আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রবীন্দ্রকাব্যে নিসর্গ : রঙের প্রাচুর্য



রবীন্দ্রকাব্যে নিসর্গ : রঙের প্রাচুর্য কবি ও চিত্রশিল্পী রবীন্দ্রনাথের অভিজ্ঞতা ছিল নানা দেশ ও প্রকৃতির সঙ্গে মেশার, দেখার ও উপলব্ধি করার। উল্লেখ্য, কবি বিশ শতকের তৃতীয় দশকে কানাডা, জাপান ও ইন্দোচীন ভ্রমণ শেষে দেশে প্রত্যাবর্তন করে রূপ ও রঙের খেলায় মনোযোগী হয়েছিলেন। এই সময় তিনি ছবি আঁকতে শুরু করেন। একজন আধুনিক চিত্রশিল্পী রবীন্দ্রনাথের বিকাশ ঘটে এই পর্বে। এই সময় তিনি একটি চিঠিতে লিখেছিলেনÑ “রেখার মায়াজালে আমার সমস্ত মন জড়িয়ে পড়েছে।

অকালে অপরিচিতের প্রতি পক্ষপাতে কবিতা একেবারে পাতা ছেড়ে চলে গেল। ...কবিতার বিষয়টা অস্পষ্টভাবে ও গোড়াতে মাথায় আসে, তারপর ছন্দ প্রবাহিত হতে থাকে। আমি যেসব ছবি আঁকার চেষ্টা করি তাতে ঠিক তার উল্টা প্রণালী, রেখার আমেজ প্রথম দেখা দেয় কলমের মুখে। তারপর যতই আকার ধারণ তরে ততই সেটা পৌঁছতে থাকে মাথায়। ” ফলে, রবীন্দ্রকাব্যের নিসর্গ কেবল আর কল্পনানির্ভর হয়ে থাকেনি।

এই নিসর্গ হয়েছে দৃশ্যনির্ভর এবং রঙের চেতনায় গাঢ় ও বর্ণিল। রবীন্দ্রকাব্যে অরণ্য, বৃক্ষ, ফুল-ফল, উদ্ভিদের বর্ণনা বা আবাহন সহজাত ব্যাপার। আম, জাম বা য়ুক্যালিপটাসের পাশে স্থান পেয়েছে হর্তকি (ক্যামেলিয়া/ পুনশ্চ), হেলঞ্চ (পুকুরধারে/ পুনশ্চ), মানকচু, কলমিশাক (পুনশ্চ), চাঁপা করবী, ম্যাগনোলিয়ার পাশে তেঁতুল, সজনে, শনের ফুল প্রভৃতি গাছের মঞ্জরি এসব অনাদৃত আর উপেক্ষিত উদ্ভিদ আর ফুলের সাথে সংশ্লিষ্ট কীট পতঙ্গ ধানপচানী, শ্যাওলার গন্ধ কবি রবীন্দ্রনাথের বিচিত্রতাগামীরই পরিচায়ক। বিশেষ করে উত্তরপর্বের কাব্যে কবির এই পরিচর্যা অত্যন্ত প্রগাঢ়। ‘আকাশ প্রদীপ’ কাব্যের ‘সময়হারা’ কবিতায় কবি ব্যবহার করেন ভাঙা প্রাচীরে হলদে সাদা বেগুনি ফুলে পরিপূর্ণ বিচিত্র লতাগুল্ম আর শঙ্খমণি খালে ছাতিম গাছের মরা শাখার রঙ।

যেমনÑ আঙিনাটার ভাঙা পাঁচিল, ফাটলে তার রকম-রকম লতাগুল্ম পড়ছে ঝুলে হলদে সাদা বেগুনি ফুলে আকাশ পানে দিচ্ছে উঁকি। ছাতিম গাছের মরা শাখা পড়ছে ঝুকি শঙ্খমণির খালে, ...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।