যদি পারতাম দুঃখগুলো নিলামে বিক্রি করে দিতাম
ঝালকাঠিতে র্যাবের গুলিতে আহত কলেজছাত্র লিমনকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত। একই সঙ্গে বিচারক নুশরাত জাহান জেল কর্তৃপক্ষকে লিমনের সুচিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কাল বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে আদালতকে জানানোর নির্দেশ দেন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটায় লিমনকে আদালতে হাজির করা হয়।
র্যাবের দায়ের করা অস্ত্র আইনের মামলায় ৯ মে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে লিমনের জামিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে বেলা পৌনে ১১টার দিকে পুলিশ পঙ্গু হাসপাতাল থেকে লিমনকে নিয়ে যায়।
রাজাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের চারজন সশস্ত্র সদস্য লিমনকে নিয়ে ঝালকাঠির উদ্দেশে রওনা হন। পুলিশ, লিমনের পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের আনুষ্ঠানিকতা শেষে পুলিশের ভাড়া করা একটি মাইক্রোবাসে লিমনকে তোলা হয়। এ সময় লিমনের সঙ্গে তাঁর বাবা তোফাজ্জল হোসেনও মাইক্রোবাসে ওঠেন।
এসআই আরিফুল ইসলাম রাজাপুর থানায় লিমনের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও অস্ত্র আইনে র্যাবের দায়ের করা দুটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। তিনি আজ প্রথম আলোকে বলেন, লিমনের ব্যাপারে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু) কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছিল।
কর্তৃপক্ষ লিমন সুস্থ বলে জানালে তারা তাকে ঝালকাঠিতে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেয়। তিনি ঢাকায় ছিলেন। পুলিশের বাকি তিন সদস্য মাইক্রোবাসে করে রাজাপুর থানা থেকে ঢাকায় আসেন। পুলিশ প্রহরায় লিমনকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
লিমনের বাবা তোফাজ্জল হোসেনের অভিযোগ, গতকাল রাতেও তাঁরা চিকিৎসকদের কাছে লিমনকে কবে ছাড়া হবে, তা জানতে চেয়েছেন।
তখন তাঁরা জানিয়েছিলেন, এ ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কিন্তু আজ তাঁদের হাসপাতাল ছাড়তে বলা হয় এবং লিমনকে পুলিশ নিয়ে যায়। তিনি দাবি করেন, র্যাব-পুলিশের পর তিনি এবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেও ন্যায়বিচার পেলেন না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চাপের কারণে এমনটা করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
পুলিশ তাঁকে নিতে এসেছে—এমন খবরে কান্নায় ভেঙে পড়ে লিমন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে লিমন বলে, ‘পায়ে এখনো ব্যথা আছে। কেটে ফেলা বাঁ পা থেকে রক্ত পড়ছে। আমি ন্যায়বিচার পেলাম না। এ অবস্থায় কীভাবে জেলে থাকব? নিরপরাধ হয়েও আমাকে জেলে যেতে হচ্ছে। ’
লিমনকে পুলিশ হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাবে—এমন খবর পেয়ে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান পঙ্গু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক আবদুল আওয়াল রিজভীকে ফোন করেন।
তিনি লিমনকে আরও কিছুদিন হাসপাতালে রাখার অনুরোধ করেন।
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নূর খান লিটন জানান, মানবিক বিবেচনায় লিমনের বিষয়টি দেখার জন্য তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিলেন। তিনি দাবি করেন, লিমনের চিকিৎসা এখনো শেষ হয়নি। হলে তাঁকে দুই সপ্তাহ পর আবার আসতে বলা হতো না।
এ ব্যাপারে পঙ্গু হাসপাতালের পরিচালক আবদুল আওয়াল রিজভী বলেন, লিমন মোটামুটি সুস্থ।
তিন মাস পর তাঁর কৃত্রিম পা লাগানো হবে। তাঁকে দুই সপ্তাহ পর আবার আসতে বলা হয়েছে। কারও চাপে পড়ে লিমনকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়নি বলে তিনি দাবি করেন। হাসপাতালে রোগীর তুলনায় বেডের সংখ্যা কম হওয়ায় তাঁদের পক্ষে কোনো রোগীকে দীর্ঘসময় হাসপাতালে রাখা সম্ভব হয় না। (খবর প্রথম আলো অনলাইন থেকে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।