আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রাচীন চিন: শাঙ যুগ

বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্‌উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ

চিন আমাদের দেশের উত্তরের একটি দেশ। বিশাল দেশ। সেই প্রাচীন কাল থেকেই কতই না উন্নত ছিল ওরা।

প্রাচীন চিনের সভ্যতা সংস্কৃতির খোঁজ করলে বিস্ময়ে স্তম্ভিত হয়ে যেতেই হয়। একটা জাতি কি করে একই সঙ্গে আধ্যাত্মিক ও কর্মবাদী হতে পারে- প্রাচীন চিন যেন তারই অনন্য দৃষ্টান্ত। একুশ শতক, চিনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের শতক। গোটা বিশ্ব ওরাই মুঠোয় ভরে নেবে এই শতকে। আফ্রিকায় বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিয়োগ করতে শুরু করেছে।

সুদানের তেলখনিগুলি নিয়ন্ত্রন করতে শুরু করেছে চিনেরাই। আর এভাবেই, মার্কিনীদের বদলে ওরাই হয়ে উঠছে আফ্রো-এশিয়ার গরীব দেশগুলোর প্রভু। কাজেই ওদের সভ্যতা-সংস্কৃতি সম্বন্ধে আগেভাগে জেনে রাখলে বরং আমাদেরই লাভ। ঠিক করলাম, সংক্ষেপে প্রাচীন চিনের সভ্যতাসংস্কৃতি নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে লিখব। আজকে প্রথম পর্ব।

প্রাচীন চিন: শাঙ যুগ। টিন ও তামা থেকে কী করে ব্রোঞ্জ তৈরি করতে হয় সে বিদ্যে যিশুর জন্মের প্রায় ২০০০ বছর আগেই রপ্ত করেছিল চিনেরা। ব্রোঞ্জ-এর ব্যবহার থেকেই ব্রোঞ্জ যুগ। ওই সময়েই চিনে লেখনীর উদ্ভব। চিনে ভাষা ছবির ওপর ভিত্তি করে সৃষ্টি হয়েছিল।

মানে, মনের ভাবটা ঠিক অক্ষরে নয় ছবিতে প্রকাশ করত তারা। ভাগ্য গননা করার সময়ও ওই ছবি-ভাষাই ব্যবহার করত। হাড় কি কচ্ছপের খোল দিয়ে করত গননা, রাখত হিসেব। ১৮০০ খ্রিস্টপূর্বের দিকে এক জন রাজা অধীন চিনের এক বিশাল অংশ ঐক্যবদ্ধ হল। আরম্ভ হল শাঙ যুগের।

শাঙদের রাজধানী ছিল অ্যানয়াঙ। জায়গাটি উত্তর চিনে। সমাজে তখনই ধনী গরিবের বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছিল। অনেকেই হল শাঙ অভিজাতদের দাস। কেউ কেউ শাঙ রাজার সৈন্য।

সেই সময়ই লোকে ঘোড়ায় টানা রথে চড়তে শিখল। অলঙ্কার হিসেবে লোকে সবুজ পাথর ব্যবহার করত । জেডস্টোন। ব্রোঞ্জ দিয়ে অনেক তৈষজপত্র তৈরি করেছিল শাঙ রাজ্যের কারিগরেরা। উপাসনায় কাজে লাগত ওগুলো।

চমৎকার দেখতে ছিল ওগুলো। শাঙ রাজ্যের কারিগরেরা দ্রুত ও শস্তায় তৈরি করতে পারত ব্রোঞ্জ তৈষস। কুমোরের চাকা সম্ভবত চিনে পৌঁছেছিল যাযাবর ইন্দোইউরোপীয়দের দ্বারা। তারপরে আরও উন্নত হয়েছিল শাঙদের ব্রোঞ্জ শিল্প। শাঙদের ঘরবাড়িগুলি পরবর্তী যুগের মতোই ছিল।

মানে শাঙরা কাঠ ও কাদা দিয়ে বাড়িঘর তুলত। তখন বলেছি যে- শাঙদের রাজধানী ছিল অ্যানয়াঙ। সেই অ্যানয়াঙ নগর ঘিরে শাঙ শ্রমিকেরা গায়ের ঘাম ঝরিয়ে তুলে ছিল নগরপ্রাচীর। সেই প্রাচীর তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছিল মাটি আর পাথরের শক্ত টুকরো যাতে করে প্রাচীরও হয়ে ওঠে শক্ত। প্রাচীরের উপর ছিল ১২ ফুটের মতন উঁচু ওয়াচ টাওয়ার।

প্রাচীরের ভিতরে অ্যানয়াঙ নগরে রাস্তার দুপাশে ছিল ঘরবাড়ি। নগরের মাঝখানে ছিল বিশাল একটা দালান । আজও বার করা যায়নি ওই দালানটা ঠিক কি ছিল। অ্যানয়াঙ নগরের একটি বড় ভবন ছিল; যার হল রুম ঘিরে ছিল পাথরের স্তম্ভ । তো, অ্যানয়াঙ নগরের বাইরে মানুষ থাকত কোথায়? শাঙ আমলে নগরের বাইরে মানুষ থাকত মূলত গুহায়।

কোনও কোনও গুহা খুঁড়ে নিত মানুষেরাই। কোনও কোনও বাড়ি ছিল বৃত্তাকার; ত্রিকোন- মাঝখানে আগুনের গর্ত। শীতে কাজেই কবোষ্ণ থাকত ঘরের ভিতরটা। ৭০০ বছর টিকে ছিল শাঙ সভ্যতা। খ্রিস্টপূর্ব ১১০০ এর দিকে ওদের পরাজিত করেছিল চৌরা।

এই তো জগতের নিয়ম! আরও জানতে - http://www.historyforkids.org/learn/china/ শাঙ যুগের ব্রোঞ্জ শিল্প

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।