আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জীবনে র জল রং - ৩



(৬) তাহলে তোরা এলি এতনে। বলতো কি এমন মহাব্য¯- তোরা যে জরুরী বলে খবর পাঠেেনার পরও তিনচার ঘন্টা লাগলো আসতে আরে তোমার আমার কদর আজত বুঝলে না আমি না থাকলে তবেই বুঝবে। ------- কি ব্যাপার বলতো ডিডা। সুমন ও অপু দু’জনেই এক সঙ্গে বলে উঠল। না ব্যাপার ট্যাপার কিছু না তেমন একটা।

অসুস্থ বলেছি সভাইকে তাই বাসা থেকে বেরুই না দু’দিন হলো। ভাবছি চলেই যাবো শেষমেষ। ------- ভালো খুবই ভালো। তা এনিয়ে আমাদের মতো আর কজন এ কথাটা জানতে পেরেছে। প্রশ্নের ভঙ্গিতে জানতে চাইলো অপু।

------- কেউ না। বাবা সব গুছগাছ করতেছিল প্রায় দু’বছর ধরে। ------- কবে নাগাদ যাবি ভাবছিস গুরু। সুমন জানতে চাইলো। ------- কিছুই বলা যায় না।

যার জন্যই তোদের ডাকা। ঠিক দু’দিন পর আমি আবার আড্ডা দিতে শুরু করবো। মনদিয়ে শুনবি। খুটা খুচিটা বন্ধ রাখতো পিজ। অপু ও সুমন ফাজলামী করছিল দুজনে।

ডেভিডের কথায় সিরিয়াস হলো এবার। ------- আমার আড্ড শুরু হবে এবং আমি আবার আগের মতো হয়ে যাবো। তোরা সেদিন থেকে একজন নামকরা ডাক্তারকে ম্যানেজ করবে যে আমাকে প্রেসক্রাইভ করবে সিঙ্গাপুর কিংবা ব্যাংকরে গিয়ে চিকিৎসা করানোর। যত টাকা লাগে তাকে খাওয়াবি। হঠাৎ একদিন এসে এম্বুলেন্স আমাকে নিয়ে যাবে।

দু’দিন পর সোজা চলে যাবে ব্যাংকক কিংবা সিঙ্গাপুর। বাবা মা সঙ্গে থাকবেন। তোরা কেউই স্পটে আসবিনা। ফার্নিচার সহ বাসাটাও বিক্রি করা হয়ে গেছে। টাকা পয়সা সব ওয়েষ্টার্ণ ব্যাংকে জমা আছে।

তিন চার মাস পর এ বাসায় নতুন লোকেরা উঠবে। চাবির কপি তাদের কাছে আছে। ------- আমি সিঙ্গাপুরে গিয়ে একদিন থাকবো। পরদিন সবাই চলে যাবে কোয়ালামপুর। ওখানে থেকে সোজা ইউরোপ।

সপ্তাহ খানেকের ভেতর আমি ফোন করবো। আমি খুওব খুশী হবো যদি তোরা দু’জনকে আবারো কাছে পাই কোন একদিন। ------- তুই সেটেল হয়ে যা তারপর আমরা অবশ্যই তোকে দেখতে যাবো। থেকেও যেতে পারি ওখানে। সুমন কথাটা বলল।

সবাই হা হা করে হেসে উঠল। অপু বলল আমি শিউর আমি ওখানেই থেকে যাবো। তোর ফিরিঙ্গি বউটা ঝাটা পিটা করলে আসবো না। আবারো হাসি শুরু হলো। আজ নীতু ওই ছেলেটিকে দেখলো না।

একবার ও না। অফিসে যাবার সময় আসার সময় প্রায় সব স্পটেই ভালো করে তাকালো ও। না কোথাও নেই। পরদিন অফিসে যাবে নীতু। একটু তাড়াতাড়ি বেরুল।

কোথায় না পেলে আজ কাউকে জিজ্ঞেস করবে মতি মিয়া। পুরো এলাকাটা আজ ওমন লাগছে কেন ভাবিছল নীতু। চোখ দেয়ালে আটকে গেল। একী সেই ছেলেটিইতো মনে হচ্ছে। ড্রাইভারকে বলল- মতি মিয়া গাড়ীটা বায়ে সাইড করো।

মতি তাই করল। ------- মতি মিয়া যাওতো একটি পোষ্টার তুলে নিয়ে আসো। ------- কি কন আপা? ------- যা বলছি তাই করো মতি মিয়া। ------- লোকে দেখতাছে আপা। ------- তাতে কি? লোকে তোমাকে চেনে আমাকে চেনে।

কেউ বললে আমার কাছে পাঠাবে। এবার যাও। মতি দুরুদুরু বে পোষ্টার তুললো। একদৌড়ে গাড়ীর ভেতরে ঢুকে পড়ল। ------- ভয় পেয়ো না মতি মিয়া।

এখানে কেউ তোমাকে কিছু বলার মতো সাহসী নেই। সবাই একজনকে খুব ভয় করে। বুঝতে পারছো। অফিসে চলো। ------- জী আপা।

নীতু চোখ আটকে আছে ওই যুবকের ছবিটায়। অনেকণ পর ও পড়লো। গতকাল ছেলেটা গ্রেফতার হয়েছে। তারা সবাই ওর মুক্তি চেয়ে পোষ্টার সাটিয়েছে দেয়ালা দেয়ালে। ছেলেটার নাম তাহলে দ্বীপ্ত।

ওরা লিখেছে মিথ্যা মামলায় ওকে ফাঁসানো হয়েছে। অবি¤ম্ব দ্বীপ্ত ভাইয়ের মুক্তি চাই নয়তো আন্দোলন নামবে ছাত্র সমাজ। অফিসে ঢুকেই পত্রিকায় পাতায় চোখ গেলো শিরোনাম দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী দ্বীপ্ত গ্রেফতার। উপরের মহলে তোলপাড় চলছে। এবারো কি মুক্তি পাবে দ্বীপ্ত।

পরে কলামে আরেকটি শিরোনাম। গুরুতর অসুস্থ ছাত্রনেতা ডেভিড। বাসায় চিকিৎসা চলছে দু’দিন ধরে। প্রবেশাধীকার নিয়ন্ত্রিত। সাংবাদিকরা ভেতরে যাবার অনুমতি পাননি।

তাহলে কি ডেভিড ভাই ই দ্বীপ্তকে গ্রেফতার করিয়েছে। না তা করবে কেন। দ্বীপ্ত তো ওর সেকেন্ড ইন কমান্ড। নীতু কিছু ভালো লাগলো না। ও পিয়নকে ডেকে কফি দিতে বলল।

ভাইয়া ফোন করা যায় কিংবা অপুকে। খবর তাজাটাই ওদের ঝুলিতে থাকবে এ ব্যাপারে। সুমনের মোবাইল ফোনটা বন্ধ। অপুকে পেলো নীতু- ------- কি ব্যাপার নীতু এতো ভোরে কল করলে? ------- ভোর! মাথা খারাপ হয়েছে নাকি? এখন সকাল এগারোটা। ঘড়িকি রুমে আছে না তাও নেই।

------- সরি নীতু কাল সারারাত কাজ থাকায় এই ধরো পাঁচটায় ঘুমুতে এসেছি। কি বলবে বলে ফেলো আমাকে বেরুতে হবে এুনী। ------- দ্বীপ্তকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে জানো তো? ডেভিড ভাই অসুস্থ। আমি জানতে চাচ্ছি এটা কি পরিকল্পিত? ------- বুঝতে পারলাম না। খুলে বলো।

------- এটা কি সুমন অপু ডেভিড মিলে তৈরী করা কোন পান। ------- পুরোটা না। ভেবো না আজ না হোক আগামীকাল ওর জামিন হয়ে যাবে। সে ব্যবস্থা করা হয়ে গেছে। ডেভিড তাই বললো।

ডেভিড অসুস্থ তবে সামান্য সর্দি জ্বর কাল ঠিক হয়ে যাবে। ওকে বলবো তোমাকে কল করার জন্য। রাখি বলেই অপু লাইনটা কেটে দিল। নীতু ইচ্ছে হলো আবার কল করে অপুকে বলবে আমাকে কি নিয়ে যাবে দ্বীপ্ত কে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে খুব ইচ্ছে..... পিজ অপু। না না অসম্ভব এটা করাটা বোকামী।

আমি নিজেই কোর্টে যাবো। বেঞ্চে বসে বসে ওকে দেখে নেবো। ও মনে মনে স্থির করে ফেলল এবার দ্বীপ্ত জামিন পেয়ে যখন আসবে ও দ্বীপ্তকে ডিনারের নিমন্ত্রন করবে। নামীদামী কোন রে¯ে-ারায়। সেদিন ও জানতে চাইবে কেন এতো অভিমান ওর।

কেন ও বলতে পারলো না নীতু আমি তোমাকে ভালোবাসি। এই নীতুতো তাকে ভালোবেসেছিল, আজ ও ভালোবাসে। পরনেই ডেভিডের ফোন এলো- হ্যালো কিরে নীতু। তুই খুব টেনশন করছিস শুনলাম। ------- না পত্রিকায় দেখলাম গুরুতব অসুস্থ।

দ্বীপ্ত গ্রেফতার তাই টেনশান হচ্ছিল। ------- ওসব কিছু নারে। খঅমোকা ভাববি না। দ্বীপ্ত আজই জামিন পাচ্ছে। উপর থেকে অর্ডার এসে গেছে আজ চারটায় ও তোদের বাসার সামনের ঐ মাঠটায় আবারো আড্ডা দিতে যাবে আমি নিশ্চিত।

আর আমি অসুস্থ নই। জ্বর ছিল এখন আর নেই। তবে তোর কথা আমি রাখবো নীতু। ------- কোন কথা ডেভিড ভাই? ------- ওই যে অফিসে ডেকে নিয়ে জ্ঞান দিলি উড়াল দিতে, তাই ই দেবো শীঘ্রই। ------- সত্যি ডেভিড ভাই।

সত্যি কি না বলো তো পিজ। ------- হ্যারে খুবই সত্যি। তোর মতো বোনের সাথে মিথ্যে বলবো কোন সাহসে। ------- হয়েছে আর বলতে হবে না। যাবার আগে জানাবেন কিন্তু।

------- জানাবো পুরো দেশটাকে জানাবো, ভাবিস না। রাখি তাহলে... ------- আচ্ছা খোদা হাফেজ। ধন্যবাদ ডেভিড ভাইয়া আপনি আসলেই খুব ভালো একজন ভাইয়া। বলে নীতু লাইনটা কেটে দিল। ডেভিডের চোখে পানি এটা কষ্টের নয় মুক্তির অশ্র“।

সে আবারো মুক্ত বিহঙ্গের মতো উড়তে পারবে যেখানে সেখানে তারই অশ্র“ এটা। বেঞ্চে বসে নীতু দীপ্তকে দেখছে, দু'চোখ ভরেই দেখছে। দীপ্ত খেয়াল করছেই না একবারও, কি ভাবেই বা করবে। ও কি জানতো যে আমি এখানে বসে আছি চুপটি করে। ওর সব কিছুদেখছি খুটিয়ে খুটিয়ে।

নীতু নিজেকেই শাসাল। আজ কোর্ট রুমে তুমুল ঝগড়া অবশ্য আইনি ঝগড়া চলছে। মাঝে মাঝে দীপ্ত বিব্রত ভঙ্গিতে এদিক ওদিক তাকাতে দেখরো নীতু। বুঝি কাউকে খুজছে। খোজারই কথা বাবা-মা আত্মীয় স্বজন বন্ধু-বান্ধব কাউকে হয়।

নীতু অবশ্য দ্বীপ্ত কিছু বন্ধুদের চেনে তবে পুরোটাই মুখচেনা। নাম জানা নেই কারোরই। কোর্ট রুমে ডেভিড ভাই প্রবেশ করল আরও জনা পাঁচেক লোক ওর সাথে আছে। তবে এদের কাউকেই নীতু দেখেছে বলে মনে করতে পারছেনা। তাকে দেখে দ্বীপ্তের চেহারার বিব্রত ভাবটা কেটে গেলো।

এখন তাকে আর ভালো লাগছে। স্মার্ট ভঙ্গিতে প্রতিপরে উকিলের সব জবাব দেবার চেষ্টা করছে সে। নীতু মুদ্ধ হয়ে তাকে দেখতে লাগলো। ডেভিড কোর্টরুমে বসে বসে দীপ্তের উকিলের সাথে বেশ উত্তেজিত ভঙ্গিতে আলাপ করেই চলেছে এসময় একটা অপরিচিত যুবক দৌড়ে ডেভিদের সামনে এসে তাকে সালাম করলো এবং কিছু কাগজপত্র তাকে দিল। ডেভিড সব কাগজ পত্র উকিলের হাতে দিলো।

বিচারক কাগজ গুলো নেড়েচেড়ে দেখলেন আর জানিম হয়ে গেলো দ্বীপ্তের। তবে দ্বীপ্ত বিচারকার্য শেষ না হওয়া পর্যš- ঢাকার বাইরে যেতে পারবে না, আদালতের অনুমতির প্রয়োজন পড়বে এটা শর্ত থাকলো। ডেভিডরা সাথে সাথেই কোর্টরুম ত্যাগ করলো। দ্বীপ্ত তার বন্ধুদের সাথে আলাপরত। নীতু এ সুযোগে কেটে পড়বে কিনা ভাবছে।

নীতু সোজা গাড়ীর সামনে এসে মতি মিয়াকে খুজতে লাগলো। মিত মিয়া দৌড়াতে দৌড়াতে এসে বলল- উঠুন। ------- সোজা বাড়ী চলো মতি মিয়া। ------- আচ্ছা। আজ হঠাৎ ডেভিড ভীষন অসুস্থ হয়ে পড়লো।

তাকে নিয়ে ভর্তি করা হলো শহরের নাম করা এক কিনিকে। আজকাল কিনিকে চিকিৎসা বেশ সুনাম করেছে। শহরের বেশ কিছু কিনিকের মালিক ডাক্তাররা। তাদের সেবার মানও বেশ উচুতে। তবে তাদের চার্জটা অনেকটা নাগালের অনেক বাহিরে।

মাঝে মাঝে তাদের চার্জ এত বেশী থাকে যে ওই চার্জে একজন রোগী অনায়াসে মাদ্রাজ কিংবা থাইল্যান্ডে চিকিঃসা করাতে পারে। তার অবস্থা কি জানা দরকার। সুমন অনেক চেষ্টা করেও ফোন কিংবা মোবাইলে যোগযোগ করতে পারেনি। আরেকবার চেষ্টা করবো, যদি কাউকে না পাই সোজা ডেভিডের বাসায় চলে যাবো। কাজের মেয়ে দারোয়ান সবাইতো আর কিনিকে যায়নি।

কেউ না কেউতো জানবে কোন কিনিকে ওকে ভর্তি করা হয়েছে। নামকরা কিনিকতো আর একটা না। ঢাকা শহরে কম হলেও শ-তিনেক কিনিক আছে কোখায় খুজবে। মোবাইলে একবার চেষ্টা করা হয়ে গেলো কেউ প্রতিত্তুর দিলো না। রিং হতে হতে আপনা আপনি কেটে গেলো লাইনটা।

বাসার ফোন নাম্বারে চেষ্টা করা যাক একবার। অনেকণ পর প্রত্তিতর এলো। ------- হ্যালো, কে বলছেন পিজ। ------- সুমন, ডেভিডের বন্ধু। ------- ভাইয়া ঘুমুচ্ছেন।

ঘুম থেকে জাগানো যাবে না। কোন ম্যাসেজ থাকলে বলুন। বলে দেব। ------- না, ম্রাসেজ নেই। ওকি এখন সুস্থ আছে? ------- হ্যা মনে হয় আছে।

মনে হয় নাই। সঠিক বলতে পারবো না। ------- আচ্ছা আখি। ওকে বলবে ঘন্টা খানেক পরে আমি আসছি। ------- ঠিক আছে বলবো।

সুমন রিসিভার নামিয়ে রেখে অপুকে দেখতে যাবে কিনা ভাবতে লাগলো। আজ কটা দিন হলো হতচ্ছাড়াটা একবারও দেখা দেয়নি। আড্ডা কিংবা বাসায় ও আসেনি। অবশ্য বাসায় এদেও আজকাল সুমনকে পায়না অপু। হয়ত বাসায় এসেছিল কিন্তু সে সময় সুমন ছিলো না।

সুমন মতি মিয়াকে গাড়ী বের করতে বললো। ------- নীতু এই নীতু শোনে যা ------- এখন পারবো না আমার কাজ আছে। কিছু বলবে নাকি। ------- মাত্র দু’মিনিট এদিকে আয়। দু’মিনিটেতো তোর মহাভারত অসুদ্ধ হয়ে যাবেনা।

------- কি বলো। ------- তুই কি জানিস আমাদের ওখানে অপু এসেছিলো কিনা। দ্যাখ আজ প্রায় দু’সপ্তাহ হতে চলল অথচ আমি তার দেখা একবারও পাইনি কোথাও। কোথায় গেলো সে। অথচ ও কোনদিনই আমাকে না বলে কোথায় থাকেনা।

যত রাতই হোক সে ফিরে এসেছে। যেখানেই গেছে আমাকে বলে তারপর গেছে। ওরতো কেউই নেই তাই শেষ কৃত্যটা যেন আমার হাতেই হয় এটা তারই একটা পূর্ভাভাস হয়তো। ------- ওসব বরে আমার সময় নষ্ট না করলেই পারতে। গত দু’সপ্তাহ ধরে ও নিজে ঢাকায় না থাকলে এখানে আসবে কি করে।

ও এখানে আসেনি। ------- কোন ফোনই করেনি? ------- না, করেনি। তুমিতো আর তার বাবা নও যে সব কিছু তোমাকে জানাতে হবে। আমি যাচ্ছি। হোষ্টেরে গিয়ে খোজ নাও ভাইয়া।

------- তাই যাবো এখন। এককাপ চা দিতে বলবি। চা খেয়েই যাবো। ------- বলবো। কোন খোজ ফেলে বাবাকে জানিও।

বাবাও তার খোজ করছিল। আমি তাকে বলেছি অপুকে একটি মোবাইল গিফট করতে। তাতে সময়ে অসময়ে অপুকে কল করে বাসায় ডেকে পাঠাতে পারেন। বাবা হয়ত তাই করবেন। চা খেয়ে সোজা এফ রহমান হলে এসে অপুর রুমে ডুকলো সুমন।

ওর কাপড় চোপড় সবই ঠিকঠাক মতো আছে। নীতুর বিশাল ছবিটাও আছে মাথার দিকে। কয়েকটা সিগারেটের ফিল্টারও আছে এ্যাসট্রেতে। একটা থেকে ধোঁয়াও বেরুচ্ছে। তারমানে কেউ একজন কিছুণ আগে এটা এ্যাসট্রে ফেলেছে।

কে হতে পারে। এ ররুমে আরো দুজন থাকে হয়ত তারা কেউ। সে একটি পত্রিকা হাতে নিয়ে পড়তে বসল। সে কখনও পত্রিকার প্রথম পাতা পড়তে চায়না। প্রথমেই খেলার পাতা পড়বে।

তারপর বিজ্ঞাপনের পাতা। পাত্র-পাত্রী চাই, আবশ্যক, ভাড়া ইত্যাদি শেষ করে ফিচার অথবা সম্পাদকীয়টুকু পড়ব। তারপর প্রথম পাতা পড়বে নয়ত কোন কোন দিন তাও পড়ে না। সুমনকে দেখে অপু অবাক; কিরে তুই এখানে এরি কেন? ------- কেন? তোর এখানে আসাটা কি নিষেধ নাকি? হাঁদারাম সু’সপ্তাহ ধরে তোর কোন পাত্তা নেই। করছিসটা কি? ব্যাটা চৎবংবফবহঃ নাকি? বাসায় ও যাসনি আড্ডাতেও দেখা সাাত নেই।

কি ব্যাপার বলতো? ------- না তেমন কিছু হলেতো তোকে বলতামই। ডেভিড বললো ও চলে না যাওয়া পর্যš- আমি যেন তোদের বাসায় না যাই। তাই বাসায় যাওয়া হয়নি। ------- আড্ডাদেও যেতে নিষেধ করেছে নাকি? ------- না তা করেনি। এমনি আড্ডাতে যাইনি।

কটা দিন গ্রামে গিয়ে বেড়িয়ে আসবো ভাবছি। দেখা যাক কি হয়। ------- গ্রামে কার কাছে থাকবি শুনি। তোদের চৌদ্ধ সিড়ির কেউইতো আছে বলে আমার জানা নেই। ------- সেটাইতো ভাবছি।

তা না হলে কবে চরে যেতাম গ্রামে। শুনেছি আমাদের গ্রামের একজন ছেলে ভার্সিটিতে আছে তাকে খোজে বের করবো। তারপর কটা দিন গিয়ে তার ওখানেই থাকবো। পরীাটা শেষ হলেই চলে যাবো ঠিকই। ------- পরীা চলছে নাকি তোর।

------- হু, তুই কি তাও জানিস না। অবম্য তোর জানার কথাও না। তুই তো আর আমার মতো নয় বছরে অনার্সের পাইনাল দিচ্ছিস না। রীতিমতো মাষ্টার্স কমপিট করে বি.সি.এস. দিতে পেরেছিস। ------- চল কোথাও বেরুবো।

------- না। অসুবিধা আছে। ডেভিড চায়না আমরা একসাথে ঘোড়াফেরা করি। সেজন্যই তো আমাকে তোর বাসায় যেতে মানা করলো। বসে থাক, আমি কাউকে দিয়ে চায়ের ব্যবস্থা করছি।

------- ডেভিডকে দেখতে যাবো শুনেছি কিনিকে নিতে হয়েছিলো ভোরে। ------- কেন? কি হয়েছে ওর একেবারে কিনিকেই নিতে হলো। ------- জানিনা তবে এখন নাকি বাসায় ঘুমুচ্ছে। তোর এখান থেকে সোজা ওর বাসায় যাবো। ফেরার পথে তোকে বলে যাবো।

তুইকি কোথাও বেরুবি? ------- না, এখানে না থাকলে মাঠের পূর্বদিকে পাবি। একা থাকলে আমি সবসময় ওদিকের একটা গাছের সাথে হেলান দিয়ে আকাশের তারা গুনি। গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে গান গাই তারপর কাঁদি। আবার হাসি প্রাণ খোলা হাসি। মনটা ভালো হয়ে যায়।

সিদ্ধি খাই তারপর গান গেয়ে গেয়ে রুমে ফিরে আসি। ------- ঘন্টাখানেকের ভেত র ফিরবো রুমেই থাকিস। ওকে জিজ্ঞেস করবো কেন সে তোকে আমার বাসায় যেতে নিষেধ করেছিল। ------- যা, যা ইচ্ছে করগে। আমি পড়বো কিছুণ।

আসার পথে সিগারেট নিয়ে আসবি। আমার সিগারেট শেষের পথে। যা- ভাগ এখন। সুমন সোজা বনানীর দিকে গাড়ী ছুটালো। গেটে আসতেই দারোয়ান গেট খুলে দিলো।

সিড়িতেই দেখা হলো ডেভিডের সাথে। কিরে তুই। ------- হ্যা - আমিইতো। তুই কি ভেবেছিস আমার আত্মা? ------- শুনলাম তুই কিনিকে ভর্তি হয়েছিস দুপুরে। বিকালে শুনলাম বাসায় ঘুমুচ্ছিস।

------- তোকে কে বরেছে আমি কিনিকে ভর্তি হয়েছি? ------- নাম বলেনিতো, তবে মোবাইলটার নাম্বারতো তোরই ছিলো। ------- তাই বল। গতকাল রাতে মোবাইলটাই হারিয়ে ফেলেছি। যে পেয়েছে সেই কল করেছিল বোধহয়। কোন কথা না পেয়ে কিনিকের কথা বলেছে।

------- তবে বাসায় ওতো কেউ ফোন ধরেনি। তাই ভাবলাম সত্যি কিনিকে ভর্তি হয়েছিস। পরে যখন পাঁচটা নাগাদ ফোন কররাম তোদের কাজের মেয়েটা বলল তুই ঘুমুচ্ছিস, ডাকা যাবেনা। ------- জয়তুন আমকে বলেছে তুই ঘন্টা খানেকের ভেতর আসছিস। ------- আচ্ছা তুই আসলে কি চাস্ বলতো? ------- কেনরে কি হয়েছে খুলে বলতো।

------- তুই অপুকে আমার সাথে দেখা করতে নিষেধ করেছিস কেন? তুইতো জানিস বাবা তাকে খুব স্নেহ করেন। ওর পড়াশোনা সহ আনুসাঙ্গিক সব খরচাখরছ বাবাই দিয়ে থাকেন। ও বলতে গেলে আমাদের ফ্যামিলিরই একজন। আর তুই কিনা তাকে বাসায় যেতে নিষেধ করে দিলি। ------- দিয়েছি কারণ আমি চাই ও ভালো থাকুক।

ওকে আমিও প্রচন্ড ভালোবাসি বলেই ওকে নিষেধ করেছি। ------- খুলে বলতো ওসব ন্যাকামো ভালাগেনা। ------- আমি চাইনা ও কোন ঝামেলায় জড়াক সেজন্যই ওসব করা। আমি চলে যাবো শীঘ্রই। আর তোর ওখানে ও গেলে ওকে নিয়ে তুই আমার ওখানে আসবি।

তাতেই ওর সমস্যা। আমার এখানে ও কে আসতে নিষেধ করতে পারিনি। তাতে ও কষ্ট পাবে। তাই ওরকম করা ছাড়া আমার গত্যš-র ছিল না। ------- আমি আসলে ওভাবে ভাবিনি।

সরি কিছু মনে করবি না। চা খাবো হবে নাকি? ------- নিশ্চয়ই। বস- চা নিয়ে আসছে। ------- চা-টা খেয়েই বিদেয় হবো অপুর ওখানে যেতে হবে। শালার সিগারেট শেষ হয়ে বসেছে।

আহা বেচারা!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।