ে করতে চাই। আমাকে একজন ‘দাস’- এর সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
আমি মিশরের কোনও পুরুষকে বিয়ে করতে চাই না।
হিট্টি সাম্রাজ্য। হিট্টিরা ছিল আনাতোলিয়ার (বর্তমান তুরস্ক) ব্রোঞ্জ যুগের অধিবাসী ...খ্রিস্টপূর্ব অস্টাদশ শতকে হিট্টিরা এক উন্নত সভ্যতা গড়ে তুলেছিল। ভূমধ্যসাগরের পূর্বতীরে (এখন যেটা সিরিয়া, জর্দান) আধিপত্যের জন্য মিশরের সঙ্গে প্রায়ই সংঘাত বাধত।
নাঃ।
আনখেসেনআমুন- এর ইচ্ছে পূরণ হয়নি। হিট্টি রাজার প্রথম সাপপিলুলিউমা তার পুত্র রাজপুত্র জাননানযা কে মিশর পাঠালেন। জাননানযা মিশর আসার পথে মারা যায় ... তুতানখামুন-এর উত্তরাধিকারী না-থাকায় মন্ত্রী এই আনখেসেনআমুন কে বিয়ে করে। আনখেসেনআমুন-এর বয়স তখন উনিশ । ভাগ্যের ফেরে এক লোলচর্ম বৃদ্ধকে (সম্পর্কে মাতামহ) বিয়ে করতে বাধ্য হল! এরপর অবশ্য আনখেসেনআমুন সর্ম্পকে আর কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
বিয়ের পর মন্ত্রী এই নিজেকে ফারাও ঘোষনা করে । ফারাও এই চার বছর মিশর শাসন করেন।
ফারাও তুতানখামুন-এরসমাধির অভ্যন্তর ভাগের ছবি।
ফারাও তুতানখামুন-এর অকাল মৃত্যু আজও রহস্যাবৃত ...
ফারাও তুতানখামুন-এর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল না তাকে হত্যা করা হয়েছিল - এই বিষয়ে বিতর্ক আজও শেষ হয়নি। কে তাকে হত্য করেছিল? কেনই বা তাকে হত্যা করা হয়েছিল।
বিজ্ঞানীরা তুতানখামুন-এর মৃত্যুর কারণ সম্বন্ধে প্রচুর গবেষনা করেছেন। ফারাও তুতানখামুন-এর মমির সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। মাথার পিছনে আঘাত চিহ্ন ছাড়াও মৃত্যুর আগে পা ভেঙে গিয়েছিল । ভাঙা পায়ে ইনফেকশন হয়েছিল। তা ছাড়া গবেষকরা ডি এন এ পরীক্ষা করে কিশোর ফারাওয়ের শরীরে ম্যালেরিয়ার জীবাণুর অস্তিত্ব পেয়েছেন ।
এসব ঘটনাই কিশোর ফারাও এর মৃত্যুকে তরান্বিত করেছিল।
লর্ড কার্নারভন। এই ব্রিটিশ অভিজাত ধনকুবেরের অর্থায়নে ১৯২২ সালে ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক হাওয়ার্ড কার্টার নীল নদের পশ্চিম তীরে থিবস নগরের (আধুনিক লুক্সর) বিপরীতে ‘ভ্যালি অভ দ্য কিংস’-এ অবস্থিত ফারাও তুতানখামুন-এর সমাধিসৌধটি আবিস্কার করেছিলেন। সমাধি সৌধ খোলার সাত সপ্তাহ পর লর্ড কার্নারভন-এর গালে মশা কামড়ে মৃত্যু এবং তুতানখামুন-এর গালে মশার কামড়ের চিহ্ন-এসব বিচিত্র ঘটনা তুতানখামুন-এর সমাধিসৌধটিকে রহস্যাবৃত করে তুলেছে।
অনেকেরই সন্দেহের তীর মন্ত্রী এই -এর দিকে।
মিশরের ক্ষমতার লোভেই কি তিনি তুতানখামুন কে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলেন? তাই তো হয়েছিল। মাত্র ১৮ বছরে মারা গেলেন তুতানখামুন। তুতানখামুন-এর উত্তরাধিকারী না-থাকায় মন্ত্রী এই আনখেসেনআমুন কে বিয়ে করেন। কিশোর ফারাও এর মাথায় আঘাতের চিহ্ন। লং আইল্যান্ড ইউনিভারসিটির প্রখ্যাত মিশরতাত্ত্বিক বব ব্রিয়ার এই তত্ত্বের সমর্থক।
ব্রিয়ার অবশ্য মনে করেন যে এ রকম ভাবাই সবচে যৌক্তিক। বিরোধীরা অবশ্য বলে মমি করার সময় খুলিতে ফাটল ধরেছিল । যা হোক। ১৯৩১ সালে কায়রোতে রিং পাওয়া গিয়েছে। মন্ত্রী এই এবং তুতানখামুন-এর বিধবা স্ত্রী আনখেসেনআমুন-এর বিয়ের রিং।
আনখেসেনআমুন কে বিয়ে না-করলে সিংহাসনের বৈধ হয় না বলেই আনখেসেনআমুন কে বিয়ে করেছিলেন মন্ত্রী এই। আনখেসেনআমুন নিজেকে লোভীদের হাত থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করেছিল। হিট্টি রাজার প্রথম সাপপিলুলিউমার কাছে চিঠি লিখেছিল। আনখেসেনআমুন ফারাও চতুর্থ আমেনহোটেপ বা আখেনাতেন এবং নেফারতিতির কন্যা। মন্ত্রী এই এবং সেনাপতি হোরেমহেব কে দাসের অধিক ভাবতে পারেন নি।
সেনাপতি হোরেমহেব। ফারাও এই -এর মৃত্যুর পর সেনাপতি হোরেমহেব থিসব এর ক্ষমতা দখল করে। মিশরজুড়ে বিভিন্ন সৌধ থেকে তুতানখামুন-এর নাম মুছে ফেলে।
সেনাপতি হোরেমহেব, যিনি পরে ফারাও হয়েছিলেন, সন্দেহের বাইরে তাকেও রাখা হয়নি। সেনাপতি : হোরেমহেব, দীর্ঘদিন তুতানখামুন কে দিক নির্দেশনা দিলেও এখন তুতানখামুন-এর বয়স বাড়ছে।
নিজের হাতে ক্ষমতা নেওয়া সময় হচ্ছে। ক্ষমতা কে ছাড়তে চায়? তুতানখামুন স্বনির্ভর হোক তা চায়নি। তা হলে সেনাপতি হোরেমহেব কি খুনি? কিন্তু আমরা তুতানখামুন -এর মৃত্যুর পর মিশরের ক্ষমতায় মন্ত্রী এই কে দেখি। তাহলে?
ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক হাওয়ার্ড কার্টার। ইনিই ১৯২২ সালের নভেম্বর মাসের ৪ তারিখে ফারাও তুতানখামুন -এর সমাধি সৌধ আবিস্কার করেন।
সমাধি সৌধটি আবিস্কারের দিনই প্রত্নতাত্ত্বিক হাওয়ার্ড কার্টার ক্যানারি পাখিকে একটি সাপ খেয়ে ফেলে! আর যে সব শ্রমিক সমাধিসৌধটি আবিস্কারের সময় ভূগর্ভে কাজ করেছিল তাদের অনেকেই অল্প সময়ের মধ্যে মারা যায় । অবশ্য তারা ছিল বয়স্ক এবং তাদের অনেকেরই স্বাস্থ ভালো ছিল না। বেশির ভাগ শ্রমিকই অবশ্য পরিনত বয়সেই মারা গিয়েছিল। এসব কাকতালীয় ঘটনা তুতানখামুন-এর সমাধিসৌধটির প্রতি মানুষের আকর্ষন বাড়িয়ে তোলে। যা এখনও অক্ষুন্ন।
Egypt's Supreme Council of Antiquities অবশ্য দাবি করছে ফারাও তুতানখামুন -এর মৃত্যু স্বাভাবিক ভাবেই হয়েছে। রথ থেকে পড়ে গিয়ে পায়ের হাড় ভেঙে যায়। ভাঙা পায়ে সংক্রমন হয়েছিল। ২০০৫ সালের ৯ এপ্রিল এক প্রেস রিলিজের মাধ্যমে তারা এই তথ্য জানিয়েছে। এটি অবশ্য মিশরতাত্ত্বিক অ্যান্ডু কলিনস এবং ক্রিস অগিলভি হেলাল্ড সমর্থন করেন।
রথ থেকে পড়ে যাওয়ায় আরও একটি প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। হিব্রুভাষীরা মিশরে বন্দি ছিল। মুসা নবী তাদের উদ্ধার করেন। মিশরের তৎকালীন ফারাও পলাতক হিব্রুভাষীদের পিছু নিয়েছিল। সেই ফারাও রথ থেকে পড়ে গিয়েছিল।
তিনি তুতানখামুন নন তো ?
আমার মনে হয় না। কারণ মুসা নবীর সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব ৯০০।
আর হতভাগ্য তুতানখামুন- এর সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব ১৩৪১-১৩২৩ ...
ছবি: ইন্টারনেট।
তথ্যসূত্র:
Click This Link
http://www.kingtutone.com/tutankhamun/murder/
http://www.pekin.net/pekin108/wash/webquest/
Click This Link
http://news.bbc.co.uk/2/hi/health/8516425.stm
Click This Link
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।